আবীর দত্ত, রামপুরহাট: মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশের পরেই গ্রেফতার রামপুরহাট (Rampurhat) ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল (TMC) সভাপতি আনারুল হোসেন। রামপুরহাট হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত আনারুল। তারাপীঠের (Tarapith) একটি হোটেল থেকে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি গ্রেফতার।
বীরভূমের ঘটনায় তৎপর মুখ্যমন্ত্রী
আজ বগটুই গ্রামে গিয়ে অগ্নিকাণ্ডে মৃতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই পুলিশকে কড়া পদক্ষেপের নির্দেশ দেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়া মাত্রই তৃণমূলের অভিযুক্ত ব্লক সভাপতির বাড়িতে পৌঁছয় বিশাল পুলিশবাহিনী। ঘিরে ফেরা হয় তাঁর বিলাসবহুল বাড়ি। যদিও পুলিশ যাওয়ার সময় বাড়িতে ছিলেন না আনারুল হোসেন। প্রায় এক ঘণ্টা তল্লাশি চালানোর পর ফিরে যান তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, এরপরই অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার মোবাইল ফোনের টাওয়ার লোকেশনের দিকে নজর রাখা হচ্ছিল। সেই সূত্র ধরেই ৮ কিলোমিটার দূরে তারাপীঠ থেকে নাটকীয়ভাবে গ্রেফতার করা হয় আনারুলকে।
আনারুলের অনুগামীদের বিক্ষোভ
এদিকে রামপুরহাটে তৃণমূলের ব্লক সভাপতির বাড়িতে পুলিশ যেতেই, বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন আনারুলের অনুগামীরা। চাঞ্চল্যকর অভিযোগ তোলেন তাঁদেরই একজন। আনারুলের এই অনুগামীর দাবি, ‘আনারুলকে ফাঁসিয়ে দিয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে।’
বগটুইয়ে অগ্নিকাণ্ডে মৃত ৮
সোমবার বড়শাল পঞ্চায়েতের উপ প্রধান ভাদু শেখ খুনের পরই একের পর এক বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। তাতে অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় আটজনের। এই ঘটনায় প্রথম থেকেই রামপুরহাট ১ নম্বর ব্লকের তৃণমূল সভাপতি আনারুল হোসেনের দিকে আঙুল তুলেছে অগ্নিকাণ্ডে মৃতদের পরিবার। এরপরই আজর বগটুই গ্রামে মৃতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলার পর তৃণমূলের ব্লক সভাপতিকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন মমতা বন্দ্যোপধ্যয়। তিনি বলেন, ‘আনারুল আমাদের ব্লক প্রেসিডেন্ট। তাঁকে কমপ্লেন করেছিল ওরা। কিন্তু সময়মতো পুলিশকে পাঠায়নি। ওকে অ্যারেস্ট করা হবে। তার কারণ হচ্ছে, অ্যারেস্ট করে কেন পুলিশ পাঠায়নি সময়মতো? পাঠালে ঘটনাটি নাও ঘটতে পারত।’
অভিযোগ অস্বীকার আনারুলের
যদিও ঘটনার সঙ্গে তাঁর কোনও হাত নেই বলে গ্রেফতারের আগেই দাবি করেছিলেন আনারুল। তিনি দাবি করেন, ‘দুষ্কৃতীরা খুন করেছে, দুষ্কৃতীরাই আগুন লাগিয়েছে। গ্রাম্য বিবাদ ছিল। আমি মানুষকে নিয়ে রাজনীতি করি।’
গ্রেফতার আরও একজন
এদিন মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছনোর আগেই বাড়িতে আগুন লাগিয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আরও একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃতের নাম শেখ মফিজুল। এরপরই গ্রেফতার করা হয় আনারুল হোসেনকে। সবমিলিয়ে ধৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২২।