কাঁথি: কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান সুবল মান্নার (Subal Manna) বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনছে তৃণমূল। দলের  ১৬ জন কাউন্সিলরের সই করা অনাস্থাপত্র  জমা দেওয়া হবে বলে খবর। মঙ্গলবারই অনাস্থাপত্র জমা দেওয়া হবে বলে কাঁথি তৃণমূল (TMC) সাংগঠনিক জেলার তরফে জানিয়েছেন পীযূস পাণ্ডা। কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান সুবল মান্নাকে আগেই দলের তরফে পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু তিনি এখনও পদত্যাগ না করায় তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পীযূস। (Contai News)


তৃণমূলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলার তরফে মঙ্গলবার সকালে একটি বৈঠক ডাকা হয়। ১৬ জন কাউন্সিলর ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এর আগে, সুবলকে পদত্যাগ করতে বলা হয়। তিনি চিঠি পাননি বলে তখনই জানিয়েছিলেন সুবল। আজও চিঠি পাননি বলেই জানান। তার পরই বৈঠকে তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে খবর। কাঁথি পুরসভা পরিচালনায় তিনি একার সিদ্ধান্ত প্রয়োগ করছেন, কারও সঙ্গে কোনও আলোচনা করছেন না, কাউকে কিছু জানাচ্ছেন না বলে অভিযোগ তৃণমূল কাউন্সিলরদের।


সেই সঙ্গে একটি স্কুলের অনুষ্ঠানে শিশিরের সঙ্গে এক মঞ্চে সুবলের উপস্থিতি এবং সেখানে শিশির-ভঞ্জনাও তৃণমূলের কাউন্সিলরদের ক্ষোভের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে খবর। সংবাদমাধ্যমে পীযূস বলেন, "সুবলবাব কী করেছেন, না করেছেন, তা নিয়ে কিছু বলতে চাই না। ২১টির মধ্যে দু'বছর আগে কাঁথি পুরসভা ১৭টি আসনে জেতে তৃণমূল। এর মধ্যে ১৬ জন কাউন্সিলর চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনতে আবেদন করেছিলেন। আজই সম্ভবত জমা পড়বে অনাস্থা প্রস্তাব।"


আরও পড়ুন: Mousumi Kayal: ‘রাজ্যে গরিব বিচার পায় না, শুভেন্দু অধিকারীকে বিশেষ ধন্যবাদ’, বললেন কামদুনির প্রতিবাদী মৌসুমী কয়াল


পূর্ব মেদিনীপুর পুরসভার চেয়ারম্যান সুবল যদিও জানিয়েছেন, পদত্যাগের নির্দেশ-সহ কোনও চিঠি পাননি তিনি। তবে দলের সিদ্ধান্ত শিরোধার্য। কিন্তু পীযূসের দাবি, মৌখিক ভাবেও জানানো হয়েছিল সুবলকে। চিঠিও দেওয়া হয়েছিল। কেন তিনি সত্য স্বীকার করছেন না, তা জানা নেই তাঁর। একজোট হয়ে সুবলের বিরুদ্ধে তৃণমূলের ১৬ জন কাউন্সিলর অনাস্থা প্রস্তাব জমা দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।


সম্প্রতি কাঁথিতে একটি বেসরকারি স্কুলের অনুষ্ঠানমঞ্চে একই সঙ্গে দেখা যায় সুবল এবং শিশিরকে। সেখানে পায়ে হাত দিয়ে শিশিরকে প্রণাম করেন সুবল। বক্তৃতা করার সময় শিশিরকে 'গুরুদেব' বলে সম্বোধনও করেন। তাঁকে বলতে শোনা যায়, "বাবা-মা জন্ম দিয়েছেন। পথচলা, আজ যে জায়গায় এসে পৌঁছেছি...পূজ্যপদ গুরুদেব এখানে রয়েছেন। তাঁকে আমার প্রণাম। মাননীয় শিশির অধিকারীকে।"


সেই ভিডিও সামনে আসতেই বিতর্ক শুরু হয়। তৃণমূলের অন্দরেই রোষের মুখে পড়েন সুবল। তাঁকে পদত্যাগ করতে নির্দেশ দেয় তৃণমূল। কিন্তু সুবলের যুক্তি ছিল, "আমি দলের অনুগত সৈনিক। অনেক পরীক্ষা দিয়েছি। আবার দিতে হবে। আমাদের হিন্দুদের সংস্কৃতি পায়ে হাত দিয়ে প্রমাণ করা, তাতে যদি দল অসম্মানিত হয়ে থাকে, দলের কাছে ক্ষমা চাইছি আমি।" তার পরই সুবলের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেওয়ার তোড়জোড়।