বিটন চক্রবর্তী, পূর্ব মেদিনীপুর: পঞ্চায়েত ভোটের আগে নন্দীগ্রামে পুরনো দলে ফেরার বার্তা দিয়েছিলেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা। তবে শেষ পর্যন্ত রইলেন গেরুয়া শিবিরেই। মাসখানেক আগে নেতৃত্বের প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে দলত্যাগের কথা ঘোষণা করেন বিজেপির পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটির প্রাক্তন সদস্য ও নন্দীগ্রাম বিধানসভার নির্বাচনী কমিটির আহ্বায়ক বটকৃষ্ণ দাস। 


তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের সঙ্গে বৈঠকও করেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা। গতকাল শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বৈঠকের পর মতবদল। পুরনো দলেই থাকার কথা ঘোষণা করলেন বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতা। গুরুত্ব দিতে রাজি নয় তৃণমূল। ভুল বোঝাবুঝি মিটে যাওয়ায় দলের শক্তিবৃদ্ধি হবে, প্রতিক্রিয়া বিজেপির। 



  • ২৩ অক্টোবর বিজেপির পদ থেকে ইস্তফা

  • ১ নভেম্বর: পদ্ম-শিবির ত্যাগ

  • ৪ নভেম্বর: তৃণমূলে যোগদানের জল্পনা

  • ৭ ডিসেম্বর: ঘুরে ফিরে বিজেপিতে 


পঞ্চায়েত ভোটের মুখে নন্দীগ্রামে ‘ঘর বাঁচাল’ বিজেপি। তৃণমূলে যোগদানের জল্পনা চললেও শেষ অবধি দলত্যাগী নেতা ফিরে এলেন পদ্ম শিবিরেই। বটকৃষ্ণ দাস, বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা কমিটির সদস্য ছিলেন। গত ২৩ অক্টোবর, মতবিরোধের জেরে দলীয় পদ থেকে তিনি ইস্তফা দেন।এর কয়েকদিন পরই বিজেপি ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন নন্দীগ্রামের এই প্রভাবশালী নেতা। এরপর গত ৪ নভেম্বর তাঁর তৃণমূলে যোগদানের জল্পনা ছড়ায়। কিন্তু, সেদিন তিনি নিজেকে কার্যত গৃহবন্দি করে রাখেন!এর ঠিক একমাস পরে, নন্দীগ্রামের বিক্ষুব্ধ এই নেতা ফের শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে ফিরলেন বিজেপিতে।


নন্দীগ্রামের বিজেপিতে ফেরা নেতা বটকৃষ্ণ দাস এ প্রসঙ্গে বলেন, দলের ব্যক্তির বিরুদ্ধে আমার প্রতিবাদ ছিল যারা দলের নানা কাজে সমস্যা হচ্ছিল। আমাদেরকে নিয়ে করছিল না। আমরা তো দলটা বহুদিন ধরে করি, আদর্শ দেখে দল করি। বেশ কিছু ব্যক্তি সমস্যা তৈরি করেছিল। তাই নিমতৌড়তে গিয়ে মুখ খুলেছিল। শুভেন্দুবাবু আমাদের সঙ্গে বসিয়ে সেই সমস্যা মিটিয়েছে। সমস্যা মিটে গেছে।


গত ১ নভেম্বর, নন্দীগ্রামের ২ বিজেপি নেতা জয়দেব দাস ও বটকৃষ্ণ দাস দল ছাড়েন। এরপর তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের সঙ্গে তাঁদের বৈঠক ঘিরে নতুন জল্পনা তৈরি হয়। ৪ নভেম্বর জয়দেব দাস-সহ ৩৩ জন তৃণমূলে যোগ দিলেও, বটকৃষ্ণ দাস কিন্তু যোগ দেননি! সেদিন বটকৃষ্ণ দাসের বাড়িতেও যান নন্দীগ্রাম থানার আইসি। 


ভাইরাল হয় তাঁদের কথোপকথনের ভিডিও। শেষপর্যন্ত বুধবার শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বৈঠকের পর, ফের বিজেপিতে ফেরেন বটকৃষ্ণ। তমলুক সাংগঠনিক বিজেপি জেলা কমিটির সদস্য অভিজিৎ মাইতির কথায়, বটকৃষ্ণ বিজেপির আদর্শে দীক্ষিত। মাঝখানে কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। এরমাঝে সাড়ে ৩ বছর জেল খাটা আসামীটা, যাঁকে নন্দীগ্রামে পাঠিয়েছিল। সে এসে এদের ভুলভাল বুঝিয়েছিল। শুভেন্দুবাবু বসেছেন। পশ্চিমবঙ্হগ থেকে তৃণমূলকে গঙ্গায় ফেলে দেব।


তমলুক সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেস চেয়ারম্যান পীযূষ ভুঁইয়া বলেন, বটকৃষ্ণ দাস পার্টির অভ্যন্তরী কারণে পদ ছেড়েছে। তারপর পার্টিও ছেড়েছে। ছাড়বে না ছাড়বে তাঁর বিষয়। আমাদের দল শক্তিশালী। আমা জনগণের ওপর নির্ভরশীল। 


সামনে পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে নন্দীগ্রামে বিক্ষুব্ধ নেতার ফিরে আসাটা বিজেপিকে কতটা ডিভিডেন্ট দেবে, তার উত্তর দেবে সময়।