RG Kar Protest: আরজি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে গত ১৪ অগস্ট প্রথমবার রাত দখলে নেমেছিলেন সাধারণ মানুষ। স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে প্রতিবাদের ঝাঁঝ যতটা ছিল, এখনও ঠিক তেমনটাই রয়েছে। মাঝে ৪ সেপ্টেম্বর রাতেও রিক্লেইম দ্য নাইটের আহ্বানে রাজপথে নেমেছিলেন আমজনতা। এর আগে এবং পরে হয়েছে অসংখ্য মিছিল। শুধু কলকাতা শহর নয় জেলায় জেলায় চলেছে বিক্ষোভ, মিছিল, প্রতিবাদ সভা। হাল্লা বোল - এই স্লোগানেও রাস্তায় নেমেছিলেন অনেকেই। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন জায়গায় হয়েছে পথনাটিকা। কেউ গেয়েছেন গান। কেউবা রাস্তায় এঁকেছেন গ্রাফিতি। সাধারণ মানুষের সঙ্গে সমস্ত সেলিব্রিটি তকমা ঝেড়ে ফেলে মিছিলের সঙ্গী হয়েছিলেন অভিনেতা, অভিনেত্রী এবং অন্যান্য সমস্ত স্তরের শিল্পীরা। সকলের কণ্ঠে ছিল স্লোগান, গর্জন। 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস'- এর দাবিতে মুখর হয়েছিল আকাশ-বাতাস। আজও সেই একই ছবি দেখা গিয়েছে শহর থেকে শহরতলিতে। সিঁথির মোড়ে চলছে মিছিল। যাদবপুরেও প্রতিবাদে সামিল হয়েছেন আমজনতা। রাত দখলের মিছিলে হাঁটছেন হাওড়া, কোচবিহার এবং আরও অনেক জেলার সাধারণ মানুষ। দাবি একটাই, আরজি কর কাণ্ডের বিচার চাই। অভিযুক্তদের কড়া শাস্তি চাই। উই ওয়ান্ট জাস্টিসের স্লোগান এখন রূপান্তরিত হয়েছে উই ডিমান্ড জাস্টিসে। কবে আসছে সুবিচার, কবে ন্যায়বিচার পাবেন নির্যাতিতার পরিবার, এত মানুষের আবেগ-ক্ষোভ-রোষ কবে সুদিন দেখাবে, এখন সেই অপেক্ষাতেই সকলে।
অন্যদিকে আজ সিবিআই- এর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। আরজি কর- এ চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে। আর্থিক দুর্নীতির মামলায় তিনি আগেই গ্রেফতার হয়েছিলেন। এর পাশাপাশি আরজি কর কাণ্ডে তথ্য প্রমাণ লোপাট, ঘটনাস্থল বিকৃত করা, দেরিতে এফআইআর দায়ের করা, বক্তব্যে অসঙ্গতি, সঠিক ভাবে তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ না করা- সহ একাধিক অভিযোগে টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করেছে সিবিআই। স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য তাঁদে নিয়ে যাওয়া হয় বি আর সিং হাসপাতালে। আগামীকাল তাঁকে আদালতে পেশ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
এদিকে বৃহস্পতিবারের পর শনিবার সন্ধ্যাতেও ভেস্তে গিয়েছে জুনিয়র ডাক্তার এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বৈঠক। শনিবার সকালে স্বাস্থ্য ভবনের সামনে জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্নাস্থলে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপর সন্ধ্যায় বৈঠকের আয়োজন করা হয় কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে। প্রথম থেকেই বৈঠকের লাইভ স্ট্রিমিংয়ের দাবিতে অনড় ছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এদিক সরকার পক্ষ সেই প্রস্তাবে রাজি হয়নি। বৈঠকের ভিডিও রেকর্ডিং করতে চান আন্দোলনকারীরা। তাঁরা বলেন সরকারও চাইলে মিটিংয়ের ভিডিও রেকর্ডিং করতে পারে। কিন্তু সেখানেও বলা হয় সরকার পক্ষই শুরু ভিডিও রেকর্ডিং করবে বৈঠকের এবং পরে সুপ্রিম কোর্টের অনুমতি নিয়ে জুনিয়র ডাক্তাদের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এর পাশাপাশি মিটিংয়ের মিনিটস দেওয়ার কথাও জানান মুখ্যমন্ত্রী। নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে শেষ পর্যন্ত বৈঠকের মিনিটস পাওয়ার আশ্বাসেই আলোচনায় বসতে রাজি হন জুনিয়র ডাক্তাররা। কিন্তু তখন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জানান, অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে, অনেকক্ষণ অপেক্ষা করা হয়েছে, আজ আর বৈঠক সম্ভব নয়।
আরও পড়ুন- 'মুখ্যমন্ত্রী জুনিয়র ডাক্তারদের কথা শুনুন', বৈঠক ভেস্তে যাওয়ায় ক্ষুব্ধ সিনিয়র চিকিৎসকরাও