ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী ও সৌভিক মজুমদার, কলকাতা : বাড়ির সামনে তুমুল অশান্তি! অথচ বারবার ফোন করেও সাহায্য মেলেনি পুলিশের। রিষড়াকাণ্ডের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে এই অভিযোগ জানিয়ে, নিরাপত্তা চেয়েছেন ডায়মন্ডহারবার আদালতের এক বিচারক।
বিচারপতির এজলাসেও বিচারকের নিরাপত্তার প্রসঙ্গ
রামনবমীর মিছিলকে ঘিরে সোমবার সন্ধেয় ফের অশান্তি বেঁধেছিল রিষড়ায়! এলাকার সাধারণ মানুষ তো বটেই, অশান্তির ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা হয়েছে খোদ নিম্ন আদালতের এক বিচারকের পরিবারের! বুধবার হনুমান জয়ন্তী সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টের ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির এজলাসেও উঠল সেই প্রসঙ্গ! পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠল বারবার!
রিষড়াকাণ্ডের প্রেক্ষিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি উল্লেখ করেন, ' ডায়মন্ডহারবারের একজন বিচারক রেজিস্ট্রার জেনারেলকে চিঠি দিয়েছেন। ২ ছেলে এবং মেয়ে-কে নিয়ে, তাঁর পরিবার শ্রীরামপুরে থাকে, তিনি থানা এবং পুলিশ কর্তাদের কাছ থেকে সাহায্য চেয়ে পাননি। তিনি হাইকোর্টের কাছে নিরাপত্তা চাইছেন। '
আদালতে এই প্রসঙ্গ ওঠার পর, ঠিক কী ঘটেছিল তা জানতে ABP Ananda পৌঁছেছিল, ডায়মন্ডহারবার আদালতের অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট জজ জয়প্রকাশ সিংহের রিষড়ার বাড়িতে। বিচারক কর্মসূত্রে থাকেন ডায়মন্ড হারবারে। আর রিষ়ড়ায় জি টি রোড সংলগ্ন, পি কে দাস লেনের খটির বাজার এলাকায় তাঁর বাড়ি। সেখানে ৩ সন্তানকে নিয়ে থাকেন বিচারকের স্ত্রী।
'কোনওরকম পুলিশি সাহায্য মেলেনি'
বিচারকের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, বাড়ির সামনে অশান্তির খবর পেয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েন বিচারক জয়প্রকাশ সিংহ। তিনি নিজে পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। শেষপর্যন্ত ডায়মন্ড হারবারের এসডিপিও-কেও বিষয়টি জানান!
কিন্তু, সন্ধে থেকে গভীর রাত হয়ে গেলেও, কোনওরকম পুলিশি সাহায্য মেলেনি বলে অভিযোগ! অবাধ দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য আর অস্ত্রের দাপাদাপির সাক্ষী বিচারকের পরিবার! এখনও চোখে-মুখে লেগে আতঙ্কের রেশ!
এই প্রেক্ষাপটেই বুধবার হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, সমস্ত বিচারকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। বিচারকের পরিবারের তরফে, নিরাপত্তাহীনতার যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে, তার প্রেক্ষিতে, পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও, কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি ।
রিষড়ায় অশান্তি ও বিচারকের নির্দেশ
রামনবমীর মিছিল ঘিরে বিভিন্ন জেলায় অশান্তির পরে, হনুমান জয়ন্তীতে রাজ্য সরকারকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর চাইবার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। পাশাপাশি এই নিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য পেশে নিষেধাজ্ঞা । ১৪৪ ধারা বজায় থাকলে, তা মেনে চলার নির্দেশও দিয়েছে আদালত।