কলকাতা : নবান্নের পুনরাবৃত্তি কালীঘাটে। শর্ত পাল্টা শর্ত নিয়ে স্নায়ুযুদ্ধ। ভেস্তে গেল মুখ্যমন্ত্রী-আন্দোলনকারী জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক। দীর্ঘ টালবাহানার পর কোনও শর্ত ছাড়াই তাঁরা আলোচনা করতে চেয়েছিলেন বলে দাবি জুনিয়র ডাক্তারদের। কিন্তু, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করা হয়নি। জুনিয়র ডাক্তারদের বক্তব্য তাঁদের বলা হয়, 'আর আলোচনা সম্ভব নয়। হয়, আপনারা বেরিয়ে যান। নইলে আপনাদের বাস ডেকে আপনাদের বের করে দেওয়া হবে। আমাদের মোটামুটি ঘাড় ধাক্কা দেওয়া হল।' স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য তাঁদের এমন কথা বলেন বলে অভিযোগ। এরপর বেরিয়ে এসে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন জুনিয়র ডাক্তাররা। ধর্নাস্থলে ফিরে এসে ফের একবার সুর চড়ালেন আন্দোলনকারীরা। জুনিয়র ডাক্তারদের প্রশ্ন তোলা হয়, 'এই সন্দীপ ঘোষ, এই টালা থানার ওসি ...এঁদের সুতো কোথায় বাঁধা ?'
তিনি বলেন, "আমরা ৩৫ দিন বিচারহীন অবস্থায় অপেক্ষা করছি। আমরা শেষ ৫দিন বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে এখানে অপেক্ষা করছি। আর ওঁরা নাকি ৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে পারবেন না ! তাহলে সদিচ্ছার অভাব কার ? তাহলে আলোচনা কে চাই না ? আমরা তো আলোচনা করতে গিয়েছিলাম। আমরা আবার বলেছি, আলোচনাই করতে চাই। এখন কী মনে হচ্ছে বলুন তো, একটু আগে এই যে আমাদের সহকর্মীর ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় সন্দীপ ঘোষ ও টালা থানার ওসি গ্রেফতার হয়েছেন, এই খবরটা ওঁরা পেয়েছেন। তাই এই মিটিং করার সাহস হয়নি। আমরা যে প্রথম থেকে যে বলছি, তথ্যপ্রমাণ লোপাটের চেষ্টা হয়েছে, আমাদের যে ৫ দফা দাবি...যার জন্য রাত দখলের ডাক দিয়েছিলাম... সেটা যে প্রত্যেকটা সত্যি আজকের এই গ্রেফতারি প্রমাণ করে দেয়।"
শনিবার বেলায় আচমকাই স্বাস্থ্য়ভবনের বাইরে ধর্নাস্থলে পৌঁছে যান মুখ্য়মন্ত্রী। জুনিয়র চিকিৎসকদের আলোচনায় বসার আহ্বান জানান। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে আন্দোলনকারীরাও কালীঘাটে পৌঁছে যান। কিন্তু তারপরই তৈরি হয় জট। লাইভ স্ট্রিমিং ও ভিডিওগ্রাফি নিয়ে দীর্ঘ টালবাহানার পর অপেক্ষারত জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশে নতুন করে আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, "আমিও দুই ঘণ্টা তোমাদের জন্য অপেক্ষা করছি। তোমাদের ছাতা দেওয়া হয়েছে। সামনে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তোমরা ভিজবে না। আমার এটা অনুরোধ থাকল। কেন ভিজছ ? তোমাদের জন্য আমি তো জায়গা করে রেখেছি। তোমাদের চিঠিতেও কোথাও লাইভ স্ট্রিমিংয়ের কথা লেখা নেই। আমাদের চিঠিতেও কোথাও লেখা নেই। আমরা পুরোটাই রেকর্ড করে রাখছি। তোমাদের শেয়ার করব। আমরা কেউ এটা রিলিজ এখন করব না। যেহেতু কোর্টে কেস চলছে। আমরা এটা সময়মতো কোর্টের কেসটা একটু শেষ হয়ে গেলে তোমাদের দিয়ে দেব। তোমাদের কেউ ওয়াচ করতে পারো। আমরা পুরোটাই রেকর্ড করব।" তিনি এই প্রশ্নও ছুড়ে দন, "আপনারা যদি বাড়িতে এসে না-ই মিটিং করেন তাহলে আমাকে চিঠি দিলেন কেন ?"
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।