প্রকাশ সিনহা, কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: খাদ্য দফতর ছেড়ে দেওয়ার পর জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriya Mallick) বন দফতরের দায়িত্বে আসার পরেও কি রেশন দুর্নীতি একই ভাবে চলছিল? এমন প্রশ্ন বারবার উঠছিল। আর সেই প্রশ্নের উত্তর পেতেই এদিন বন দফতরে গিয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের তদন্তকারীরা। ইডি সূত্রের খবর, তারপরেই নাকি ইডির সামনে এসেছে চমকে দেওয়ার মতো তথ্য।

  


ঠিক কতদূর ছড়িয়ে রয়েছে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের 'দুর্নীতি'র জাল? মন্ত্রী নিজেই কি নেমেছিলেন ধান ব্যবসায়? খোদ মন্ত্রী চেম্বারেই 'খাজানা'র খোঁজ পেল ইডি? ইডি সূত্রে সামনে এল অবাক করে দেওয়ার মতো তথ্য। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে খবর, খাদ্য দফতর থেকে সরে যাওয়ার পরে, বন দফতরে বসেই খাদ্য দফতরে দুর্নীতি-চক্র চালিয়েছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। বাকিবুর বা অন্য কারও মাধ্যমে নয়, নিজেই নাকি ধান ব্যবসা শুরু করেছিলেন তিনি। বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সল্টলেকের দফতরে হানা দেওয়ার পর, এমনটাই মনে করছে ইডি ED। রেশন দুর্নীতি মামলায় মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক (Jyotipriya Mallick) এখন জেলে, তখনই তাঁর দফতরে হানা দিয়েছে ইডি (ED)। রেশন বণ্টন দুর্নীতি (Ration Scam) মামলায় এই প্রথম কোনও মন্ত্রীর দফতরে গিয়েছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি (Central Agency)। এদিন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের (Central Force) নিয়ে সল্টলেকের অরণ্য ভবনে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের অফিসে যান ইডি আধিকারিকরা (ED Officer)। খাদ্য দফতরের পর বন দফতরের মন্ত্রী হয়েছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। বন দফতরের অফিসে (Forest Department Office) খাদ্য দফতরের কোনও নথি পাওয়া যায় কি না, তার খোঁজেই এদিন হানা দিয়েছিল ইডি (ED)। 


কী কী পাওয়া গিয়েছে?
কেন্দ্রীয় এজেন্সির আরও দাবি, খোদ মন্ত্রীর চেম্বারেই মিলেছে খাজানা। অরণ্য ভবনের আটতলায় মন্ত্রীর অফিসে মিলেছে ধান ব্যবসার রসিদ। সেখান থেকেই পাওয়া গেছে জীবনবিমার নথিও। মন্ত্রীর স্ত্রী, মেয়ে ও নাতির নামে ১০ কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিটের নথি পাওয়া গেছে। এছাড়াও মিলেছে ৮০০টি ব্ল্যাঙ্ক ব্যাকডেটেড স্ট্যাম্প পেপার। ED-র অনুমান, এই সব স্ট্যাম্প পেপারের সাহায্যে ব্যাকডেটে সম্পত্তি নথিভুক্ত করা হতো। ১০ কোটি টাকার FD, LIC ২টি বেনামি সম্পত্তি, এসবই রেশন দুর্নীতির টাকা বলে অনুমান করছে ED।


এই ঘটনায় প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুণাল ঘোষের দাবি, 'বিচারাধীন বিষয় মন্তব্য করব না। ওরা যা বলে সবসময় ঠিকই বলে তার কী মানে আছে।' এর প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে কটাক্ষের সুর রাজয বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের গলায়। তিনি বলেন, 'এত টাকা যে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে রাখতে হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই সরকারি দফতরটায় পর্যন্ত কালো টাকা লোকানোর ব্যবস্থা করেছে।'


আরও পড়ুন: চাকরি-আন্দোলনে রাস্তায় ১০০০ দিন, এবার? কী পরার্মশ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের?