ঋত্বিক প্রধান, কৌশিক গাঁতাইত, অনির্বাণ বিশ্বাস, কাঁথি: বিপ্লবী কাজকর্মের ঘাঁটি ছিল এক সময় তাদের বাড়ি। রাজ্য থেকে জেলা স্তরের রাজনীতিতেও বরাবর দাপট থেকেছে তাদের। কিন্তু বিগত সাড়ে চার দশকে এই প্রথম পুরভোটের (WB Municipal Polls 2022) দৌড়ে নেই অধিকারী পরিবার (Adhikari Family)। কাঁথি পুরসভা নির্বাচনে (Kontai News) পরিবারের কারও নাম নেই প্রতিদ্বন্দ্বিতার তালিকা। আর তা নিয়েই ফের টিপ্পনি, পাল্টা টিপ্পনির পালা শুরু হয়েছে।


এ বারের পুরভোটে আক্ষরিক অর্থেই বেনজির ঘটনা পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur News) কাঁথিতে। ৪৫ বছর পর, এই প্রথম কাঁথির পুরভোটে নেই অধিকারী পরিবারের কোনও প্রতিনিধি। সোমবার কাঁথির একুশটি ওয়ার্ডের জন্য প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে বিজেপি। কিন্তু, সেই তালিকায় নাম ছিল না কাঁথি পুরসভার গত দু’বারের চেয়ারম্যান সৌমেন্দু অধিকারীর নাম।


গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) বিজেপি-তে যোগদান করার মাসখানেকের মধ্যেই তৃণমূল ছেড়ে গেরুয়া (BJP) শিবিরে নাম লেখান তাঁর ছোট ভাই সৌমেন্দু (Soumendu Adhikari)। সেই সময় বিজেপির কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সাধারণ সম্পাদক করা হয় সৌমেন্দুকে। কাঁথিতে বিজেপি-র বিভিন্ন কর্মসূচিতে দেখা যেত সৌমেন্দুকে। অথচ পুরভোটে বিজেপির তালিকায় তাঁর নামের উল্লেখ নেই এখনও পর্যন্ত। তার ফলে চার দশক পর প্রথম অধিকারীশূন্য হবে কাঁথি পুরবোর্ড।


আরও পড়ুন: Kolkata Bus Service : কলকাতার রাস্তায় নামছে না প্রায় দেড় হাজার বেসরকারি বাস, চরম ভোগান্তি যাত্রীদের


যদিও এ নিয়ে কোনও জল্পনাকেই ধর্তব্যের মধ্যে আনতে চান না সৌমেন্দু। তাঁর বক্তব্য, “কোনও প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিতে কাজ করি না। দল যাঁকে উুযুক্ত মনে করেছে, তাঁকেই প্রার্থী করেছে। আমরা ভোটে দাঁড়ালে পরিবারতন্ত্রের কথা ওঠে। আবার না দাঁড়ালেও কথা।”


১৯৬৪ সালে কাঁথি পুরসভার প্রথম কমিশনার নির্বাচিত হন শিশির অধিকারী। ১৯৭৭ থেকে ৮০ পর্যন্ত ছিলেন পুরসভার চেয়ারম্যান। এর পর ১৯৯০ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত তিনি ছিলেন চেয়ারম্যানের পদে।


শিশির সাংসদ হওয়ার পর, মাস ছয়েকের জন্য কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান হন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। ২০১০ থেকে ২০২০ পর্যন্ত চেয়ারম্যান ছিলেন সৌমেন্দু অধিকারী। অধিকারী পরিবারের আরেক প্রতিনিধি সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীও, ২০১০ থেকে ১৫ পর্যন্ত ছিলেন কাউন্সিলর।


তাই ভোটের আগে বিজেপি-তে গিয়ে ওঠা অধিকারী পরিবারকে বিজেপি পুরভোটে ব্রাত্য করে রেখেছে বলে কটাক্ষ ছুড়ে দেওয়া হচ্ছে তৃণমূলের তরফে। রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “পায়মনি না দেয়নি, সেটা দেখুন। হেরে যাবে জানে। তাই ভয়ে লড়তে চায়নি।” বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে এ নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “সকলের সঙ্গে কথা বলেই আমাদের প্রার্থী বাছাই হয়। অন্য দলের মতো নয়।” এই প্রথম অধিকারী পরিবারকে ছাড়াই কাঁথিতে পুরভোট হতে চলেছে।