কলকাতা: একই দিনে দুই জেলায় একই সংস্থার শোরুমে পিঠোপিঠি সময়ে ভয়াবহ ডাকাতি। ভর দুপুরে সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের শোরুমে ঢুকে অবাধ দুষ্কৃতী-তাণ্ডব। কোথাও প্রকাশ্য রাস্তায় পুলিশের সঙ্গে দুষ্কৃতীদের শ্যুটআউট। কোথাও আবার ডাকাতি করে বাইকে চড়ে বিনা বাধায় চম্পট। মঙ্গলবারের জোড়া ঘটনা সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রানাঘাটে ভয়াবহ ডাকাতি পর এদিন মধ্যপ্রদেশ থেকে এল পুলিশের টিম। 

মঙ্গলবার দুপুর পৌনে দুটো নাগাদ খাস পুরুলিয়া শহরে, সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়মন্ডসের শোরুমে ডাকাতদল চড়াও হয়। প্রায় সোয়া এক ঘণ্টার মধ্যে একই ঘটনা ঘটে রানাঘাটে। ১২ নম্বর ওয়ার্ডের চাবিগেট এলাকায় সেনকোর শোরুমে হানা দেয় ডাকাতের দল। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে, জোড়া ডাকাতির নেপথ্যে কি রয়েছে একই গ্যাং? গত ২৪ মে ব্যারাকপুরের আনন্দপুরীতে সোনার দোকানে ডাকাতি ও খুনের ঘটনায় উঠে এসেছিল বিহার-গ্যাংয়ের হাত। রানাঘাটে সেনকোর শোরুমে ডাকাতির নেপথ্যেও কি সেই বিহার গ্যাং?


মধ্যপ্রদেশ থেকে এল পুলিশের টিম: পুলিশ সূত্রে খবর, রানাঘাটকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড বিহারের বৈশালীর বাসিন্দা। আর এই বিহার গ্যাংয়ের নেটওয়ার্ক কত গভীরে ছড়িয়ে, পুলিশের ফুটওয়ার্কেই তা স্পষ্ট। রানাঘাটে ডাকাতির ধরন দেখে মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুর থেকে পুলিশের তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এদিন রাজ্যে আসে। রানাঘাট থানায় প্রায় ২৫ মিনিট ছিলেন তাঁরা। পুলিশ সূত্রে খবর, এক মাস আগে জব্বলপুরে একটি বাড়িতে প্রায় একই কায়দায় ডাকাতি হয়। সেই গ্যাংই রানাঘাটে লুঠপাট চালিয়েছে কিনা , তা খতিয়ে দেখতেই রানাঘাটে আসে মধ্যপ্রদেশ পুলিশের টিম। পাশাপাশি এদিন পুরুলিয়া জেলা পুলিশের দুই প্রতিনিধি রানাঘাট থানায় আসে। ধৃত ডাকাতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তারা।


পুলিশ সূত্রে খবর, রানাঘাটে ডাকাতির ঘটনায় ধৃতরা প্রত্যেকেই বিহারের বাসিন্দা। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে কল্যাণীতে ভাড়া বাড়ির সন্ধান মিলেছে। মাসদেড়েক আগে কল্যাণীর B ব্লকে একটি বাড়িতে দুটি ঘর ভাড়া নেয় দুষ্কৃতীরা। পুলিশ সূত্রে দাবি, বাড়ির মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করে তাঁরা জানতে পেরেছেন, রেলের অস্থায়ী কর্মী পরিচয় দিয়ে ঘর ভাড়া নিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। কখনও ৩ জন, কখনও ৫ জন থাকত সেই ভাড়া বাড়িতে। কল্যাণীর বাড়ির মালিককে এদিন রানাঘাট থানায় টানা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুরুলিয়ায় সেনকোর শোরুমে ডাকাতির সময়, সিসি ক্যামেরার হার্ড ডিস্ক ভেঙে দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। পাশেই নির্মীয়মাণ প্রকল্পে লাগানো সিসি ক্যামেরায় তাদের চম্পট দেওয়ার ছবি ধরা পড়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, দুটি মোটরসাইকেলে ৬ জন দুষ্কৃতী এসেছিল। ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, একটি মোটরসাইকেলে ৩ জন রয়েছে। মাঝের জনের হাতে লাল রঙের ব্যাগ, একদম পিছনের জনের মাথা হেলমেটে ঢাকা। শোরুমের মালিকের দাবি, রেকি করেই ৮ কোটি টাকার গয়না লুঠ করেছে ডাকাতদল। রানাঘাটে ডাকাতির ঘটনায় মঙ্গলবারই ৫ দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শ্যুটআউটের সময় পুলিশের গুলিতে জখম হয় দুজন। কিন্তু পুরুলিয়ার ঘটনায় ৮ কোটি টাকার গয়না লুঠের অভিযোগ উঠলেও, অপরাধীরা এখনও অধরা। ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখে দ্রুত গ্রেফতারির আশ্বাস দিয়েছেন আইজি বাঁকুড়া।


আরও পড়ুন: Kolkata News: ফুলবাগানের গুরুদাস কলেজে র‍্যাগিংয়ের অভিযোগ, দুই প্রাক্তনীর বিরুদ্ধে FIR পুলিশের