কলকাতা: বাংলার ট্যাবলো (Republic Day Tableau) বিতর্কে এ বার মুখ খুললেন বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo)। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের তীব্র সমালোচনা করলেন তিনি। অধুনা তৃণমূল (TMC) বাবুলের সাফ বক্তব্য, প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান থেকে বাংলার ট্যাবলো বাদ দেওয়া অত্যন্ত লজ্জাজনক ঘটনা। কেন্দ্র অত্যন্ত সস্তার রাজনীতি করছে বলেও অভিযোক করেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল।
ট্যাবলো বিতর্কে ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (Narendr Modi) চিঠি লিখেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। যদিও কেন্দ্রের যুক্তি, ট্যাবলো নির্বাচনের দায়িত্বে থাকে বিশেষজ্ঞ কমিটি। বাংলার ট্যাবলো বাদ যাওয়ায় তাদের কোনও ভূমিকা নেই। কিন্তু তৃণমূলের দাবি, ইচ্ছাকৃত ভাবেই বার বার বাংলার ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং গর্বকে অপমান করে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
দলের পাশে দাঁড়িয়ে সোমবার এই বিতর্কে অংশ নেন বাবুলও। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘নেতাজিকে উৎসর্গ করা বাংলার ট্যাবলো প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, যা অত্যন্ত লজ্জাজনক। কেন্দ্র সস্তার রাজনীতি বই অন্য কিছু করছে না। কী ধরনের মানসিকতা থেকে এমন আচরণ করা যায়, তা ভাবলে আশ্চর্য লাগে। আমি এর তীব্র নিন্দা করছি।’
এই নিয়ে লাগাতার দু’ বছর প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ট্যাবলোর প্রস্তাব খারিজ করল কেন্দ্র। এ বছর ২৬ জানুয়ারি উপলক্ষে দিল্লির অনুষ্ঠানে নেতাজি (Netaji Subhas Chandra Bose) এবং আইএনএ (INA) বিষয়ক ট্যাবলোর প্রস্তাব দিয়েছিল রাজ্য সরকার (West Bengal Government)। কিন্তু প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের (Ministry of Defense) তরফে সেই প্রস্তাব মৌখিকভাবে খারিজ করে দেওয়া হয়। এর আগে, গতবছর রাজ্য সরকারের কন্যাশ্রী (Kanyasree), সবুজ সাথী (Sabuj Sathi), জল ধরো, জল ভরো প্রকল্পের ট্যাবলো তুলে ধরার প্রস্তাবও নাকচ করে দেয় কেন্দ্র।
এ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও লেখেন মমতা। তাতে তিনি লেখেন, ‘কেন্দ্রের সিদ্ধান্তে আমি হতবাক এবং ব্যথিত। ট্যাবলো বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত কেন? কারণ ব্যাখ্যা করেনি কেন্দ্র। বাংলার মানুষ কেন্দ্রীয় সরকারের আচরণে গভীরভাবে ব্যথিত’। মমতা আরও লেখেন, ‘ট্যাবলো বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্তে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের অসম্মান করা হয়েছে।’
নেতাজি কন্যা অনিতা বসু পাফও ট্যাবলো বিতর্কে কেন্দ্রের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তাঁর সাফ বক্তব্য, ‘ভোটের আগে গত বছর যেখানে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে নেতাজির জন্মদিন পালনে ছুটে এসেছিলেন নরেন্দ্র মোদি, এ বার সেই নেতাজিকে উৎসর্গ করা ট্যাবলোই বাদ দেওয়ার তীব্র সমালোচনা করেছেন তিনি। বাংলায় নির্বাচন মিটে গিয়েছে, তাই নেতাজিকে নিয়ে দরদ দেখানোর প্রয়োজনও মিটে গিয়ে থাকতে পারে বলেও মন্তব্য করেন অনিতা।
কিন্তু এই সংঘাত নিয়ে রাজ্যকেই কটাক্ষ করেন বিজেপি-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর কথায়, ‘‘ট্যাবলো নিয়ে প্রতি বছর বিতর্ক বাঁধানো রাজ্য সরকারের অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে।’’ রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। কিন্তু এ ব্যাপারে রাজ্যের পাশে থাকতে দেখা গিয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস নেতা অধীররঞ্জন চৌধুরী। তাঁর সাফ বক্তব্য, ‘‘শ্যামাপ্রসাদের আদর্শে দীক্ষিতরা নেতাজির ভাবনায় বিব্রত হবেন, সেটাই তো স্বাভাবিক! এ ব্যাপারে রাজ্য যে অবস্থান নেবে, তাকে সমর্থন জানাব আমরা।’’