সুকান্ত মুখোপাধ্যায়, কলকাতা : 'কোটি কোটি মেয়েকে পেয়েছি পাশে, যতদিন না বিচার পাচ্ছি ততদিন যেন পাশে থাকে।'নিজের মেয়েকে হারিয়ে বারবার আন্দোলনকারীদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন নির্যাতিতার বাবা-মা। এক সপ্তাহ আগে মেয়ের মৃত্যুর খবর এসেছিল তাঁর কাছে। আর জি কর মৃত্যুকাণ্ডে প্রতিবাদের আঁচ পৌঁছে গিয়েছে দেশ থেকে বিদেশে। এবিপি আনন্দের ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন অনুষ্ঠানে সুবিচার পাওয়া পর্যন্ত সবাইকে পাশে থাকার আর্জি জানিয়েছেন নির্যাতিতার মা। 


সেদিনের কথা বলতে গিয়ে তাঁর ধরে আসে গলা। বললেন, প্রথমে তাঁদের কাছে ফোন আসে মেয়ে অসুস্থ বলে। বারবার তিনি জানতে চান, কী হয়েছে আমার মেয়ের, কী হয়েছে আমার মেয়ের। উল্টোদিকের কণ্ঠ বলে ওঠে, আমি কী করে জানব, আমি কি ডাক্তার নাকি ! তড়ঘড়ি উৎকণ্ঠা নিয়ে গাড়ি নিয়ে হাসপাতালের উদ্দেশে রওনা দেন তাঁরা। তারই মাঝে আবার ফোন। এবার অ্যাসিসট্যান্ট সুপারের ফোন। 'আপনাদের মেয়ে সুইসাইড করেছে'। ঘড়িতে তখন ১০ টা ৫৩ । মা - বাবা বুঝেছিলেন, তাঁদের জীবনের সবটুকু শেষ হয়ে গেল । আকুল হয়ে বসেছিলেন, মেয়েটার মুখ দেখার জন্য। কিন্তু সেখানে বসেই কেটে যায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। বলা হয়, বসুন তদন্ত চলছে। মেয়ে আর নেই, জেনেও বুকে পাথর রেখে অপেক্ষাই করে যেতে হয় তাঁদের । সেই সময় হাসপাতালের কোনও ঊর্ধ্বতনই তাঁদের সঙ্গে এসে কথা বলেননি। 


মা জানালেন, সেদিন তাঁদের কতটা হেনস্থা হতে হয়েছিল। ধরেছিলেন পুলিশের পা, বদলে জুটেছে লাঞ্ছনা। ভেঙে ফেলার চেষ্টা হয়েছিল মেয়ের গাড়িও । তখন অনুনয় করে মা-বাবা বলেন, মেয়েটা তো আমার চলেই গিয়েছে, ওর পছন্দের জিনিসটা নষ্ট করবেন না। 


মা-বাবার সামনেই পুলিশ তৈরি করছিল সিজ়ার লিস্ট। পুলিশকর্মীরা বলেন, আপনার মেয়ে তো অসুস্থ। এত ওষুধ... এত মেডিক্যাল রিপোর্ট। নির্যাতিতার মায়ের ধারণা, পুলিশ কেস ঘোরানোর চেষ্টা করছিল। কিন্তু তিনি স্পষ্ট করে দেন, নির্যাতিতাকে আগের সপ্তাহে কিছু একটা কামড়েছিল। তার জন্যই টেস্টগুলি করিয়েছিলেন তিনি। আর সেদিনই ওপিডি-তে মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভরা তাঁকে ওষুধগুলি একসঙ্গে দিয়ে দেন। তাই ,সেগুলি ব্যাগে রয়েছে। এরপর আর পুলিশ কথা ঘোরাতে পারেনি।  


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।  


আরও পড়ুন, 'চিৎকার করে কাউকে বলে দেবে তাই খুন করেছি', ভয়াবহ নৃশংসতার পরও নির্বিকার, নিরুত্তাপ সঞ্জয়