বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: নয়ানজুলি  (High Drain) বুজিয়ে তার উপর বাজার গড়ে তোলায় ক্ষোভ ছিল আগে থেকেই। কিন্তু সেই ক্ষোভ এ বার রাজনৈতিক তরজার আকার নিল মহিষাদলে (Mahishadal News)। বিজেপি (BJP) নেতার দায়ের করা মামলায় ওই বাজার ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। তাতেই তেতে উঠেছে সেখানকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি। নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে বিজেপি মানুষের রুজি-রোজগারের রাস্তা বন্ধ করে দিল বলে অভিযোগ তৃণমূলের (TMC)।


পূর্ব মেদিনীপুরের (Purba Medinipur News) মহিষাদলের ঘটনা। হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের হলদিয়া বাসস্ট্যান্ডে যে বিশ্রামাগার রয়েছে, তার ঠিক পিছন ঘেঁষেই এগিয়েছে হাই ড্রেন। ২০১৪ সালে মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে ওই ড্রেনের উপরই গড়ে তোলা হয় ‘অমরাবতী মার্কেট কমপ্লেক্স’। ব্যবসায়ীদের মধ্যে ২২টি স্টল বন্টণও করে দেওয়া হয়। তার পর থেকে বাজারের বিক্রিবাটা ভাল গতিতে এগোলেও, ক্ষোভ জমা হচ্ছিল স্থানীয়দের মধ্যে।


নয়ানজুলির উপর গডে় ওঠা ওই মার্কেট কমপ্লেস্কের বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন মহিষাদলের বাসিন্দা তথা বিজেপি-র রাজ্য কমিটির সদস্য প্রদীপ দাস। তার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ওই মার্কেট কমপ্লেক্স ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেয় হাই কোর্ট। সেই মতো পুলিশ এবং প্রশাসনিক আধিকারিকদের উপস্থিতিতে রবিবার থেকে ‘অমরাবতী মার্কেট কমপ্লেক্স’ ভেঙে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। তা নিয়েই এলাকায় রাজনৈতিক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে।


আরও পড়ুন: Bankura News : চপ ভাজার পর এবার ফুল-মিষ্টি নিয়ে তৃণমূলের পুর প্রশাসকের কাছে বিজেপি বিধায়ক


মহিষাদল পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তথা এলাকার তৃণমূল নেতা তিলক চক্রবর্তী গোটা ঘটনায় বিজেপি-কে কাঠগড়ায় তুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘১৯৯৩ সাল থেকে মহিষাদলে ওই বিশ্রামাগার রয়েছে। তার পিছনে মার্কেট কমপ্লেক্স গড়ে তুলে বেকার যুবকদের রুজি-রোজগারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু জনস্বার্থের দোহাই দিয়ে হাই কোর্টে নিয়ে যাওয়া হয় বিষয়টিকে। আসলে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে ২২টি পরিবারকে বিপদের মুখে ঠেলে দিল বিজেপি।’’ বিজেপি যদিও গোটা ঘটনায় তৃণমূলকেই দায়ী করেছে। অবৈধ নির্মাণের (Illegel Construction of Market Complex) সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ জড়িয়েছিল বলে অভিযোগ তাদের।


তবে এই গোটা ঘটনায় বিভক্ত স্থানীয় মানুষেরা। ওই মার্কেট কমপ্লেক্স থেকে অনক পরিবারের রুটিরুজি চলছিল বলে একাংশ যেমন মেনে নিয়েছেন, তেমনই জল নিকাশির (Water Drainage) জন্য তৈরি নয়ানজুলি বুজিয়ে মার্কেট কমপ্লেক্স গডে় তোলার তীব্র সমালোচনা করেছেন অন্য একটি অংশ। তাঁদের অভিযোগ, জল নিকাশির জন্য তৈরি নয়ানজুলি অবৈধ ভাবে ভরিয়ে সেখানে মার্কেট কমপ্লেক্স গড়ে তোলা হয়। শুরু থেকেই এ নিয়ে আপত্তি তুলে আসছিলেন তাঁরা। একাধিক বার বিক্ষোভ এবং প্রতিবাদ কর্মসূচিরও আয়োজন করা হয়। কিন্তু কোনো কিছুতেই কাজ হয়নি। তাঁদের আপত্তি উড়িয়েই নির্মাণকার্য সম্পন্ন হয়।