বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: বন্দুকের সামনে রেখে ফের ভয়াবহ ডাকাতি। রানাঘাট, পুরুলিয়ার পর এবার হলদিয়ার (Haldia) লালচকপুর। অ্যাকাউন্ট খোলার অছিলায় সমবায় সমিতিতে ঢুকে প্রায় ১৩ লক্ষ টাকা লুঠের অভিযোগ উঠল। পালানোর আগে অপরাধের প্রমাণ লোপাট করতে, সিসিটিভি (CCTV) ক্যামেরার হার্ড ডিস্কও খুলে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। লুঠেরাদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ।
রানাঘাট ও পুরুলিয়ার সেনকোর শোরুমে ডাকাতির পরে এবার হলদিয়া। গয়নার শোরুমের পরে সমবায় সমিতিতে ভয়াবহ ডাকাতি হল। ঘন ঘন যেভাবে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্যের ছবি সামনে আসছে, তাতে উদ্বেগ বাড়ছে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে। ২৯ অগাস্ট, ভরদুপুরে, দুই জেলায় সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের শোরুমে ভয়াবহ ডাকাতি দেখেছিল রাজ্যবাসী। তার দু'সপ্তাহ যেতে না যেতেই আবার ভয়াবহ ডাকাতি পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur) হলদিয়ায়। শিল্পতালুকের চকলালপুরে ভরদুপুরে গানপয়েন্টে রেখে ডাকাতি সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে। ভল্ট ভেঙে লুঠ করা হল প্রায় ১৩ লক্ষ টাকা। সেনকোর শোরুমের মতো, এই ঘটনাতেও সিসিটিভি ক্যামেরার হার্ড ডিস্ক নিয়ে চম্পট দিয়েছে দুষ্কৃতীরা।
সূত্রের খবর, এক কর্মীকে বন্দুক ঠেকিয়ে ক্যাশিয়ারের রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। ম্যানেজারের রুমের পাশেই ভল্ট রয়েছে, সেটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। চাবি দিতে অস্বীকার করলে গুলি করার হুমকি দেওয়া হয়। তারপর শৌচাগারে কর্মীদের আটকে রেখে ডাকাতি করা হয় হলদিয়ার চকলালপুর দেউলপোতা ও গোরানখালি সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে। সমবায় সমিতির কর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বুধবার বেলা বারোটা নাগাদ দুটি বাইকে ৬ জন দুষ্কৃতী চড়াও হয়। প্রত্যেকেরই মুখ হেলমেট ও মাস্কে ঢাকা ছিল। তাদের মধ্যে দুজন সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিতে ঢোকার মুখে পজিশন নেয়।
আরেকজন দুষ্কৃতী গ্রাহক সেজে ভিতরে গিয়ে নাবালকের নামে অ্যাকাউন্ট কীভাবে খুলতে হবে, সেই বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়ার অছিলায় খুঁটিনাটি দেখে আসে। ওই সমবায় সমিতির কর্মী বৃহস্পতি দাস বলেন, 'ঘটনার আধঘণ্টা আগে এসে বলল বাচ্চার অ্যাকাউন্ট খুলব। বলে ডকুমেন্ট নেই। ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলে নীচে নেমে যায়। বারোটা দশ-পনেরো নাগাদ ৪ জন ঢোকে। দুজনের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র, অন্যদের হাতে ভোজালি।' সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির কর্মীর অভিযোগ, গানপয়েন্টে শৌচাগারে আটকে রেখে লুঠপাট চালানো হয়। পুরুলিয়ায় সেনকোর শোরুমে ডাকাতির পর সিসি ক্যামেরার হার্ড ডিস্ক খুলে নিয়ে পালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। এক্ষেত্রেও ম্যানেজার ও কর্মীদের গানপয়েন্টে রেখে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংরক্ষণের হার্ড ডিস্ক খুলে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। ওই সমবায় সমিতির ম্যানেজার অপূর্ব দাস বলেন, 'হাত তুলে রাখতে বলেছিল। হার্ডডিস্ক দিতে চাইনি, বন্দুক খুলে গুলি ভরে তাক করল। ভয় পেয়ে যাই। প্রায় ১২ থেকে ১৩ লক্ষ টাকা লুঠ করেছে।'
পুলিশ সূত্রে খবর, এলাকার বেশ কয়েকটি সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে বাইকের নম্বর প্লেট দেখে দুষ্কৃতীদের সনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: পুজোয় নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের ব্যবস্থা, সমস্যা সমাধানে খোলা থাকছে একাধিক হেল্পলাইন