বিজেন্দ্র সিংহ, ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা ও নয়াদিল্লি: রাজ্যে রামনবমীতে পরপর অশান্তির ঘটনায় এনআইএ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। রাজ্য সরকারের আবেদনের পর, সেই নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিল না সুপ্রিম কোর্ট। ফের সু্প্রিম কোর্টে ধাক্কা খেতে হল রাজ্য সরকারকে। সুপ্রিম কোর্টে ধোপে টিকল না রাজ্য সরকারের আর্জি।
রাজ্যে রামনবমীতে অশান্তির ঘটনায় হাইকোর্টের এনআইএ তদন্তের নির্দেশে স্থগিতাদেশ দিল না সর্বোচ্চ আদালত। এনআইএ তদন্তের নির্দেশে স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল রাজ্য সরকার। এদিন, শুনানি চলাকালীন এনআইএ-র আইনজীবী তুষার মেহতা বলেন, 'এনআইএ এফআইআর দায়ের করেছে। রাজ্য পুলিশের কাছ থেকে সমস্ত কেসের নথি চাওয়া হয়েছে। রাজ্য পুলিশ সেই নথি দিচ্ছে না। বলা হচ্ছে, হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া হয়েছে।'
রাজ্যের প্রস্তাব:
রাজ্য সরকারের আইনজীবী এদিন প্রস্তাব দেন, ৬টি এফআইআরের মধ্যে শুধুমাত্র চন্দননগর থানার এফআইআরে তদন্ত করুক এনআইএ। বাকি ৫টি এফআইআরে তদন্ত করবে রাজ্য পুলিশ। রাজ্যের আইনজীবীর এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন শুভেন্দু অধিকারীর আইনজীবী। তিনি বলেন, 'হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ইতিমধ্যেই তদন্ত করতে শুরু করেছে এনআইএ। আদালত স্থগিতাদেশ দিলে, আদালতের অবকাশ শেষ হওয়ার পর শুনানি পর্যন্ত গোটা বিষয়টি অর্থহীন হয়ে পড়বে।'
রাম নবমীর মিছিলকে কেন্দ্র করে হাওড়ার শিবপুর হুগলির রিষড়া এবং উত্তর দিনাজপুরের ডালখোলায় দফায় দফায় অশান্তি হয়। রামনবমীর মিছিল ঘিরে অশান্তির ঘটনায় হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এপ্রিলের ২৭ তারিখ, প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, হাওড়া, হুগলি, ডালখোলায় অশান্তির ঘটনায় তদন্ত করবে NIA। তার জন্য দু' সপ্তাহের মধ্যে NIA-কে সমস্ত নথি হস্তান্তর করতে হবে রাজ্যকে। তার আগে ১০ এপ্রিল এই সংক্রান্ত মামলায়, প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে বলে, পুলিশের রিপোর্টেই স্পষ্ট যে ব্যাপক অশান্তি হয়েছে। বাইরে থেকে কে বা কারা এই গন্ডগোলে উস্কানি দিয়েছে, সেটা বের করা রাজ্য পুলিশের পক্ষে সম্ভব নয়। কে বা কারা এর ফলে উপকৃত হয়েছে, সেটা জানাও রাজ্য সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। তার জন্য কেন্দ্রীয় সংস্থার প্রয়োজন।
হাইকোর্টে NIA-র তরফে জানানো হয়- যে তারা তদন্তে প্রস্তুত। এরপর, এনআইএ তদন্তের নির্দেশে স্থগিতাদেশ চেয়ে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে গেলেও লাভ হল না কিছুই। শুক্রবার সময়ের অভাবে এই মামলার শুনানি স্থগিত হয়ে যায়। গ্রীষ্মকালীন অবকাশ শেষ হওয়ার পর এই মামলার ফের শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টে।
আরও পড়ুন: রাতভর ঘুম হয়নি! সকালে কাজে মন কীভাবে? রইল সহজ টিপস