সন্দীপ সমাদ্দার, পুরুলিয়া: পুরুলিয়ার (Purulia) কোটশিলার সিমনিজাবর জঙ্গলে বন দফতরের (Forest Department) পাতা ক্যামেরায় (Camera) দেখা মিলল চিতাবাঘের (Leopard)। গত ২ বছর ধরে বনাঞ্চলে একের পর এক গবাদি পশুর মৃত্যু ও কঙ্কাল উদ্ধারের ঘটনায় সন্দেহ দানা বাঁধে বন দফতরের। এরপর ট্র্যাপ ক্যামেরা (Trap Camera) বসানো হয়। তাতেই ধরা পড়ল চিতাবাঘের ছবি। 


ঘন জঙ্গলের মধ্যে জ্বলজ্বল করছে চোখ দুটো।  স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে কালো ছোপ ছোপ শরীরটা। পুরুলিয়ার কোটশিলার সিমনিজাবর জঙ্গলে বন দফতরের পাতা ক্যামেরা-ট্র্যাপে দেখা মিলল চিতাবাঘের। ২ বছর ধরে এই এলাকায় গবাদি পশুর মৃত্যুতে, আশঙ্কাটা তৈরি হচ্ছিল। কয়েকমাস আগে বসানো হয় ক্যামেরা ট্র্যাপ। 


বন দফতর সূত্রে খবর, ২২ ফেব্রুয়ারি চিতাবাঘটির ছবি ধরা পড়ে। তারপরই বিষয়টি বন দফতরকে বিষয়টি জানানো হয়। ক্যামেরা ট্র্যাপে চিতাবাঘের ছবি ধরা পড়ার পর, গ্রামবাসীদের সতর্ক করতে বনদফতরের তরফে প্রচার শুরু হয়েছে। পুরুলিয়া বিভাগের ডিএফও দেবাশিস শর্মা, "আমরা কিছুদিন ধরেই দেখছি বনে কিছু গবাদি পশু মারা যাচ্ছে। আমরা গরুর কঙ্কাল দেখি। জন্তুর আঘাতে মৃত্যু। জঙ্গলে ট্র্যাপ ক্যামেরা। সেই অঞ্চলে চিতাবাঘ দেখতে পাই। গ্রামের লোককে সচেতন করেছি। পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছি।"  


আরও পড়ুন, আপের সদস্য সংগ্রহের কাজ শুরু বাংলায়, কটাক্ষ তৃণমূল-বিজেপির


২০১৫ সালের ২০ জুন, কোটশিলা বনাঞ্চলের টাটুয়াড়ায় লোকালয়ে চলে আসা একটা চিতাবাঘকে মেরে গাছে ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন এলাকাবাসীরা। তারপর থেকে এসব এলাকায় চিতাবাঘের গতিবিধি বিশেষ নজরে আসেনি। যে চিতাবাঘটির ছবি ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা পড়েছে তাকেও লোকালয়ে আসতে দেখা যায়নি। 


এদিকে, চিতাবাঘ মেরে সেই চামড়া ও নখ চোরাপাচারের অভিযোগে উত্তরবঙ্গে  তিনজনকে গ্রেফতার করল সশস্ত্র সীমা বল। জানা গিয়েছে, এসএসবির গোয়েন্দা বিভাগ ও ঘোষপুকুর বন দফতর এই যৌথ অভিযান চালায়। নির্দিষ্ট খবরের ভিত্তিতে শুক্রবার দুপুরে শিলিগুড়ির (Siliguri) ফাঁসিদেওয়ার ঘোষপুকুরে একটি বাইক আটক করা হয়। তল্লাশি চালিয়ে বাইকে থাকা দুই ব্যাক্তির কাছ থেকে একটি চিতাবাঘের চামড়া ও নখ উদ্ধার করা হয়। পরে অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় আরও একজনের নাম। তাকেও এদিন গ্রেফতার করা হয়।


বন দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি এই চিতাবাঘটি শিকার করে ধৃতরা। এরপর তারা সবাই মিলে বাঘের মাংস খাওয়ার পাশাপাশি চামড়া ছাড়িয়ে নেয়। এরপর চিতাবাঘটির চামড়া ও নখ গোপনে নেপালে বিক্রি করার মতলব ছিল তাদের। তবে তার আগেই তারা ধরা পড়ে গেল।