ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, সাঁকরাইল (হাওড়া) : আরজি কর মেডিক্য়ালে দুর্নীতির মামলায় সন্দীপ ঘোষের পাশাপাশি সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন বিপ্লব সিংহ এবং সুমন হাজরা। অভিযোগ, এই দু'জনকে বেআইনিভাবে প্রচুর সুযোগ সুবিধা পাইয়ে দিয়েছিলেন সন্দীপ ঘোষ। হাসপাতালে যাবতীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম সরবরাহের দায়িত্ব ছিল তাঁদের। বিপ্লব সিংহ এবং সুমন হাজরা--- দু'জনেরই বাড়ি হাওড়ায়। সেখানকার বাসিন্দাদের দাবি, গত কয়েকবছরে আচমকাই বদলে গেছিল এই দু'জনের জীবনযাত্রা এবং চালচলন।


আরজি কর মেডিক্য়ালে দুর্নীতির অভিযোগে প্রাক্তন অধ্য়ক্ষ সন্দীপ ঘোষের পাশাপাশি সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন হাসপাতালের দুই ভেন্ডর বিপ্লব সিংহ ও সুমন হাজরা। দু'জনই সন্দীপ ঘোষের অত্য়ন্ত ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।


অভিযোগ, হাসপাতালে প্রায় জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ অবধি সব জিনিস তাঁরাই সরবরাহ করতেন। আর বেআইনিভাবে সেই সুযোগ পাইয়ে দিতেন সন্দীপ ঘোষ। এভাবেই ফুলেফেঁপে উঠেছিলেন বিপ্লব সিংহ এবং সুমন হাজরা।

দু'জনেরই বাড়ি হাওড়ার সাঁকরাইলে বাসুদেবপুরে একই এলাকায়। সেখানে পৌঁছে জানা গেল--- গত কয়েক বছরে তাঁদের জীবনযাত্রা এবং চালচলন আমূল বদলে গেছে। হাওড়ার বাসুদেবপুরের এক বাসিন্দা বলেন, 'ওঁদের জীবনযাপন যা চলত সাধারণ মানুষের সঙ্গে তুলনার বাইরে। বিলাসবহুল জীবনযাপন করতেন। দুইজনেই।' অপর এক বাসিন্দা বলেন, 'জীবনযাপন মানে কী...একদম সেই নেতা-মন্ত্রীর মতো জীবনযাপন করতেন। আগে আর্টিস্টের কাজ করতেন। ব্যানার লিখতেন। বিলাসিতা অনেক বেড়ে গিয়েছিল।'


স্থানীয়দের দাবি, ধৃত বিপ্লব একসময়ে ব্য়ানার আঁকতেন। বাবা ছিলেন একটি মেডিক্য়াল কলেজের চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। এখন সেই বিপ্লবের বাড়ি দেখলে তাক লেগে যাবে! ধৃত বিপ্লব সিংহর এক প্রতিবেশী বলেন, 'বিপ্লব সিংহ একেবারে অশিক্ষিত। আর চলনবলন...অশিক্ষিত লোকের টাকা হলে, তাঁকে দেখে বুঝতে পারবেন। গলায় সোনা, কম দামি জায়গা বেশি দামে কিন ফেললেন।' 


বিপ্লব সিংহ 'মা তারা ট্রেডার্স' নামে একটি সংস্থার কর্ণধার। দুর্নীতির মামলায় CBI যে FIR করেছিল, তাতে ‘মা তারা ট্রেডার্স’ নামে সংস্থার নাম ছিল। গত সপ্তাহে CBI সাঁকরাইলে বিপ্লবের বাড়ি এবং সংস্থার অফিসে হানা দেয়। ধৃত সুমন হাজরা 'হাজরা মেডিক্য়াল' নামে হাওড়ার সাঁকরাইলের একটি ওষুধের দোকানের মালিক। তাঁর বাড়ি বিপ্লবের বাড়ির কাছেই। স্থানীয়দের দাবি, মঙ্গলবার সকালেও সুমন হাজরার দোকান খোলা হয়েছিল। পরে তার ঝাঁপ ফেলে দেওয়া হয়।

ধৃতদের জেরা করে কি আর জি কর মেডিক্য়ালে দুর্নীতি নিয়ে আরও চাঞ্চল্য়কর কোনও তথ্য় সামনে আসবে? সেটাই দেখার।