সঞ্চয়ন মিত্র (কলকাতা) : উত্তরে অতিবৃষ্টি আর দক্ষিণে ঘাটতি। আবহাওয়ার এই খামখেয়ালিপনার প্রভাব পড়তে পারে কৃষিতে। বর্ষার এই সময়, পাট পচানো থেকে ধান রোওয়া সবই বৃষ্টির উপর নির্ভরশীল। বর্ষার প্রথম মাস পেরিয়ে গেলেও, এখনও সেভাবে বৃষ্টি হয়নি দক্ষিণবঙ্গে (Rain deficiency in South Bengal)।


বৃষ্টির ঘাটতি দক্ষিণবঙ্গে


আবহাওয়া দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জুন মাসে দক্ষিণবঙ্গে স্বাভাবিকের থেকে ৪৮ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে। এই সময়, কলকাতায় ঘাটতির পরিমান ৫৯ শতাংশ। জুন মাসের পর, জুলাইয়ের প্রথম সাত দিনেও সেভাবে বৃষ্টি হয়নি। আগামী কয়েক দিনেও দক্ষিণবঙ্গে ভারী বৃষ্টির সম্ভবনা নেই। তাই, বৃষ্টির ঘাটতি ক্রমেই বেড়ে চলেছে দক্ষিণবঙ্গে। 


১ জুন থেকে ৮ জুলাই পর্যন্ত গাঙ্গের পশ্চিমবঙ্গে গড়ে বৃষ্টি হয়, ৩৩৪ মিলিমিটার। সেখানে এবারে, ১৭৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। 


দক্ষিণবঙ্গের চাষের ক্ষেত্রে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন আবহাওয়া বিশেষজ্ঞরা


আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, 'বিশেষ করে ধান এবং পাট চাষের জন্য সমস্যা তৈরি হবে।'


স্বাভাবিক ভাবে বর্ষার সময়, বঙ্গোপসাগরের ওপর মাসে ২ থেকে ৩টি নিম্নচাপ তৈরি হয়। আবহাওয়া দফতরের মতে, জুন মাসে একটিও নিম্নচাপ তৈরি না হওয়ায়, দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির এই ঘাটতি।


আরও পড়ুন- ক্যানিংয়ের ৩ তৃণমূল নেতাকে খুনের ঘটনায় প্রথম গ্রেফতার


প্রসঙ্গত মাস কয়েক আগেই উত্তরবঙ্গে প্রবল বৃষ্টিতে ছাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। আচমকাই ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে লন্ডভন্ড হয়েছিল উত্তর দিনাজপুর (North Dinajpur)। চৈত্রের শেষে প্রকৃতির রোষে নাজেহাল হতে হয়েছিল দুই জেলার বাসিন্দাদের। কয়েকদিনের নাগাড়ে বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়েছিল কোচবিহার (Coochbehar)। বৃষ্টির জলে ডুবে যায় একের পর এক কৃষিজমি। জমা জলে পচে নষ্ট হয়েছিল পাট ও অন্যান্য ফসল। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক অমল রায়ের কথায়, “কী করব কিছু বুঝতে পারছি না। প্রশাসন সাহায্য করুক।’’ জেলা কৃষি দফতর (District Agriculture Department) সূত্রে খবর,এখনও পর্যন্ত কোচবিহারে প্রায় ৩০০০ হেক্টর জমির পাট নষ্ট হয়েছে। বাংলা শস্য বিমা যোজনার মাধ্যমে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দেয় প্রশাসন।