ঋত্বিক প্রধান, পটাশপুর: এক দুর্ভোগ কাটতে না কাটতে আর এক দুর্যোগ। নদীবাঁধ ভাঙায় উঠতে হয়েছিল ত্রাণ শিবিরে। ফিরে এসে বাড়ির চেহারা দেখে হতবাক পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরের বাসিন্দারা। অধিকাংশ কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়ার মুখে। ফের ত্রাণ শিবিরে উঠতে হচ্ছে দুর্গতদের।


একটু জল নামতেই এঁরা ত্রাণ শিবির থেকে ফিরেছিলেন বাড়িতে। কিন্তু, থাকবেন কোথায়? কারও বাড়ি প্রায় মাটিতে মিশে গেছে। কারও বাড়ির দেওয়ালে ফাটল। কেলেঘাইয়ের বাঁধ ভাঙায় পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর ১ ও ২ নম্বর ব্লকের লক্ষাধিক মানুষ সপ্তাহ দুয়েক ধরে জলবন্দি। জল সামান্য নামলেও, দুর্ভোগ কাটছে না পটাশপুরের পঁচেট এলাকার বাসিন্দাদের। ভেঙে পড়ার মুখে একের পর এক বাড়ি। প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে আর মাটির বাড়িতে থাকতে চাইছেন না কেউ। অভিযোগ, পানীয় জল ঠিকমতো না পাওয়ায় বাড়ছে পেটের রোগ। অগত্যা এখানকার বাসিন্দাদের আবার ঠিকানা ত্রাণ শিবির। 


এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পটাশপুরের বাসিন্দারা। পঁচেটের বাসিন্দা জ্যোতির্ময় মাইতি জানিয়েছেন, ‘জল সরলেও ঘরে ফাটল ধরা পড়েছে। যা অবস্থা, আজকালের মধ্যে বাড়ি পড়ে যাবে। কোনও উপায় নেই। ত্রাণ শিবিরে যেতে হবে।’


এই অঞ্চলেরই অপর এক বাসিন্দা শ্রীনাথ মান্না জানিয়েছেন, ‘নদীবাঁধ ভাঙার ফলে গ্রামের ৮০ ভাগ বাড়িই ডুবে যায়। জল নামলেও, ত্রাণ শিবির থেকে ফিরে দেখি বাড়ি ভেঙে পড়েছে। জল কমার সঙ্গে সঙ্গে সব পচে যাচ্ছে।’


শুধু পঁচেট পঞ্চায়েত এলাকায় ৪২টি ত্রাণ শিবিরে রয়েছেন ১২ হাজার মানুষ। এই পরিস্থিতিতে ত্রাণ শিবির আরও কিছুদিন চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। পটাশপুরের বিধায়ক উত্তম বারিক জানিয়েছেন, ‘কত বাড়ি বসে গেছে, তার হিসেব এখনও পাইনি। ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। ১০০ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত পটাশপুর ব্লক। ত্রাণের ব্যবস্থা করা হবে।’


ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে মঙ্গল ও বুধবার উপকূলবর্তী পূর্ব মেদিনীপুরের ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। আজ থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন পটাশপুরের বাসিন্দারা।