বিটন চক্রবর্তী, হলদিয়া: পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ায় এক্সাইড কারখানায় শ্রমিক বিক্ষোভ। ইন্ধনের অভিযোগে গ্রেফতার তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের দুই শীর্ষ নেতা।
এক্সাইড কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, শ্রমিক বিক্ষোভের জেরে কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হয়। কয়েকজন ঠিকা শ্রমিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে অন্য ঠিকা শ্রমিকদের কাজে যোগ দিতে বাধা দেয়। হলদিয়ার দুর্গাচক থানায় অভিযোগ দায়ের করে এক্সাইড কর্তৃপক্ষ। তার প্রেক্ষিতে দুই ঠিকা শ্রমিককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশের দাবি, ধৃত শ্রমিকদের জেরায় উঠে আসে আইএনটিটিইউসি-র তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তাপস মাইতি ও হলদিয়ায় আইএনটিটিইউসি-র বিশেষ পর্যবেক্ষক সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। এরপর কারখানা বন্ধে বিশৃঙ্খলা ও উস্কানির অভিযোগে দুই আইএনটিটিইউসি নেতাকেও গ্রেফতার করে পুলিশ।
এদিকে, শ্রমিক বিক্ষোভে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে আইএনটিটিইউসি-র দুই শীর্ষ নেতাকে গ্রেফতারের পর তৎপর রাজ্যের শাসক দল। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে হলদিয়ার বিভিন্ন শিল্প সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করবে তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের শীর্ষ নেতৃত্ব। সেই কারণে গতকালই হলদিয়ায় পৌঁছন শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক ও আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতি ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়।
এর আগে ১ জানুয়ারি তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে টাটা-র একটি সংস্থার আধিকারিককে হুঁশিয়ারি দেন তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি দেবপ্রসাদ মণ্ডল। তিনি হলদিয়া বন্দরের TMILL সংস্থার জেনারেল ম্যানেজার দেবজিৎ সামন্তকে হঁশিয়ারি দেন।
দেবপ্রসাদ বলেন, ‘আজকে টাটা, TMLI, আমি সামন্তবাবুকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই, এটা আপনার জমিদারি নয়। এটা হলদিয়ার মানুষের জমিদারি। আপনি ভেবেছেন, আমার এখানে মিটিংয়ে লোক আসবে, আর আপনি তাঁকে সাসপেন্ড করবেন! কতদিন আপনি সাসপেন্ড করে রাখতে পারেন, আমরাও দেখে নেব। তৃণমূল কংগ্রেস মরে যায়নি। হলদিয়ার ভূমিপুত্র। দেখে নিতে চাই আপনাদের। অনেক সময় দেওয়া হয়েছে। হলদিয়া ডককে নিয়ে অনেক ছিনিমিনি খেলেছেন। আপনারা তলে তলে গোটা ডকটাকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার জন্য, সমস্ত শ্রমিকদের ওপরে কিছু গুন্ডাবাহিনী লেলিয়ে দিয়ে, তাঁদের ভীষণভাবে অত্যাচারিত করার চেষ্টা করছেন।’
তৃণমূল নেতার হুঁশিয়ারির বিরোধিতা করে শাসক দলের শ্রমিক সংগঠন। কিন্তু এবার সেই হলদিয়াতেই বিতর্কে জড়াল শ্রমিক সংগঠন।