সুদীপ চক্রবর্তী, উত্তর দিনাজপুর: উত্তর দিনাজপুরের (Uttar Dinajpur Road Accident) করণদিঘিতে ভয়াবহ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল ২জনের। জখম আরও কয়েকজন। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ভুট্টা বোঝাই লরির ধাক্কায় সিভিক ভলান্টিয়ার-সহ ২জনের মৃত্যু হয়। ডালখোলা থেকে রায়গঞ্জ আসার সময় জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনা ঘটে। 


ফিরে দেখা...
বছরখানেক আগে, ফেব্রুয়ারি মাসে একটি বেসরকারি বাস ও লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে জখম হয়েছিলেন অন্তত ২০ জন। হেমতাবাদ থানার বাঙ্গালবাড়ি মোড় এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। জখমদের রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজে নিয়ে আসা হয়। বাস ও লরি, দুটিরই চালক পলাতক। তবে বিপদগ্রস্ত যানদুটি আটক করেছে হেমতাবাদ থানার পুলিশ। বস্তুত, এ রাজ্যে সড়ক দুর্ঘটনার খবর এখন প্রায় নিত্যদিনের বিষয়। বহু সময়ে তার সঙ্গে আসে মর্মান্তিক পরিণতি। গত বছর, অগাস্টে, যেমন, খাস কলকাতার বেহালা এলাকায় একেবারে সকালের দিকে মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় মারা যায় ৭ বছরের স্কুলপড়ুয়া সৌরনীল সরকার। অভিযোগ, বড়িশা হাইস্কুলের প্রাইমারি সেকশনের পড়ুয়াকে ধাক্কা মেরেছিল মাটিবোঝাই একটি লরি।গুরুতর জখম অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তার বাবা সরোজকুমার সরকারকে। পরে তাঁকে এসএসকেএম-এর ট্রমা কেয়ার সেন্টারের নিয়ে যাওয়া হয়। দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল বেহালায়। মৃতদেহ আটকে রেখে চলে বিক্ষোভ। উত্তেজিত জনতা সরকারি বাসে ভাঙচুর চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে নামানো হয় পুলিশ-ব়্যাফ। ওই ঘটনা বিস্তর শোরগোল ফেলেছিল গোটা রাজ্য়ে। কিন্তু তার পরও ছবিটা কি বদলে যায়? ছবিটা অন্তত সে রকম বলছে না।
সৌরনীলের মর্মান্তিক মৃত্যুর ঠিক কয়েক মাস পর, মহেশতলায় পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছিল এক কিশোরের। দুর্ঘটনায় আহত হয় আরও ১ কিশোর। তার দুটি হাতই বাদ চলে যায়, দাবি স্থানীয় সূত্রে। ট্যাঙ্কারের ধাক্কায় দুর্ঘটনা ঘটেছিল।  প্রতিবাদে রাস্তায় স্ল্যাব ফেলে পথ অবরোধ করেন স্থানীয়রা। শুধু কলকাতা বা শহরতলি নয়, রাজ্যের নানা প্রান্তে ছবিটা কম-বেশি এক রকম।


বার বার ...
দিনদুয়েক আগেই যেমন, পর পর চারটি পথ দুর্ঘটনার সাক্ষী হন পূর্ব বর্ধমান জেলার মানুষ। তার আগে, জানুয়ারিতে,  নদিয়ার শান্তিপুরে দুর্ঘটনার বলি হয়েছিলেন দুই পথযাত্রী। শান্তিপুর থানার ফুলিয়ায় ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপর বেপরোয়া গতিতে আসা গাড়ি তাঁদের ধাক্কা মারে। এর পর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ঘাতক গাড়িটি  পাল্টি হয়ে পড়ে যায় নয়ানজুলিতে। এই ঘটনার কিছুদিন আগে মুকুটমণিপুর থেকে পিকনিক করে ফেরার পথে, বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরে গাড়ির সঙ্গে ম্যাটাডোরের মুখোমুখি সংঘর্ষে গাড়ি চালকের মৃত্য হয়েছিল, আহত হন গাড়ির দুই যাত্রী। সেবারও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের নয়ানজুলিতে উল্টে পড়ে ডিম বোঝাই ম্যাটাডোর। গাড়িটিও দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এই ধরনের ঘটনা এখন নেহাত কম নয়। যা কিনা নিয়ত প্রশ্ন তোলে, কবে রাশ টানা যাবে এই মর্মান্তিক পরিণতিতে?


আরও পড়ুন:'সরাসরি তিন-চারতলায় উঠেছেন কাজল শেখ' ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য বিদায়ী জেলাশাসকের