কলকাতা: রামনবমীর (Ramnavami) মিছিলে (procession) একাধিক জায়গায় অস্ত্রের (arms) দাপাদাপি। তৃণমূল (TMC) ও বিজেপি (BJP), দুই দলের শোভাযাত্রাতেই অস্ত্র হাতে দেখা গেল নেতা-কর্মীদের। এদিকে রামনবমী পালন নিয়ে তরজায় জড়িয়েছে দুই যুযুধান শিবির।


রামনবমীর মিছিলে অস্ত্রের ঝনঝন শব্দ


করোনা আবহে ২ বছর বন্ধ ছিল রামনবমীর শোভাযাত্রা। এবছর ফের তা শুরু হতেই, ধর্মীয় মিছিলে দেখা গেল অস্ত্রের আস্ফালন। বিজেপি হোক কী তৃণমূল, যুযুধান দুই দলের মিছিলেই কয়েক জায়গায় শোনা গেল অস্ত্রের ঝনঝনানি।


দুর্গাপুরে রামনবমীর মিছিলে লাঠি হাতে দেখা যায় দিলীপ ঘোষকে। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষের কথায়, 'তৃণমূল সারা রাজ্যে খুনের রাজনীতি করে, ওরা আবার রামনবমী পালন করবে কী!' 


অন্যদিকে তৃণমূল বিধায়ক দেবাশিস কুমার বলেন, 'বিজেপি বছরে একবার 'রামনবমী' করে। আর আমরা সারা বছর সব পুজোর সঙ্গে আছি, জনসংযোগ করছি।'


ভাটপাড়ায় একই মিছিলে তৃণমূল ও বিজেপি


ভাটপাড়ায় এবার একই মিছিলে অস্ত্র হাতে দেখা গেল তৃণমূল ও বিজেপি নেতাকর্মীদের। মিছিলের প্রথমে ছিলেন তৃণমূল নেতা প্রিয়াঙ্কু পাণ্ডে। কিছুটা পিছনে অস্ত্র হাতে মিছিলে হাঁটলেন ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং।


তৃণমূল নেতার মুখেও শোনা গেল জয় শ্রীরাম ধ্বনি। ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিংহের কথায়, 'রামনবমীতে অবশ্যই হাতিয়ার নেব।' ভাটপাড়ার তৃণমূল নেতা প্রিয়াঙ্কু পাণ্ডে বলছেন, 'যাতে বিপদ না ঘটে তাই অস্ত্র নিতে বারণ করা হয়েছে।'


ভাটপাড়ায় এদিন ব্যারাকপুরের পুলিশ কমিশনার মনোজ বর্মার সামনেই চলল অস্ত্র হাতে মিছিল। ভাটপাড়ার এই মিছিলেই অস্ত্র হাতে দেখা যায় শিশুদেরও। শিশুদের হাতে কী করে অস্ত্র এল, তা নিয়ে দানা বেঁধেছে বিতর্ক।


আরও পড়ুন: Medinipur Municipality : এখনও পুর পারিষদদের নাম ঘোষণা হয়নি মেদিনীপুর পুরসভায়, 'অন্তর্দ্বন্দ্ব'-তোপ বিরোধীদের


এছাড়াও একাধিক এলাকায় অস্ত্রের দাপাদাপি


কামারহাটিতে পুলিশ নয়, বিজেপির রামনবমীর মিছিল আটকালেন ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর বিমল সাহা। এরপরই দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয়ে যায় বচসা।


অস্ত্রের দাপাদাপি দেখা যায় খড়গপুরেও। রবিবার রামনবমীর অনুষ্ঠানে অস্ত্র হাতে তুলে নিতে দেখা যায় স্থানীয় বিজেপি বিধায়ক হিরণকে। বিজেপি বিধায়কের কথায়, 'এই অস্ত্র আক্রমণের জন্য নয়, আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য।'


মালদার চাঁচল ও হরিশ্চন্দ্রপুরেও দেখা গেল একই ছবি। একদিকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিছিলে দেখা যায় অস্ত্রের দাপাদাপি। একইভাবে তৃণমূলের রামনবমীর মিছিলেও অস্ত্র হাতে দেখা যায় এক দলীয় কর্মীকে। 


শিলিগুড়িতে রামনবমীর মিছিল থেকে আবার রাজ্যে খুব শীঘ্রই রাম রাজত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে বলে দাবি করলেন দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্ত। তিনি বলেন, 'খুব শীঘ্রই রাজ্যে রামরাজ্য প্রতিষ্ঠিত হবে। আর কিছুদিন পর তৃণমূল থাকবে না। ওদের দিন শেষ।' পাল্টা তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি গৌতম দেব বলেন, 'ও রাজনৈতিকভাবে মূর্খ, ভারতের সংবিধান পড়েনি, যার জন্য এমন মন্তব্য।'


রামনবমী উপলক্ষ্যে মুরলীধর সেন লেন থেকে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ের রাম মন্দির পর্যন্ত শোভাযাত্রা করল RSS-এর শ্রমিক সংগঠন ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘ। গড়িয়া থেকে যাদবপুরের ৮বি বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত রামনবমীর মিছিলে ছিলেন রাহুল সিন্হা। এখানেই মিছিলে একটি বাইকে দেখা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ও তৃণমূলের প্রতীক। এই বিষয়ে বিজেপি কর্মী বিধান রায়ের প্রতিক্রিয়া তিনি জানতেন না। খেয়াল করেননি এমন জিনিস। 


গেরুয়া শিবিরের পাশাপাশি, দিনটিকে পালন করল তৃণমূলও। এদিন যাদবপুরের পূর্বাচলে শক্তি সঙ্ঘে বাসন্তী পুজো উপলক্ষ্যে ঢাক বাজালেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও তৃণমূল বিধায়ক দেবাশিস কুমার।


আরও পড়ুন: North 24 Paraganas: জুয়ার ঠেকের প্রতিবাদ করায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রতিবাদীকে আক্রমণ বারাসতে


অনুব্রত গড়েও পালিত হল রামনবমীর অনুষ্ঠান। বোলপুরে বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের শারীরিক সুস্থতা কামনা করে পুজো দেয় ঘাসফুল শিবির।