কলকাতা : রাখি পূর্ণিমায় (Rakhi Purnima) ছুটি ঘোষণা রাজ্য সরকারের । ১১ অগাস্ট রাখি পূর্ণিমা উপলক্ষে ছুটি দেওয়া হয়েছে। এই মর্মে নবান্ন (Nabanna) থেকে জারি করা হল বিজ্ঞপ্তি। সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত সমস্ত দফতরে ছুটি থাকবে।


রাখি পূর্ণিমা। রাখি উৎসব কিংবা রাখি বন্ধন। ভাই-বোনের ভালোবাসাকে উৎসর্গ করা এই দিন। রাখি বন্ধন শুধু কোনও অনুষ্ঠানই নয়, বহু যুগ ধরে ভাইয়ের দীর্ঘায়ু এবং মঙ্গল কামনা করে তাদের হাতে রাখি পরিয়ে দেয় বোনেরা। পরিবর্তে বোনের সম্মান এবং সুরক্ষার দায়িত্বও নেয় ভাইয়েরা। কিন্তু কেন পালন করা হয় রাখি বন্ধন উৎসব ? কী মাহাত্ম্য এই বিশেষ দিনের?


কী রয়েছে পুরাণে ?


পুরাণ অনুযায়ী, মহাভারতে যুদ্ধের সময় একবার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আঘাত লাগে। সেই সময়ে দ্রৌপদী তাঁর শাড়ির অংশ ছিঁড়ে শ্রীকৃষ্ণের হাতে বেঁধে দিয়েছিলেন। এবং এরপর শ্রীকৃষ্ণ সুস্থও হয়ে যান। পরবর্তীতে দ্রৌপদীর সমস্ত সুরক্ষা এবং সম্মান রক্ষার ভার নিয়েছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। তাই দুর্যোধন যখন দুঃশাসনকে দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের আদেশ দেন, তখন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ দ্রৌপদীর সম্মানরক্ষার দায়িত্ব নেন এবং অদৃশ্য থেকে নিজে স্বয়ং বস্ত্ররূপে দ্রৌপদীকে আবৃত করতে থাকেন। যা হরণ করা সম্ভব হয়নি দুঃশাসনের পক্ষে। 


আরও পড়ুন ; 'বাংলার মাটি-বাংলার জল পুণ্য হউক', রবীন্দ্রনাথের রাখিবন্ধনও ছিল সম্প্রীতি-ভ্রাতৃত্বের


রীতি অনুযায়ী, শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমায় প্রতি বছর দেশ জুড়ে পালিত হয় রাখি বন্ধন উৎসব। এদিন বোনেরা ভাইয়ের মঙ্গল কামনা করে তাদের হাতে রাখি বেঁধে দেয়। যদিও প্রতি বছর একই দিনে রাখি উৎসব পালন করা হয় না। শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমায় চাঁদের অবস্থান দেখেই এর দিন নির্ধারণ করা হয়।


রাখির সঙ্গে বাংলা ও বাঙালির ইতিহাস জড়িয়ে অনেক আঙ্গিকে। সেখানে ধর্ম যেমন রয়েছে, আছে ইতিহাসের ছোঁয়া, আছে আবেগ। পুরাণ প্রসঙ্গও সেই কাহিনী বলে। ভাইকে রক্ষায় বোনের সেই বাঁধন দেশজুড়ে পালিত হয় রাখি বন্ধন উদযাপনে। আবার বঙ্গভঙ্গ আইনে যখন ভাগ হচ্ছে দুই বাংলা, সেই অশান্ত মুহূর্তে সম্প্রীতির বন্ধনে বেঁধেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আশ্বিনের সেই শুভক্ষণ তৎকালীন সময়ে স্থানও পেয়েছিল পঞ্জিকাতে। শ্রাবণ মাসের পূর্ণিমার সঙ্গে অবশ্য এ রাখি বন্ধনের যোগ প্রায় নেই। যা আছে তা ভ্রাতৃত্বের এবং সম্প্রীতির।