ঋত্বিক প্রধান, দিঘা: সমুদ্রসৈকতকে বেআইনি জবরদখলকারীদের হাত থেকে মুক্ত করতে নোটিস দেওয়া হয়েছিল আগেই। দিঘায় সমুদ্রসৈকত সংলগ্ন এলাকা জবরদখল করে ব্যবসা চালিয়ে দেওয়া হকারদের উচ্ছেদের নোটিস ধরানো হয়েছিল। সেই নিয়ে কার্যতই ধুন্ধুমার বাধল বৃহস্পতিবার। মেরিন ড্রাইভে গজিয়ে ওঠা চারটি বেআইনি হোটেল ভাঙার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টও। সেই নির্দেশ কার্যকর করতে গেলে হকার এবং স্থানীয়দের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধ বাধল পুলিশের। (Digha News) 


বৃহস্পতিবার সকালে বুলডোজার দিয়ে হোটেল ভাঙার কাজ শুরু হয়। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের আধিকারিক, উপকূলীয় থানার আধিকারিকরা পৌঁছন ঘটনাস্থলে। কিন্তু এই হোটেল ভাঙাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায়। রাস্তার উপর গাছের গুঁড়ি ফেলে দেন গ্রামবাসীরা। বাঁশ দিয়ে ঘিরে অবরোধ তৈরি করা হয়। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত আলোচনা হয়। (Purba Medinipur News)


কিন্তু তাতেও উত্তেজনা থামেনি। এর পর আদালতের নির্দেশ কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেয় পুলিশ এবং প্রশাসন। কিন্তু আবারও উচ্ছেদ অভিযান শুরু করতে গেলে অশান্তি চরম আকার ধারণ করে। খণ্ডযুদ্ধ বেঁধে যায় দুই পক্ষের মধ্যে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। কিন্তু ঘটনাস্থল ছেড়ে সরেননি গ্রামবাসীদের অনেকেই। বিক্ষিপ্ত জমায়েত রয়েছে এখনও। তাই পুলিশ এখনও মোতায়েন রয়েছে প্রচুর। 


আরও পড়ুন: JU Student Death:যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুতে আরও ৫ হস্টেল আবাসিককে তলব পুলিশের


গ্রামবাসীদের দাবি, শুধুমাত্র এই চারটি হোটেলই বেআইনি নয়। বেআইনি হোটেল ভাঙতে হলে মন্দারমণি থেকে শুরু করতে হবে হোটেল ভাঙা। পর পর অনেক বেআইনি হোটেলই গজিয়ে উঠেছে। সব ক'টিকে ভাঙা হোক। হোটেলগুলি যখন তৈরি হচ্ছিল, তখন প্রশাসন কোথায় ছিল, এই প্রশ্নও তুলেছেন গ্রামবাসীরা। যদিও দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের দাবি, আদালত যা নির্দেশ দিয়েছেস সেটা কার্যকর করা হচ্ছে মাত্র। 


কয়েক দিন আগেই দিঘায় হকার উচ্ছেদের নির্দেশ দেয় প্রশাসন। সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল মঙ্গলবার পর্যন্ত। দিঘায় সমুদ্রের ধারে বছরের পর পর বছর ধরে কেউ চা বিক্রি করছেন, কেউ ডাব, কেউ বা মুখরোচক খাবারদাবার। কেউ কেউ আবার বসেন ঝিনুক দিয়ে তৈরি জিনিসের পসরা নিয়ে। বছরের পর বছর ধরে এভাবেই জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন বহু মানুষ। কিন্তু প্রশাসন পরিষ্কার ভাবে জানিয়ে দেয় যে, দিঘার সমুদ্র সৈকতের পাশের রাস্তায় রাখা যাবে না অস্থায়ী দোকান বা গুমটি।


দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের তরফে জানানো হয়, পর্যটকদের সৈকতে যাওয়ার জন্য যে রাস্তা রয়েছে, তা অস্থায়ী দোকান বসায় অবরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছিল। তাতে পর্যটকরা সমস্যায় পড়ছিলেন। তাঁদের সুবিধার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। না মানলে অমান্যকারীর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করা হবে। তার মধ্যেই হোটেলস ভাঙা নিয়ে ধুন্ধুমার বাধল।