সৌভিক মজুমদার, উজ্জ্বল মুখোপাধ্য়ায়, কলকাতা : নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) পিরামিডের মাথা কে? কার অঙ্গুলিহেলনে স্কুলে নিয়োগে ভুরি ভুরি দুর্নীতি হয়েছিল? নিয়োগ দুর্নীতির মাথার খোঁজ কি আদৌ মিলবে? বাংলা জুড়ে দীর্ঘদিন ধরে ঘুরছে এই প্রশ্ন। এই আবহেই এবার সিবিআইকে তীব্র ভর্ৎসনা করলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিন্হা। (Amrita Sinha) 


মঙ্গলবার, প্রাথমিক ও পুর নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় সিবিআইয়ের পেশ করা রিপোর্টে প্রবল ক্ষোভ প্রকাশ করে আদালত।এদিন দিন বিচারপতি সিন্হা প্রশ্ন করেন, টাকা কোথায় গেল? দুর্নীতির মাথায় কে?   


বিচারপতি আরও বলেন,  'আপনারা নিচে থেকে তদন্ত শুরু করে ওপরে উঠছেন। ওপর থেকে তদন্ত শুরু করতে কে বাধা দিচ্ছে আপনাদের? একই ধরনের সব রিপোর্ট দিচ্ছেন, পুরনো তথ্যে ভরা। নতুন অগ্রগতি কোথায়? আদৌ কি তদন্তে কোনও অগ্রগতি আছে? শুধুমাত্র পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় একটু হুড়োহুড়ো হল, তারপর আবার ঘুমিয়ে পড়লেন? এত বড় দুর্নীতি কারও একার মস্তিষ্কপ্রসূত হতে পারে না। মানিক ভট্টাচার্য তো একা এই দুর্নীতি করেননি। তিনি ছাড়াও আরও ব্যক্তি আছে। কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন? বেআইনিভাবে নিয়োগ পাওয়া বাকিদের তালিকাই বা কোথায়? কড়া ভাষায় প্রশ্ন করেন বিচারপতি অমৃতা সিন্হা।


ক্লাসরুমে বসে ছাত্র ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ গড়ার কথা ছিল যাদের, তারা রোদ-ঝড়-বৃষ্টিতে দিনের পর দিন রাস্তায় বসে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। আর অযোগ্যরা বহাল তবিয়তে তাঁদের জায়গায় সকুলে চাকরি করছেন। অবসরের আগে যোগ্যরা চাকরি পাবেন তো? এদিন খোদ বিচারপতিও আদালতে সে প্রশ্ন তোলেন। শেষ অবধি কি মাথা অবধি পৌঁছবে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এজেন্সিগুলি? সেটাই এখন কোটি টা কার প্রশ্ন।


অন্যদিকে এদিনই, কলকাতা হাইকোর্টে(Calcutta High Court)  কড়া ভর্ৎসনার মুখে পড়ে ED। নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের কাকুর সূত্র ধরে ২১ অগাস্ট লিপস্ অ্যান্ড বাউন্ডসের দুয়ারে পৌঁছে যায় ইডি। প্রায় ১৮ ঘণ্টা ধরে চলে তল্লাশি অভিযান। তারপরই ইডি প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানায়, তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বর্তমানে লিপস অ্যান্ড বাউন্ডস প্রাইভেট লিমিটেডের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (CEO) এবং ২০১২-র এপ্রিল থেকে ২০১৪-র জানুয়ারি পর্যন্ত এই কোম্পানির ডিরেক্টর ছিলেন। এই সংস্থাকে ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করা হয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটেই এবার আদালতে ভর্ৎসনার মুখে পড়ল ED! মঙ্গলবার, নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ED-র রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে যে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এখনও লিপস অ্যান্ড বাউন্ডসের CEO আছেন। তাঁর বিরুদ্ধে কী তদন্ত করেছেন? আদালতের ভর্ৎসনার মুখে পড়ে মঙ্গলবার ED জানায়, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ফের নোটিস পাঠানো হবে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে।