কলকাতা : তিন মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার। ফের বিস্ফোরক রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (Rabindra Bharati University VC)। "এভাবে কাজ করা কঠিন, সম্মতি ছাড়াই দফতরের কর্মীদের তুলে নেওয়া হয়েছে", শাসক দলের অনুগামী কর্মী-সংগঠনের বিরুদ্ধে অভিযোগ সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরীর (Sabyasachi Basu Roychowdhury)। 


"এভাবে কাজ করা কঠিন"-


তিনি বলেন, "রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতির ক্রমশ অবনতি হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীকে পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে দু'বার চিঠি দিয়েছিলাম। পরবর্তী পর্যায়ে ২২ শ্রাবণ যখন জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে রবীন্দ্র-প্রয়াণের অনুষ্ঠান হয়, শিক্ষামন্ত্রী স্বয়ং এসে আশ্বাস দিয়েছিলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে। কাজ করতে কোনও অসুবিধা হবে না। কালীপুজোর আগেই দেখি, আমার দফতরে যে কর্মীরা ছিলেন, তাঁদের তুলে নেওয়া হয়েছে। এরপর অন্য আর একদল কর্মীকে সেখানে পাঠানো হয়। সেটা প্রশাসনিক স্তরে হয়নি। রেজিস্টারও জানিয়েছেন, কর্মীদের স্থানান্তরিত করার ব্যাপারে উনি কোনও নির্দেশ দেননি। আজ সকালে যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে যাই, তখন আমার অর্থাৎ উপাচার্যের দফতর সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। সেটাকে খোলার ব্যবস্থা করা হয়। এরপর সেখানে কাজ করার চেষ্টা করি। এভাবে কাজ করা কঠিন। যাঁরা বাধা দিচ্ছেন, তাঁরা শাসকদলের অনুগামী বলে পরিচয় দেন।" 


টানা ১০ বছর ধরে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যর দায়িত্ব পালন করছেন সব্যসাচীবাবু। সম্প্রতি তিনি বলেন ‘‘গত কয়েক মাস ধরেই দেখতে পাচ্ছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ছাত্র এবং কিছু শিক্ষাকর্মী চত্বরে এমন পরিস্থিতি তৈরি করছেন, যেখানে বিভিন্ন সময় শিক্ষক, আধিকারিক এবং উপাচার্যের দফতরে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন তাঁরা। সবসময় যে বিক্ষোভের কারণগুলি সঙ্গত, এমনও নয়। গত ১৮ জুলাই ছাত্রদের বক্তব্য ছিল, লাইব্রেরিতে বই নেই। আমি বলি, না থাকলে তালিকা তৈরি করে লিখিত জমা দিতে। বই নিশ্চিত ভাবেই আছে, পত্রপত্রিকাও আছে। তা-ও নির্দিষ্ট কোনও বই লাগলে, লিখিতভাবে জানালে, তা সমাধানের চেষ্টা করব। আর্থিক সঙ্কট থাকলেও বইয়ের প্রয়োজনীয়তা অগ্রাধিকার পাবে।’’


সব্যসাচীবাবু আরও বলেন, ‘‘আমার ঘরে তখন শিক্ষক, আধিকারিকরা ছিলেন। ছাত্ররা চলে গিয়ে, ফের ১০ মিনিট পর ফিরে এসে জানান, তাঁরা লিখিত দেবেন না। বরং অন্য প্রশ্ন তোলেন। জানতে চান, রেজিস্ট্রার কেন দফতরে আসেননি। আমা জানিই, ছুটিতে রয়েছেন উনি। ছাত্ররা জানতে চান, তার জন্য দরখাস্ত দিয়েছিলেন কি!’ আমি জানাই, হ্যাঁ। এর পর দরখাস্ত দেখতে চান ওঁরা। আমি জানিয়ে দিই, আধিকারিকের ছুটির দরখাস্ত দেখা, ছাত্রদের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে না। এর পর ঘরে বসে নানা মন্তব্য করতে থাকেন ছাত্ররা। জানান, শ্রেণিকক্ষগুলি যেহেতু শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত নয়, উপাচার্যের দফতরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র রয়েছে, তাই প্রতিদিন সকালে সেখানে এসেই অবস্থান বিক্ষোভ করবেন তাঁরা। তার পর থেকেই আর যাওয়া হয়নি।’’


আরও পড়ুন ; ১৭ দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়েই যেতে পারছেন না, অব্যাহতি চেয়ে জোড়া চিঠি মমতাকে, মুখ খুললেন RBU উপাচার্য