বিটন চক্রবর্তী ও শুভেন্দু ভট্টাচার্য: পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur) চণ্ডীপুরে (Chandipur) দিদির সুরক্ষাকবচ কর্মসূচিতে গিয়ে ক্ষোভের মুখে পড়লেন তৃণমূল (TMC) বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী (Soham Chakraborty)। রাজ্য সরকারের একাধিক প্রকল্পে বঞ্চনার অভিযোগ তোলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। কেন্দ্রের ঘাড়ে দায় ঠেলেছেন তৃণমূল বিধায়ক। অন্যদিকে, কোচবিহারে (Coochbehar) নিজের ওয়ার্ডে বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়লেন তৃণমূলের পুরপ্রধান।


ক্ষোভের মুখে ‘দিদির দূত’


ক্ষোভের মুখে পড়লেন তৃণমূল বিধায়ক। পুরপ্রধানকে ঘিরেও দেখা গেল বিক্ষোভ। একদিকে পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুরে দিদির দূত হিসেবে নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে গিয়ে স্থানীয়দের ক্ষোভের মুখে পড়লেন তৃণমূল বিধায়ক। আরেক দিকে, কোচবিহারে বাড়ির সামনেই পুর চেয়ারম্যানকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বৃহস্পতিবার দিদির সুরক্ষাকবচ কর্মসূচিতে চণ্ডীপুরের বৃন্দাবনপুরে যান তৃণমূল বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, বার্ধক্য ভাতা না পাওয়ার অভিযোগে ক্ষোভ উগরে দেন গ্রামবাসীরা।

চণ্ডীপুরের বাসিন্দা কমলা বেরার দাবি, 'আমার স্বামীর ৬৫ বছর বয়স হয়ে গেছে এখনও বার্ধক্যভাতা পায়নি। তিন চারবার দরখাস্ত দিয়েছি। শৌচালয় পাইনি।' চণ্ডীপুরের বাসিন্দা অঞ্জনা রুইদাস, 'দুয়ারে সরকারের ক্যাম্প হয়েছিল। গিয়েছিলাম। লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য। খালি বলছে চেষ্টা করুন, আপনাদের হবে।'

এই বিক্ষোভকে হাতিয়ার করে আক্রমণ শানিয়েছে বিজেপি। পাল্টা সাফাই দিয়েছে তৃণমূল। তমলুক সাংগঠনিক জেলার বিজেপির জেলা সহ সভাপতি পুলক গুড়িয়ার কথায়, 'সাধারণ মানুষের আক্রোশটা স্বাভাবিক। কেন্দ্রের টাকা অন্য খাতে চলে যাচ্ছে। হিসেব নেই। যাঁদের যা প্রাপ্য সেগুলো থেকে তাঁরা বঞ্চিত। নির্বাচনে এর চেয়ে বেশই বিক্ষোভ ব্যালট বক্সে প্রকাশ পাবে।' গোটা ঘটনায় কী বলছেন সোহম চক্রবর্তী? চণ্ডীপুরের তৃণমূল বিধায়কের বলছেন, 'নিশ্চয়ই কোথাও কোনও ফারাক থেকে যাচ্ছে। সেগুলোই আমরা জানছি, নথিভুক্ত করছি। সংশ্লিষ্ট দফতরকে সেই বিষয়ে অবগত করব। যতটুকু আমার দ্বারা সম্ভব আমি সেটা করব। এই জনসংযোগ, এটাই তো দরকার। তাই তো দিদির দূত হিসেবে মানুষের দুয়ারে দুয়ারে পৌঁছে যাচ্ছি।'

অন্যদিকে, এদিন পুরসভায় যাওয়ার সময়, নিজের ওয়ার্ডে বাসিন্দাদের বিক্ষোভের সামনে পড়েন তৃণমূল পরিচালিত কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। হাতাহাতির পরিস্থিতি তৈরি হয়। পুর-পরিষেবা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন বাসিন্দারা। কোচবিহার পুরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মহম্মদ ফারুক বলেন, 'কাউন্সিলরকে আমরা দুঃখ কষ্ট জানাতে যাই। জলের পাইপ ফাটা। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করার কথা বলতে গিয়েছিলাম। উল্টোপাল্টা বলতে শুরু করে দিল।'


আরও পড়ুন: Coochbehar News: বড়সড় ডাকাতির ছক বানচাল কোচবিহারে, গ্রেফতার পাঁচ

বিক্ষোভকারীদের পাল্টা তোপ চেয়ারম্যানের। রবীন্দ্রনাথ ঘোষের পাল্টা দাবি, 'একটা বিভ্রান্তি ঘটাতে চাইছে কেউ কেউ প্ল্যানিং করে। পুরসভার বদনাম করতে চাইছে। এটা নিয়ে কথা কাটাকাটি হয়।' কোচবিহার দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে বলেন, 'যে এলাকায় বসবাস করেন সেই এলাকার মানুষ ভোটে জিতিয়েছেন। তাঁরা পরিষেবা না পেলে বিক্ষোভ দেখাবেই।'

পঞ্চায়েত ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই স্থানীয় ইস্যু ঘিরে তুঙ্গে উঠছে রাজনৈতিক তরজা।