কলকাতা: আর জি কর কাণ্ডে তদন্তে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা CBI. রবিবার সাত সকালে শহরে চতুর্মুখী অভিযানে নামল তারা। সাতসকালে প্রথমে আর জি কর হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের বাড়িতে হানা দেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। পাশাপাশি, আর জি কর হাসপাতালের ফরেন্সিক বিভাগের আধিকারিক দেবাশিস সোমের কেষ্টপুরের বাড়িতেও পৌঁছেছে CBI-এর একটি দল। (RG Kar Case)


আর জি কর মেডিক্যালের প্রাক্তন সুপার, সঞ্জয় বশিষ্ঠের এন্টালির বাড়িতেও পৌঁছেছে CBI দল। চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। আর জি কর মেডিক্যালের সাপ্লায়ার বিপ্লব সিংহের বাড়িতেও CBI. বিপ্লব সিংহের বাড়ি হাওড়ার হাটগাছাতে। আর জি কর মেডিক্যালে বায়ো মেডিক্যাল বর্জ্য নিয়ে গতকালই সরব হন রাজ্য বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য ছিল, "শুধু আর জি কর মেডিক্যাল নয়, রাজ্য জুড়ে চলছে বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য নিয়ে দুর্নীতি। যে সংস্থাকে বরাত দেওয়া হয়েছিল, তাদের কোনও প্লান্টই নেই পশ্চিমবঙ্গে।" (RG Kar CBI Probe)


রবিবার সকালে নিজাম প্যালেস থেকে CBI-এর ১০টি দল বেরিয়েছে বলে খবর। শহরের বিভিন্ন জায়গায় হানা দিচ্ছে তারা। সন্দীপের বিরুদ্ধে দুর্নীতির যে ভূরি ভূরি অভিযোগ সামনে এসেছে, সেই সময় সঞ্জয় উপাধ্যক্ষ ছিলেন সঞ্জয়। বাকিদের নামও উঠে এসেছে অভিযোগে। বিশেষত বায়ো মেডিক্যাল বর্জ্য, মৃতদেহ নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে বলেও রয়েছে অভিযোগ।


আর জি কর হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলির অভিযোগপত্রে সন্দীপের পাশাপাশি দেবাশিসের নাম ছিল। তবে এদিন সন্দীপের বাড়িতে ঢুকতে গিয়ে CBI-কে বেগ পেতে হলেও, দেবাশিসের বাড়িতে ঢুকতে পেরেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। দেবাশিসকে বাড়িতেঅ জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কী বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তা যদিও খোলসা করেননি গোয়েন্দারা।


তবে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছে, গোয়েন্দা সংস্থার দুর্নীতি বিরোধী শাখা সকাল থেকে অভিযানে নেমেছে। আর জি কর হাসপাতালে দুর্নীতির যে ভূরি ভূরি ভূরি অভিযোগ উঠেছে, গতকালই সেই তদন্তভার হাতে পায় CBI. গতবছর ভিজিল্যান্স কমিশন-সহ বিভিন্ন দফতরে একাধিক অভিযোগ করেন আখতার। তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় যখন উত্তাল চারিদিক, নতুন করে সেই অভিযোগ নিয়ে সক্রিয়তা শুরু হয়েছে। তাতেই CBI অভিযান।


গতবছর জুলাই মাসে যে অভিযোগ করেন আখতার, তাতে সন্দীপের পাশাপাশি দেবাশিসের নামও ছিল। বলা হয়েছিল, আর জি করে ব্যাপক দুর্নীতি হচ্ছে, বেআইনি ভাবে, টাকার বিনিময়ে অফিসারদের বদলি করা হচ্ছে। সরকারি তহবিলের টাকা নিয়ম বহির্ভূত ভাবে ব্যবহার, বায়োমেডিক্যাল বর্জ্য বিক্রির টাকা নয়ছয় এবং সেই টাকায় ব্যক্তিগত সম্পত্তি বাড়ানোর অভিযোগ জানান আখতার।


সম্প্রতি এক আইএএস অফিসার এ নিয়ে টালা থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই অভিযোগ পেয়ে রাজ্য সরকার বিশেষ SIT গঠন করে। এর পর বিষয়টি কলকাতা হাইকোর্টে পৌঁছয়। গতকালই সেই মামলার তদন্তভার হাতে পায় CBI. গতকালই সেই নিয়ে এফআইআর দাবি করেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। আর রবিবার সকাল হতেই চতুর্মুখী অভিযান শুরু করে দিলেন তাঁরা।