কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : এসএসসি (SSC) নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে এবার ফিরহাদ হাকিমকে (Firhad Hakim) পাল্টা জবাব দিলেন কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। শনিবার পরিবহণমন্ত্রী মন্তব্য করেছিলেন, কুণাল ঘোষ মন্ত্রিসভার কেউ নন। যার প্রেক্ষিতে আজ তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, তিনি যে মন্ত্রী নন, তা মনে করাতে হবে না।


SSC-র নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে তৃণমূলের অন্দরের অস্বস্তি থামার কোনও লক্ষ্মণই নেই। রবিবার মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের মন্তব্যের জবাব দিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ।


SSC-র শিক্ষক ও অশিক্ষক পদে নিয়োগে ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায়, আদালতের নির্দেশে একাধিক মামলার তদন্ত শুরু করেছে CBI। কিন্তু কোন শিক্ষামন্ত্রীর আমলে এই দুর্নীতি হয়েছে? এ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শুক্রবার প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের কোর্টে বল ঠেলেন কুণাল ঘোষ। বলেন, যে ধরনের কেলেঙ্কারির অভিযোগ আসছে ওগুলো ব্রাত্য বসুর জমানায় হয়নি। পার্থ চট্টোপাধ্যায় তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ছিলেন। তিনিই দলের মহাসচিব। যাবতীয় ব্যাখ্যা তিনিই দিতে পারবেন।


কুণাল ঘোষের ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য ঘিরে বিতর্কের আবহে মন্ত্রিসভার সতীর্থ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়ান ফিরহাদ হাকিম। বলেন, পার্থদার ক্যাবিনেটে আমিও মন্ত্রী। যদি কোনও জায়গায় হয়, তাহলে যতটা দায়িত্ব পার্থদার, ততটা আমারও। এটা আমাদের যৌথ পরিবার। কারও কাছে কারও দায় ঠেলতে পারি না।


এই প্রেক্ষাপটে রবিবার ফিরহাদ হাকিমকে জবাব দিলেন কুণাল ঘোষ। বলেন, আমাকে যেন কেউ মনে করিয়ে না দেন যে আমি মন্ত্রী নই। আমার কোনও হ্যাংলামি নেই। মন্ত্রী হতে না পারলে যাঁদের জীবন অসম্পূর্ণ, এসব ক্রাইটেরিয়া তাঁদের। মন্ত্রিত্ব জীবনের ক্রাইটেরিয়া হতে পারে না। 


শনিবার বাঁশদ্রোণীতে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে যান কুণাল ঘোষ। কিন্তু তাঁর সঙ্গে দেখা হয়নি কুণালের। তিনি জানান, পার্থদাকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আগে থেকে চিনি। মাঝেমধ্যে ওঁর বাড়িতে যাই।


প্রশ্ন ওঠে, তাহলে কি ফিরহাদ হাকিম পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়ানোর পরই সুর নরম করলেন কুণাল ঘোষ ? এ প্রসঙ্গে দলের মহাসচিবের বাড়িতে যাওয়া নিয়ে ফের এদিন ব্যাখ্যা দেন তিনি। বলেন, পার্থদা আমায় ফোন করেছিলেন। সময় ঠিক হয়ে গেছিল বলে উত্তর কলকাতা থেকে দক্ষিণ কলকাতায় গিয়েছিলাম। নইলে খেয়েদেয়ে কাজ পড়েনি অত দূরে যাওয়ার।


রাজ্য ক্যাবেনেটের সতীর্থ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়ে বার্তা দিয়েছিলেন ফিরহাদ হাকিম। এদিন কারও নাম না করেও, কটাক্ষের সুর শোনা যায় কুণাল ঘোষের গলায়। তিনি বলেন, যেদিন আমি দেখব অতিথি শিল্পী বা ভাড়াটে সৈন্য দিয়ে আমাকে ডিফেন্ড করাতে হচ্ছে তার থেকে থুতু ফেলে ডুবে মরা ভাল।


সব মিলিয়ে  SSC’র নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে তৃণমূলের অন্দরে বিতর্কের জল আরও গড়াল।