অরিত্রিক ভট্টাচার্য, কলকাতা : কলকাতা পুলিশের সিভিক ভলান্টিয়ার।

  এমনকী পুলিশের ওয়েলফেয়ার বোর্ডের সঙ্গেও যুক্ত। আরজি কর হাসপাতালে চিকিৎসককে নৃশংসভাবে নির্যাতন করে হাসপাতালেরই সেমিনার হলে খুন করার অভিযোগ উঠল তার বিরুদ্ধেই। ধৃতর নাম সঞ্জয় রায়। অভিযুক্তের বিরুদ্ধে রয়েছে হাতেগরম প্রমাণ।  পুলিশ সূত্রে দাবি, শুক্রবার আরজি কর হাসপাতালের এমারজেন্সি বিল্ডিংয়ের চারতলায় মেডিসিন বিভাগের সেমিনার হলে,  মহিলা চিকিৎসকের মৃতদেহের পাশেই পড়েছিল একটি সাদা রঙের ব্লু-টুথ যুক্ত নেক ব্যান্ড। পরে তদন্তকারীরা দেখেন, সেই ব্লু-টুথ কানেক্টেড রয়েছে সঞ্জয় রায়ের মোবাইলের সঙ্গে। এভাবেই পুলিশের জালে পড়ে যায় এই ভয়ঙ্কর ঘটনার অভিযুক্ত। কে এই সঞ্জয় ? কেমন ট্র্যাক রেকর্ড তার? 


ABP Ananda খোঁজ নিয়ে জানতে পারল, ধৃত সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের হাসপাতালে অবাধ যাতায়াত ছিল। পুলিশ খোঁজখবর করে জানতে পারে এই সঞ্জয় প্রায়ই হাসপাতালে আসত রোগী ভর্তি করতে। সঞ্জয়ও পুলিশের কাছে দাবি করে, সে রাতে রোগীর খোঁজ নিতেই গিয়েছিল হাসপাতালে। তবে রোগীদের জিজ্ঞাসা করে জানতে পারা যায়, সঞ্জয় সেখানে যায়নি। তারপর সিসিটিভি ফুটেজে যে ছবি ধরা পড়ে, তাতেই পুলিশ নিশ্চিত হয়, কালপ্রিচ আর কেউ নয়, সঞ্জয়ই। 


সঞ্জয়ের মায়ের সঙ্গে কথা বলেছিলেন এবিপি আনন্দ-র প্রতিনিধি। তাতে জানতে পারা যায়, সঞ্জয়ের মা জানতেন ছেলে পুলিশে কাজ করে। সে যে সিভিক পুলিশ, সেই ধারণাও ছিল না। এমনকী পড়শিরাও তাই জানতেন। 


সঞ্জয়ের পড়শিদের সঙ্গে কথা বলে উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গেল, লকডাউনের পর আর পাড়ায় থাকে না সঞ্জয়। পুলিশের আর্মড ফোর্সে চাকরি করে বলে বহু মানুষের থেকে টাকাও তুলেছে সঞ্জয়। সবার এক কথায় জবাব, ও ছেলে কোনওদিনও ভাল ছিল না, চোর , জোচ্চোর , জালিয়াত, কোনওদিন ভাল হবেও না। আরেক পড়শি তো সরাসরি বলে দিলেন, তার কাছ থেকেও টাকা নিয়ে ঠকিয়েছে সঞ্জয়। বলেছে পুলিশের আর্মড ফোর্সে কাজ করে। পরে তিনি জানতে পারেন, সঞ্জয় সিভিক ভলান্টিয়ারের কাজ করে। সেই পড়শির দাবি, সঞ্জয় একেবারেই চরিত্রহীন। সে ধর্ষণ করতেই পারে। এমনকী বোন বলে ডেকেও , সঞ্জয়ের পক্ষে ধর্ষণ করা সম্ভব বলে মত পড়শিদের। এক প্রতিবেশীর দাবি, কেউ তাকে দাদা বলে ডাকলেও , তাকে ধর্ষণ করতে পারে সঞ্জয়, এতটাই ঘৃণ্য মানসিকতা তার। 


অন্যদিকে, মহিলা চিকিৎসক খুনে সিবিআই তদন্তেও আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন,  অভিযুক্তর মামলা ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টে আনা হয়েছে, দ্রুত সর্বোচ্চ শাস্তি চাই, যাতে আর কেউ এমন ঘটনা ঘটানোর সাহস না পায়।  


আরও পড়ুন :


CBI তদন্তে আপত্তি নেই, প্রয়োজনে দোষীর ফাঁসির আর্জি, এবিপি আনন্দকে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী