সন্দীপ সরকার, সন্দেশখালি : তৃণমূল নেতা ( TMC ) শেখ শাহজাহনের ( TMC leader SK Shahjahan) বাড়িতে ইডির অভিযান ঘিরে রণক্ষেত্রে চেহারা নেয় উত্তর ২৪ পরগনার সন্দেশখালি। আর সেখানেই পেশাগত দায়িত্বপালনে গিয়ে ভয়ঙ্কর রকম আহত হন এবিপি আনন্দর প্রতিনিধিরা। কর্তব্যরত চিত্র সাংবাদিককে কিছু বুঝতে না দিয়েই শুরু হয়ে যায় বেধড়ক মার। ঝাঁপিয়ে পড়ে মারমুখী জনতা।
রেশন দুর্নীতির তদন্তে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ কর্মাধ্যক্ষের শেখ শাহজাহানের বাড়িতে হানা দেয় কেন্দ্রীয় এজেন্সি। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তিনি। আর সেখানে ইডি-কে রুখতে ভয়ঙ্কর রোষে ঝাঁপিয়ে পড়ে তাঁর অনুগামীরা। প্রায় প্রাণভয়ে পালাতে শুরু করেন ইডি অফিসাররা। আর তখনই যাবতীয় রাগ উগরে দেওয়া হয় সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের উপর।
তৃণমূল নেতার বাড়িতে গিয়ে বারবার ডাকাডাকি সত্ত্বে সাড়া মেলেনি কারও। ১ ঘণ্টা অপেক্ষার পর কেন্দ্রীয় বাহিনী তালা ভাঙার চেষ্টা করতেই তৈরি হয় বিপত্তি। শয়ে শয়ে শাহজাহানের অনুগামী বাড়ির সামনে জড়ো হয়। বিজেপির বিরুদ্ধে চক্রান্তের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। তারপরই খবর করতে গেলে এবিপি আনন্দর চিত্র সাংবাদিক সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়কে বেধড়ক মারধর করা হয়, ভাঙচুর করা হয় ক্যামেরা। কেড়ে নেওয়া হয় লাইভ সম্প্রচারের সরঞ্জাম। ছিনতাই করে নেওয়া হয় এবিপি আনন্দর প্রতিনিধি সন্দীপ সরকারের মোবাইল ফোন। জানতে চাওয়া হয় ফোনের পাসওয়ার্ড। তা জানাতে না চাইলে প্রাণে মারার হুমকিও দেওয়া হয়। তারপর পাসওয়ার্ড বলতে হয়। এরপর তাঁদের মারতে মারতে গ্রামের ভিতরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। কোনওরকমে প্রাণ হাতে নিয়ে দৌড় দিতে হয় সাংবাদিকদের। গাড়ির চালককেও মারধর করা হয়। ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয় এবিপি আনন্দর গাড়ি। আক্রান্ত হয় অন্যান্য সংবাদমাধ্যমও। অন্য একটি সংবাদমাধ্যমের গাড়ির ড্রাইভারকে বেধড়ক মেরে মুখ ফাটিয়ে দেওয়া হয়। তাঁকে নিয়ে যেতে হয় হাসপাতালে।
BJP র প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনার কড়া নিন্দা করে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন শুভেন্দু অধিকারী। গোটা বিষয়টিকে টেলিফোনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানিয়েছেন তিনি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক জানিয়েছেন, 'সন্দেশখালির এই ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। কেন্দ্রীয় সংস্থাকে সুরক্ষা দেওযার দায়িত্ব রাজ্যের। এই আক্রমণ দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোর উপর আক্রমণ'
তৃণমূলের প্রতিক্রিয়া
অন্যদিকে, তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, 'ঘটনা দুঃখজনক, তবে টানা তৃণমূলকে যেভাবে নিশানা করা হচ্ছে, তা গোটা ঘটনায় প্ররোচনা হিসেবে কাজ করেছে।'
আরও পড়ুন :
নতুন বছরের শুরুতেই ইডির অভিযান রাজ্যে, এবার গন্তব্য কোন কোন নেতার বাড়ি?