প্রকাশ সিনহা, কলকাতা : 'প্রভাবশালী'দের SSKM-যাত্রা নিয়ে একসময় ছিল টানাপোড়েন, আর এখন সেই এসএসকেএম হাসপাতালেই চিকিৎসার পক্ষে সওয়াল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। তাঁদের যুক্তিতে 'মুখ্যমন্ত্রী চিকিৎসা করান এসএসকেএমে'। বাইপাস সার্জারি করাতে হবে বলে জানিয়ে আদালতে জামিনের আবেদন করেছিলেন কালীঘাটের কাকু। নিয়োগ দুর্নীতিতে (Recruitment Scam) ধৃত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর জামিনের আবেদনের  পিছনে যুক্তি ছিল, ৩টি ধমনীতে ব্লকেজ রয়েছে। বাইপাস সার্জারি করাতে হবে। কোনও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে চেয়ে জামিন মঞ্জুরের আবেদন জানান কালীঘাটের কাকু। যদিও সেই আবেদন খারিজ করে দিল ব্যাঙ্কশাল কোর্ট। আদালতের সাফ বক্তব্য, এসএসকেএমেই হবে 'কালীঘাটের কাকু'র চিকিৎসা।


কালীঘাটের কাকুর বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার দাবি খারিজ করে আদালত জানিয়েছে, 'এসএসকেএম বাংলার গর্ব, সেখানেই সুজয়কৃষ্ণের চিকিৎসা। অনেক ভিআইপি চিকিৎসা করান, আশাকরি সেখানেই সুস্থ হবেন'। প্রসঙ্গত, SSKM হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর পক্ষে সওয়াল করেন এনফোর্সমেন্ট ডাইরেক্টরেটের আইনজীবীও। তিনি বলেন 'মুখ্যমন্ত্রী এসএসকেএমেই চিকিৎসা করান, তাহলে সুজয়কৃষ্ণ নয় না কেন?'


জামিনের আবেদন যাতে খারিজ হয় সেটা নিশ্চিত করতে ইডি-র পক্ষে সওয়াল করা হয়, '১৬ দিন কালীঘাটের কাকু বাড়িতে ছিলেন, তখন কিছু হয়নি'
'১৬ দিন পর যখন জেলে গেলেন, তখন অক্সিজেন লেভেল কমে গেল!' পাশাপাশি আদালতে ইডি-র সওয়াল, 'তার আগে উনি সুস্থ ছিলেন, এটাতেই বোঝা যাচ্ছে তাঁর প্রভাব। তিনি প্রভাবশালী বলেই তাঁকে কালীঘাটের কাকু বলা হয়'। সূত্রের খবর, আগামীকালই সুজয়কৃষ্ণর বিরুদ্ধে তারা চার্জশিট জমা দিতে চলেছে ইডি। চার্জশিটে কালীঘাটের কাকুর যাবতীয় সম্পত্তির হিসেব, নিয়োগ দুর্নীতিতে তিনি কীভাবে জড়িত, তার তথ্যপ্রমাণ পেশ করা হবে। 


প্রসঙ্গত, এর আগে ইডির তরফে আদালতে দাবি করা হয়,গত ২০ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টা ৪৬ মিনিটে নিজের মোবাইল ফোন থেকে কাউকে ফোন করে সুজয়কৃষ্ণ নির্দেশ দেন, ফোনের যাবতীয় তথ্য়, চাকরিপ্রার্থীদের মার্কশিট, অ্য়াডমিট কার্ড ডিলিট করে দিতে। তাই তদন্তের স্বার্থে কালীঘাটের কাকুর কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষা প্রয়োজন। গত ১৪ জুলাই, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রর কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষার জন্য় ইডিকে ছাড়পত্র দেয় ব্য়াঙ্কশাল আদালত। ১৭ জুলাই প্যারোলের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর কালীঘাটের কাকু ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রকে নিয়ে যাওয়া হয় প্রেসিডেন্সি জেলে। সূত্রের খবর, সেখানে ইডি-র অফিসারদের সামনেই বমি করতে শুরু করেন সুজয়কৃষ্ণ। তাঁকে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।  আর তাই তাঁর কণ্ঠস্বরের নমুনা সংগ্রহ করা যায়নি।


 


আরও পড়ুন- পঞ্চায়েত ভোটে ব্যালট বিকৃতি, নজিরবিহীন ভাবে এসডিও-বিডিও সাসপেন্ডের সুপারিশ