সন্দীপ সরকার, কলকাতা: ১০ মাস পর শুরু হল চিকিৎসা। ১৬ কোটি টাকার জিনথেরাপি ইনজেকশন পেল রানাঘাটের একরত্তি। ক্রাউড ফান্ডিংয়ে উঠেছে ৯ কোটি টাকা। সেই টাকাতেই ইনজেকশন দিয়েছে ক্যালিফোর্নিয়া ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা। মুখে হাসি ফুটেছে দম্পতির।
লড়াইটা শুরু হয়েছিল ১০ মাস আগে। রানাঘাটের এক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের দম্পতির লড়াই। সন্তানের জীবন বাঁচানোর সংগ্রাম। জন্মের ৬ মাস পর থেকেই বিরল রোগে আক্রান্তে ফুটফুটে সন্তান। অসুখের নাম এসএমএ (SMA) বা স্পাইনাল মাসকুলার অ্যাট্রোফি। আর এই রোগের একমাত্র ওষুধ জিনথেরাপি ইনজেকশন। যার দাম প্রায় ১৬ কোটি টাকা।
রোগের চিকিৎসা করাতে গিয়ে এই কথা শুনে মাথায় বাজ ভেঙে পড়েছিল সেদিন। কিন্তু হাল ছাড়েননি তাঁরা। শুরু হয় এক কঠিন লড়াই। সেই লড়াইয়ে একে একে সামিল হন অনেকেই। ক্রাউড ফান্ডিংয়ে ১০ মাসে উঠেছে ৯ কোটি টাকা। সোশাল মিডিয়া থেকে ইউটিউব, ক্রাউড ফান্ডিং- বহু মানুষ যোগ দিয়েছিল শিশুর চিকিৎসায় যতটা সম্ভব সাহায্য করা যায়। সেখানেই এল জয়। সকলের সাহায্য, মা-বাবার জেদ আর চিকিৎসকদের সাহায্যের হাত- অবশেষে শিশুটি পেল জিনথেরাপি ইনজেকশন।
সদূর ক্যালিফোর্নিয়া থেকে এসেছে জিন থেরাপি ইনজেকশন। সেই টাকাতেই জিনথেরাপি ইনজেকশন দিয়েছে ক্যালিফোর্নিয়া ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা। জিএসটি মুকুব করেছে রাজ্য সরকারও।
শিশুটির বাবার কথায়, 'শান্তনু ঠাকুর এবং সোমা ঠাকুরের সাহায্যে চ্যারিটেবেল ট্রাস্টের মাধ্যমে ৬০ লক্ষ টাকা ফান্ডিং পেয়েছি। শুভেন্দু অধিকারীও ১০ লক্ষ টাকা ডোনেশন করেছিল। আমাদের এলাকার পৌরসভা এমনকী বাইরের অনেক পৌরসভা থেকে সাহায্য করা হয়েছিল।'
সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে এই ১০ মাসে এগিয়ে এসেছেন সাড়ে ৫ লক্ষ মানুষ। সর্বনিম্ন একটাকা থেকে সর্বোচ্চ ৬০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত এসেছে অনুদান। মঙ্গলবার ক্যালিফোর্নিয়া থেকে বিশেষভাবে প্যাক করা বাক্সে ওষুধ এসেছে কলকাতায়। বুধবার পিয়ারলেস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৬ মাসের শিশুকে দেওয়া হয়েছে ইনজেকশন।
রানা ঘাটের একরত্তির পরিবারের মুখে হাসি ফুটেছে। সুস্থতার অপেক্ষায় রয়েছে পরিবার। রাজ্যের আরও ২ শিশু এই জটিল অসুখের সঙ্গে লড়াই করছে। রানাঘাটের লড়াই শক্তি জোগাচ্ছে তাঁদেরও পরিবারেও।