কলকাতা: রাতভর এপাশ-ওপাশ, ভাল করে ঘুমই হয়নি। হলেও বারবার ভেঙেছে ঘুম। কোনওদিন এমন হলে, পরদিন কাজের জায়গায় বা পড়াশোনার কেমন প্রভাব পড়ে তা অনেকেই অভিজ্ঞতায় রয়েছে। মনসংযোগ হয় না, অসম্ভব ক্লান্তি আসে শুরুতেই। বারবার চা-কফিতেও যায় না সেই ক্লান্তি। একই সমস্যা হয় রাত জেগে সিনেমা-সিরিজ দেখলেও। অর্থাৎ পর্যাপ্ত ঘুম না হলে কাজ করার কোনও এনার্জিই থাকে না শরীরে। 


টানা ঠিকমতো ঘুম না হলে শরীরে একাধিক প্রভাব পড়তে বাধ্য। বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন, শুধু ক্রনিক ঘুমের সমস্যাই নয়, একদিনও যদি ঠিকমতো ঘুম না হয় তাহলেও প্রভাব পড়বে শরীরে। শারীরবৃত্তীয় কাজ এবং মানসিক স্থিতি ঠিক থাকার জন্য ঘুম অবশ্য প্রয়োজনীয়।


ঘুমের মানের উপরেই কর্মক্ষেত্রে একজনের কাজের দক্ষতা, কাজের মান এবং ব্যবহার নির্ভর করে। মস্তিষ্ক সংক্রান্ত কাজের ক্ষেত্রে বিশেষ করে দেখা গিয়েছে, চিন্তাশক্তি, সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা কমে আসে যদি ঠিকমতো ঘুম না হয়। ঠিকমতো পরিকল্পনা করে সেই অনুযায়ী কাজের ক্ষেত্রেও সমস্যা তৈরি হয়। ইচ্ছাশক্তি, কাজ করার জন্য ইতিবাচক মানসিকতা, মনসংযোগ করার ক্ষমতা- এগুলিও নির্ভর করে রাতভর ঘুমের মানের উপর। 


সবসময় ঘুমের মান ভাল হয় না। নিরুপদ্রব ঘুম আমাদের হাতেও থাকে না সবসময়। তাই ঠিকমতো ঘুম না হলেও পরদিন ঠিকমতো কাজ করে যেতেই হবে। কীভাবে করা হবে সেই কাজ?


কাজ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সতর্ক:
যদি সম্ভব হয় তাহলে কাজ বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। জোর করে কিছু করার চেষ্টা না করাই ভাল। প্রচুর লোকজনের সঙ্গে কথা বলতে হবে এমন কাজ এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। নিখুঁত মনসংযোগ চাই এমন কাজও না করাই ভাল। নিতান্তই প্রয়োজন হলে দিনের শুরুতেই এই কাজ করে নেওয়া ভাল।


নিজের উপর চাপ নয়:
জোর করে কিছু করতে গেলে হিতে বিপরীত হয়। তাই ক্লান্ত থাকলে নিজের উপর অতিরিক্ত চাপ দেবেন না। যতটা পারবেন ততটাই কাজ করবেন। ক্লান্তি বা ঘুম কাটাতে ছোট ছোট বিরতি নিন। প্রয়োজনে কয়েক কাজ বেশি চা বা কফি খেতে পারেন।


নোট তৈরি:
যদি একাধিক ছোট ছোট কাজ করতে হয় আপনাকে। ক্লান্তি থাকলে ভুলে যাওয় সম্ভব। সেই সমস্যা কাটাতে একটি ছোট নোট তৈরি করুন। তাতে লিখে রাখতে পারেন কী কী করতে হবে। পরে সেই নোট দেখিয়ে মিলিয়ে নেবেন আপনার কাজ।


খাওয়া-দাওয়ায় নজর:
একেই ঘুম হয়নি, শরীর খুবই ক্লান্ত। তাই এদিন ইচ্ছে করলেও অতিরিক্ত মশলাদার খাবার খাবেন না। তাতে হজমের সমস্যা তৈরি হবে। তার বদলে যতটা সম্ভব সহজপাচ্য খাবার খান। অফিসে থাকলে দুপুরে ভারী খাবার এড়িয়ে চলুন। নাহলে আরও বেশি ঘুম পাবে।


তবে এই কাজগুলি সবসময়ই সাময়িক। সুস্থ হওয়ার একমাত্র ওষুধ পর্যাপ্ত ঘুম। প্রয়োজনে রাত জাগা বন্ধ করুন। অফিসে নাইট শিফট থাকলে সম্ভব হলে কয়েকদিনের জন্য় শিফট বদলের আবেদন করুন। সমস্যার বাড়াবাড়ি হলে সময় নষ্ট না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।


আরও পড়ুন: ডেঙ্গি পরবর্তী পর্যায়ে দ্রুত সুস্থ হওয়ার জন্য মেনুতে কোন কোন খাবার অবশ্যই রাখবেন?