আবির দত্ত, পার্থপ্রতিম ঘোষ, ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, কলকাতা: টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করল সিবিআই। তথ্য প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে। এছাড়াও রয়েছে আরও অনেক অভিযোগ। দেরিতে এফআইআর নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে টালা থানার ওসি- র বিরুদ্ধে। আপাতত সিজিও কমপ্লেক্সে রয়েছেন তিনি। কিছুক্ষণ পর তাঁকে শারীরিক পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হবে বলে খবর। এর আগে ৫ থেকে ৬ বার সিজিও কমপ্লেক্সে ডেকে পাঠানো হয় টালা থানার ওসিকে। সিবিআই- এর তদন্তকারী আধিকারিকরা জেরা করেন তাঁকে। সম্প্রতি হাসপাতালে ভর্তি হতেও গিয়েছিলেন অভিজিৎ মণ্ডল। তারপরেও তাঁকে ডেকে পাঠানো হয় সিবিআই- এর তরফে। পাঠানো হয় নোটিস। আজ দুপুরেও তলব করা হয় তাঁকে। জেরায় বক্তব্যে অসঙ্গতি পেয়েছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা। এরপরই কিছুক্ষণ আগে আরজি কর কাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছে টালা থানার ওসি- কে। গোটা তদন্ত প্রক্রিয়া ঘুরিয়ে দেওয়া এবং তদন্তকারীদের বিভ্রান্ত করার অভিযোগও উঠেছে অভিজিৎ মণ্ডলের বিরুদ্ধে। ক্রাইম সিন বিকৃতির অভিযোগও রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। 


সিবিআই- এর তরফে বেশ কয়েকবার এর আগেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় টালা থানার ওসিকে। অসুস্থ বলে কিছুদিনের সময় চান তিনি। এরপর ফের নোটিস পাঠানো হয় তাঁকে। আজ দুপুর সাড়ে ৩টে নাগাদ সিজিও কমপ্লেক্সে এসে পৌঁছন তিনি। আসেন সিবিআই- এর তদন্তকারী অফিসার। অন্যদিকে টালা থানার মালখানার দায়িত্বে থাকা একজনকেও তলব করা হয়। সূত্রের খবর, সিসিটিভি সংক্রান্ত বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তাঁকে বেশ কিছু নথি নিয়েও আসতে বলা হয়। আজও তিনি নথি নিয়ে এসেছিলেন বলে সূত্রের খবর। এরপর ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদ চলে। তারপর গ্রেফতার করা হয় টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডলকে। তথ্য প্রমাণ ধ্বংসের মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। সিবিআই- এর তরফে সুপ্রিম কোর্টে আগেই বলা হয়েছিল যে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ক্রাইম সিন বিকৃত করা হয়েছে, তথ্য প্রমাণ সঠিকভাবে সংগ্রহ করা হয়নি। 


আজ দুপুর থেকে অভিজিৎ মণ্ডলকে জেরার সময় বক্তব্যে অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে বলে খবর সিবিআই সূত্রে। এর আগে যে কয়েকবার টালা থানার ওসিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল, জেরার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আজ যে তাঁকে গ্রেফতার করা হবে তার আভাস আগে পাওয়া যায়নি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, আরজি কর হাসপাতালের ঘটনায় প্রথম থেকেই উপস্থিত ছিলেন টালা থানার ওসি। প্রাথমিক ভাবে তিনিই যা করার করেছিলেন। তিনিই যোগাযোগ করেন অন্যান্য আধিকারিকদের। পরবর্তী সময়ে আসেন অন্যান্য তদন্তকারী আধিকারিকরা। গঠন হয় এসআইটি। সিবিআই সূত্রে খবর, জেরার এক এক দিন অভিজিৎ মণ্ডল এক এক ধরনের কথা বলেছেন। বক্তব্যে অসঙ্গতির পরই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আজ প্রায় ৭ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হয়েছে টালা থানার ওসিকে। আগামীকাল তাঁকে আদালতে পেশ করা হবে। 


আরও পড়ুন- লাইভ স্ট্রিমিং ছাড়া বৈঠকে রাজি জুনিয়র ডাক্তাররা, মন্ত্রী বললেন অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে, আর সম্ভব নয়