ঝালদা, পুরুলিয়া: তৃণমূল পরিচালিত ঝালদা পুরসভায় এবার অনাস্থা প্রস্তাব কংগ্রেসের (Congress)। অনাস্থা চেয়ে জেলাশাসক ও মহকুমাশাসককে চিঠি কংগ্রেস কাউন্সিলরদের। অনাস্থা চেয়ে চিঠি কংগ্রেসের ৫ কাউন্সিলর ও ১ নির্দল কাউন্সিলরের। ঝালদা পুরসভার (Jhalda) ১২টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৫টি তৃণমূল, ৫টি কংগ্রেস, ২টি নির্দল। এক নির্দল কাউন্সিলর সমর্থন করেন তৃণমূলকে। অপর নির্দল কাউন্সিলরকে নিয়ে তৃণমূলের বোর্ডের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব কংগ্রেসের।
প্রসঙ্গত, পুরবোর্ড গঠনের আগেই রক্তাক্ত হয় পুরুলিয়ার ঝালদা। গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় চারবারের কংগ্রেস কাউন্সিলরের। দলের বৈঠক সেরে ফিরে আসার পরই দুষ্কৃতীদের হামলার মুখে পড়েন কংগ্রেস নেতা।পুরুলিয়া শহরে দলের বৈঠকে যোগ দিতে গেছিলেন তপন কান্দু। বৈঠক শেষ হওয়ার পর ঝালদায় ফিরে যান। বিকেলে কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গে রাস্তায় হাঁটছিলেন তিনি। অভিযোগ, তখনই মোটরবাইকে করে এসে দুষ্কৃতীরা তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। মাথায় গুলি লাগে কংগ্রেস কাউন্সিলরের। রাঁচির হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে, সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
এরপর কংগ্রেসের হয়ে প্রার্থী হন নিহত তপন কান্দুর ভাইপো মিঠুন কান্দু। এবং ঝালদায় কংগ্রেসের বড় জয় আনেন তিনিই। ৭৭৮ ভোটে জেতেন নিহত তপন কান্দুর ভাইপো। ঝালদা পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে বড় জয় আসে কংগ্রেসের। জয়ের পর মিঠুন কান্দু জানান, 'জয় আগেই নিশ্চিত ছিল।' বড় ব্যবধানে জয়ের পর কংগ্রেসের জয়ী প্রার্থী মিঠুন কান্দু আরও বলেন, 'কাকিমার চোখের জলের জয়। জয় প্রত্যাশিত ছিল, দাবি তপন কান্দুর ভাইপো মিঠুন কান্দুর।' পাশাপাশি, ' ঝালদা টাউন তৃণমূল কংগ্রেসের অন্তর্ঘাতে হেরেছি', অভিযোগ তৃণমূল প্রার্থীর। 'মোটে ১৫২ ভোট পেয়েছি, এটা প্রত্যাশিত নয়', অভিযোগ পরাজিত প্রার্থীর। যদিও মিঠুন কান্দুর বিপুল ভোটে জয়ে স্বাভাবিকভাবেই, তপনকান্দু খুনের বহু বিতর্ক ইস্যুর পর উচ্ছ্বাসে ভাসে গোটা পুরুলিয়া ।
আরও পড়ুন, 'তোমরা যখন ক্ষমতায় থাকবে না, এজেন্সি গিয়ে তোমাদের দুই কান মুলবে', বললেন মমতা
প্রসঙ্গত, ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর হত্যাকাণ্ডের পর প্রথমে রাজ্যের এসআইটি-র হাতে তদন্তের দায়িত্ব এলেও, পরে তা কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয়, কলকাতা হাইকোর্ট। এদিকে ততদিনে ঝালদা থানার আইসি এবং তপন কান্দু-সহ আরও এক তৃণমূল কর্মীর উসকানিমূলক রেকর্ড ফাঁস হয়েছে বলে দাবি রাখে কংগ্রেস নের্তৃত্ব। এমনকি নিহত তপন কান্দু-র স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু স্পষ্টভাবে একই দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন। এবং তাঁর মেয়েও ক্ষোভ উগরে দেন এই ঘটনার পর। তবে কাকার মৃত্যু পর, কংগ্রেসের পদপ্রার্থী রূপে তার নাম প্রকাশ পেতেই , তিনি বলেছিলেন, কাকার দেখানো পথেই তিনি এগিয়ে যেতে চান। এবং তার দায়িত্ব কর্তব্য কাঁধে নিতে চান। স্বাভাবিকভাবেই এদিনের জয়ের পর বাধ ভাঙা আনন্দ কান্দু পরিবারে।