ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, প্রকাশ সিনহা, কলকাতা : আর জি কর-কাণ্ডের পর ১০ দিন পেরিয়ে গিয়েছে। বিচারের দাবিতে দিকে দিকে ছড়িয়ে পড়ছে আন্দোলন। হাইকোর্টের নির্দেশে তদন্তভার নিয়েছে সিবিআই।
৯ অগাস্ট আর জি কর হাসপাতালের সেমিনার রুম থেকে উদ্ধার হয় তরুণী চিকিৎসদের মৃতদেহ। CBI সূত্রে দাবি,
৮ অগাস্ট রাত থেকে ৯ অগাস্ট ভোরের মধ্য়ে আর জি কর হাসপাতালে তিনবার এসেছিল ধৃত সঞ্জয় রায়। সিবিআই সূত্রে দাবি, সঞ্জয় প্রথম হাসপাতালে ঢুকেছিল সন্ধে ৬টায়। তবে একা নয়, তার সঙ্গে ছিল সৌরভ নামে আরেক সিভিক ভলান্টিয়ার।
তারা কোথায় যায় তখন? সূত্রের খবর, তদন্ত বলছে, জরুরি বিভাগ থেকে আনুমানিক ১০ মিটার দূরে সার্জিকাল ওয়ার্ডে যায় দুজনে। জানা যাচ্ছে, সার্জিকাল ওয়ার্ডে সৌরভের এক দাদা ভর্তি ছিল বলে পুলিশ ও সিবিআইয়ের কাছে দাবি করেছে ধৃত সঞ্জয়। সেই সৌরভের দাদাকেই দেখতে যায় দুজনে। ১৫ মিনিট সেখানে থেকে চলে আসে তারা।
সিবিআই সূত্রে দাবি, সঞ্জয় দ্বিতীয়বার হাসপাতালে ঢোকে রাত ১১টায়। তখন সে একাই ছিল। CCTV-র সূত্র ধরে, জানা যাচ্ছে, তৃতীয়বার তাকে চেস্ট মেডিসিন বিভাগে ঢুকতে দেখা যায়, ভোর ৪টে ৩ মিনিটে।
CBI সূত্রে দাবি, জেরায় তথ্য় গোপন করছে সঞ্জয়। বেশিরভাগ প্রশ্নের উত্তরেই মুখ বন্ধ রাখছে সঞ্জয়। তার জবাব - আমি জানি না। তাই আসল তথ্য পেতে ধৃত সঞ্জয়ের পলিগ্রাফ টেস্ট করানোর কথা ভাবছে CBI। এই বিষয়ে আদালতের অনুমতি লাগে। তাই শিয়ালদা কোর্টে আবেদন করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা।
কেন্দ্রীয় এজেন্সি সূত্রে খবর, জিজ্ঞাসাবাদের সময় সঞ্জয়ের সাইকো অ্য়ানালিসিস টেস্ট করা হয়েছে। টিমে আছেন, দিল্লি থেকে আসা বিশেষজ্ঞ সাইকোলজিস্ট। CBI-এর তরফে দাবি, সঞ্জয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উত্তর দিচ্ছে না।
কী কী প্রশ্ন করা হচ্ছে। সূত্রের খবর, সঞ্জয়ের কাছে জানতে চাওয়া হচ্ছে, সেদিন রাতে কতবার আর জি কর হাসপাতালে গেছে সঞ্জয় ? কতবার সেমিনার রুমে ঢুকেছে? ঘটনার পর কোথায় পালিয়েছিল? কার কার সঙ্গে ফোনে কথা বলেছিল? এসব প্রশ্নেরও কোনও সদুত্তর পাওয়া যায়নি এখনও।
পুলিশ সূত্রে খবর, আর জি কর আউটপোস্টে কর্মরত সিভিক ভলান্টিয়ারদের মধ্যে সঞ্জয় ছিল না। তাও এই হাসপাতালে ছিল তার অবাধ গতিবিধি। কিন্তু তা সত্ত্বেও কীভাবে আর জি কর মেডিক্য়াল কলেজে সঞ্জয়ের অবাধ বিচরণ? জানা যাচ্ছে, হাসপাতালের নার্সিং স্টাফ, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা বেশ কয়েকজন সঞ্জয়ের পূর্ব পরিচিত ছিল, তাই যখন খুশি হাসপাতালের যে কোনও জায়গায় সে যেতে পারত।
CBI-এর তদন্তকারী দলে রয়েছেন ১৯৯৪ ব্য়াচের IPS অফিসার সম্পদ মীনা। উত্তরপ্রদেশের হাথরস ধর্ষণকাণ্ডের তদন্তকারী দলে ছিলেন CBI-এর এই অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর। তদন্তকারী দলে রয়েছেন CBI-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সীমা পাহুজাও। তিনিও উত্তরপ্রদেশের হাথরস ধর্ষণকাণ্ডের তদন্ত করেছিলেন। সোমবার, এই মামলার তদন্তে, আর জি কর মেডিক্য়াল কলেজ, নির্যাতিতার বাড়ি ও লালবাজারে যায় সিবিআইয়ের পৃথক পৃথক টিম।
আরও পড়ুন : মহানগরে আকাশ ভাঙা বৃষ্টি, মঙ্গলে কোন কোন জেলায় দুর্যোগের অশনিসঙ্কেত?