কলকাতা :  নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ( Recruitment Scam Case ) চাঞ্চল্যকর তথ্য। ২০২১ পর্যন্ত গোপাল দলপতির ( Gopal Dalapati ) ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দফায় দফায় টাকা পাঠিয়েছেন নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল ঘোষ ( Kuntal Ghosh )। গোপাল ওরফে আরমান গঙ্গোপাধ্যায়ের ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্ট খতিয়ে দেখে চাঞ্চল্যকর দাবি করেছে সিবিআই।


কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, ২০১৭-র ২৪ নভেম্বর, ৫০ হাজার, ২৫ নভেম্বর, আরও ৫০ হাজার, ২৭ নভেম্বর একলক্ষ টাকা গোপালের অ্যাকাউন্টে জমা করেছিলেন কুন্তল। এরপর ২০২১-এর ২৯ অক্টোবর, কুন্তল ৭০ হাজার টাকা পাঠান গোপালের অ্যাকাউন্টে। সিবিআইয়ের দাবি, এছাড়াও, গোপাল ওরফে আরমানের অ্যাকাউন্টে লক্ষ লক্ষ নগদ টাকা জমা পড়েছে।


২০১৭-য় গোপালের আরমান ট্রেডিংয়ের অ্যাকাউন্টে জমা দেওয়া হয় নগদ ২ লক্ষ টাকা। এরপর ২০২১-এ গোপালের দিল্লির কেজি মার্গের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে নগদ ৩ লক্ষ টাকা জমা পড়ে। কেন বারবার গোপালকে টাকা পাঠাতেন কুন্তল? কেনই বা গোপালের অ্যাকাউন্টে দফায় দফায় লক্ষ লক্ষ নগদ টাকা জমা পড়েছিল? এসবই এখন সিবিআইয়ের নজরে। 


নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় আচমকাই শিরোনামে উঠে এসেছে একটা নাম! গোপাল দলপতি, যিনি এই প্রথম গোয়েন্দাদের স্ক্য়ানারে এলেন, এমন নয়! আগেও চিটফান্ড মামলায় গ্রেফতার হয়ে জেল খেটেছেন গোপাল! এবার নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় পরপর গ্রেফতারির মধ্য়ে, নিজের নাম জড়ানোর পর তাঁর সুরবদল চোখে পড়ছে অনেকেরই! সপ্তাহ তিনেক আগে এই গোপাল দলপতির মুখেই প্রথমবার শোনা গেছিল কালীঘাটের কাকুর কথা। কিন্তু, গ্রেফতার হওয়া কুন্তল ঘোষ আবার দাবি করেন, টাকা আছে গোপাল ও তাঁর স্ত্রীর কাছেই! এরপরই শনিবার প্রথম ক্য়ামেরার সামনে এসে, স্ত্রী হৈমন্তীর পক্ষে সাফাই দিয়ে, কালীঘাটের কাকুর সঙ্গে দূরত্ব তৈরির আপ্রাণ চেষ্টা করেন গোপাল দলপতি!


গোপাল দলপতি কি বাকিদের ঘাড়ে দায় ঠেলার চেষ্টা করছেন? কারণ, শনিবার তিনি এও দাবি করেন, যে বর্তমানে ধৃত, যুব তৃণমূলের সম্পাদক কুন্তলের সঙ্গে তাঁর আলাপ করিয়ে দেন তাপস মণ্ডল ( Tapas Mondal ) ! তবে, গোপালের কোন কথা ঠিক, কোনটা বেঠিক, সেসব অবশ্য় খতিয়ে দেখবেন তদন্তকারীরাই!


বন্দি যুব তৃণমূল নেতা কুন্তল যখন গোপাল দলপতির নাম প্রকাশ্যে এনেছিলেন, তারপর থেকেই সবার নজর চলে যায় ওই একমাত্র ব্যক্তির দিকে। এরপর থেকেই হন্যে হয়ে গোপালের খোঁজ শুরু করে ইডি। প্রথমে জানা যায়, চিটফাণ্ড মামলায় ২০২১ সাল থেকে দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি গোপাল দলপতি। এরপর, ইডি সূত্রে খবর, তারা জানতে পারে, প্রায় এক বছর আগে জামিন পেয়েছেন গোপাল। এরপর গত, ৩০ জানুয়ারি নাটকীয়ভাবে নিজেই ইডি দফতরে ফোন করেছিলেন গোপাল। পরে হাজিরাও দেন। পয়লা ফেব্রুয়ারি তাঁকে ও কুন্তলকে মুখোমুখি বসিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছিলেন ইডি অফিসাররা। এরপর দু-জনকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করে সিবিআই-ও। সেদিনই প্রথমবার কুন্তল, হৈমন্তীর নাম জানতে পারেন বলেএবিপি আনন্দকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে চাঞ্চল্য়কর দাবি করেছেন গোপাল।