শিবাশিস মৌলিক, অনির্বাণ বিশ্বাস ও প্রদ্যোৎ সরকার, কলকাতা : কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতিতে শনিবার খেজুরিতে সভা (Khejuri Rally) করলেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। তৃণমূলকে চেনা ভঙ্গিতে আক্রমণের পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়, অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে উৎখাতের ডাক দিলেন। শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, খেজুরিতে তাঁর দলের জয়ী প্রার্থীকে টাকা দিয়ে দলবদল করিয়েছে তৃণমূল। পাল্টা জবাব দিয়েছে তৃণমূলও। 


কলকাতা হাইকোর্টের অনুমতিতে শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরিতে সভা করে তৃণমূলকে চাঁছাছোলা ভাষায় আক্রমণ করলেন বিরোধী দলনেতা। দুর্নীতি ইস্যুতে শান দেওয়ার পাশাপাশি, একযোগে নিশানা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে (Abhishek Banerjee)। শুভেন্দু বলেন, "আগামীদিনে পিসি-ভাইপোর রাজত্বকে উৎখাত করার কাজ আমরা করব। আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কম্পার্টমেন্টাল মুখ্যমন্ত্রী বানিয়েছি। অর্থাৎ, হারিয়ে দিয়েছি। আগামীদিনে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী করার জন্য আমাদের এই লড়াই চলছে, চলবে।"


পাল্টা জবাব দিতে ছাড়েনি রাজ্যের শাসক দল। তৃণমূল মুখপাত্র (TMC Spokesperson) কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh) বলেন, "আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে খেজুরি এবং নন্দীগ্রাম, দুই জায়গাতেই তৃণমূলের বিপুল লিড থাকবে। সবথেকে বড় কথা, কাঁথি এবং তমলুক এই দুটো লোকসভা আসনে জিততে চলেছেন জোড়া ফুল চিহ্নের প্রার্থীরা। অর্থাৎ, তৃণমূল কংগ্রেস। এটা ভালভাবে জানেন শুভেন্দু অধিকারী। তাই, প্রলাপ বকা শুরু হয়েছে।"


যদিও এখানে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী বিরোধী দলনেতা। শুভেন্দু বলেন, "গতবারে কাঁথি আসন আমরা ১ লক্ষ ১১ হাজার ভোটে হেরেছিলাম। ৩ লক্ষের বেশি ভোটে আমরা জেতাব। তমলুক আমরা জেতাব। আমাদের মাটি, মোদিজির ঘাঁটি। এই মাটিতে রাষ্ট্রবাদ জিতবে, রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি পরাস্ত হবে। "


বিরোধী দলনেতার দাবি অবশ্য ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন। তিনি বলেন, "আপনি খুব ভাল করে জানেন, আপনার বিধানসভা কেন্দ্রে জেলা পরিষদের নিরিখে সাড়ে ১০ হাজার ভোটে আপনার দল হেরেছে। আপনি খুব ভাল করে জানেন, আগামীদিনে আপনার বিধানসভা কেন্দ্রে এবং আপনার জেলার সব জায়গায় বিজেপির ভরাডুবি অবশ্যম্ভাবী। শুধুমাত্র মস্তিষ্ক বিকৃতির কারণে, পার্টিতে নম্বর বাড়ানোর জন্য, ক্যাডারদের উজ্জীবিত করার জন্য সস্তার কথা বলছেন। বাস্তবটা আপনি নিজেও খুব ভাল করে জানেন।"


এদিনের সভায়, শুভেন্দু অধিকারী অভিযোগ করেন, খেজুরিতে তাঁর দলের জয়ী প্রার্থীকে টাকা দিয়ে দলবদল করিয়েছে তৃণমূল। তিনি বলেন, "মোট ৮৪ জন প্রধান আমাদের এই জেলায় হয়েছে। সব জায়গায় লুঠ করা হয়েছে। তার পরেও ১৪টা জেলা পরিষদ আমরা জিতেছি।" সব মিলিয়ে তুঙ্গে উঠেছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।