উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: আর জি কর-এ ৯ তারিখ রাতের এক মর্মান্তিক ঘটনার বিচার চাইতে রাজ্যজুড়ে 'বিচারের দাবি'তে তোলপাড় । কী হয়েছিল সেদিন রাতে? তা বর্তমানে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আওতায় তদন্ত সাপেক্ষে রয়েছে। যদিও পুলিশি তদন্ত থেকে সিবিআই তদন্ত, উঠে এসেছে 'নানা মুনির নানা মত'-এর মতো তথ্য। সেই রাতে কীভাবে ঘটল ওই যা এখনও অজানা! তবে কাছের মানুষদের সঙ্গে নিশ্চয়ই কথা হয়েছিল নির্যাতিতার! কিছু কী জানিয়েছিলেন? এবিপি আনন্দে এই প্রথমবার কিছু কথা ভাগ করে নিলেন নির্যাতিতার কাছের বন্ধু। 


প্রিয় বন্ধুর 'মর্মান্তিক' খবর পেয়ে ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। বিশ্বাসই করতে পারেননি এমনটাও হতে পারে। চিকিৎসক তিনিও। হাসপাতালে কর্মরতও। যদিও দু'জনের ডিপার্টমেন্ট ছিল আলাদা, হাসপাতালের মধ্যেই তবে অনেকটাই দূরে। দেখা সাক্ষাৎ কম হত। তাই কোনও কোনও সময় ফোনই ছিল ভরসা। যদিও সবসময় ফোনে কথা বলার অবকাশ হত না। কোনও ভাল কেস পেলে, কোনও জটিল কেস পেলে তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলতেন তাঁরা। অনেক সময় 'এখন ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলব' বলে ফোনও কেটে দিতেন বন্ধু। 


তবে ৯ তারিখ রাতে কী কথা হয়েছিল? 


বন্ধুর স্মৃতিতে বন্ধু বলেন, 'সেদিন যখন ফোন করি বলেছিল একটু ব্যস্ত আছি। একটু পরে ফোন করছি। ওইটুকুই কথা হয়। এটাকে ব্যতিক্রম মনে হয়নি সেদিন। কারণ এর আগেও এমন হয়েছে। আইসিউ ডিউটি থাকলে এই ব্যস্ততা থাকা স্বাভাবিক ছিল। পরের দিন হয়তো ১.৩০-২টোর পর মেসেজ করত বা ফোন করত। সেদিন আর কথা হয়নি। আমি তখন বলি যে আমি ঘুমাতে গেলাম। এরপর পরের দিন সকালবেলা উঠে ফোন করি ৯টা নাগাদ। হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজও পাঠাই। কিন্তু কোনও রিপ্লাই আসে না। যেহেতু এই মেসেজ দেরিতে আসার বিষয় আগেও হয়েছে তাই কিছু মনে হয়নি। ভেবেছি আগের মতোই। কিন্তু কাকুর ফোনে সেই ভুল ভাঙে'। 


আরও পড়ুন, গায়ে হাত তোলে ছেলে, পেট চালাতে চোখে জল নিয়ে রাতে অটো চালান মা


এরপর খবর পান সেই ঘটনার। তাঁর কথায়, 'কাকু আমাকে ফোনে প্রথমে আত্মহত্যার ঘটনাটি বলেন। ওই কথাটা শুনে আমার হাত-পা কাঁপতে শুরু করে। আমি খুব অসুস্থ বোধ করি। আমি বিশ্বাস করিনি। তাই ওঁকে বারবার ফোন করতে থাকি। এক বন্ধুকে ফোন করতেই বলা হয় তাড়াতাড়ি চলে এসো তোমরা।'   



মৃত চিকিৎসকের বিশেষ বন্ধু এও জানান পরিবারের কাছে ভুয়ো আত্মহত্যার ফোন আসা থেকে অতি তৎপরতার সঙ্গে পুলিশের মৃতদেহ সৎকারের কথাও। সেদিন গোটা ঘটনা যিনি খুব কাছ থেকে দেখেছিলেন তিনি। এই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যেও, তিনি প্রথমবার ক্যামেরার সামনে এসে, এবিপি আনন্দকে জানালেন নিজের সেই ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা। তাঁর দাবি, আরজিকরের ছাত্র পরিচয় দেওয়া তিনজন এসে এও জানতে চেয়েছিলেন, FIR-এ কী লেখা হয়েছে। 



আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে