প্রসূন চক্রবর্তী, বাঁকুড়া: ভয়াবহ পথ দুর্ঘটনায় (road accident) মৃত্যু (death) হল দুই বাইক আরোহীর (bike rider)। রবিবার রাতে বাঁকুড়া-রানিগঞ্জ (bankura) ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপর গোস্বামীগ্রাম মোড়ে ঘটনাটি ঘটে। বাইক ও ট্রাক্টরের সংঘর্ষেই (clash) এই পরিণতি, দাবি প্রত্য়ক্ষদর্শীদের।
কী ঘটেছে?
স্থানীয় সূত্রে খবর, মেজিয়ার ভাঁটরা গ্রামের ৩ যুবক বাইকে করে বাঁকুড়ার দিক থেকে রানিগঞ্জের দিকে যাচ্ছিল। প্রত্য়ক্ষদর্শীদের দাবি, সেই সময় তাঁরা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রানিগঞ্জ-মুখী একটি ট্রাক্টরের পিছনে সজোরে ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই গুরুতর আহত হন তিনজন। খবর পাওয়ামাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় মেজিয়া থানার পুলিশ। আহত অবস্থায় তড়িঘড়ি তিনজনকে মেজিয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে দুজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। তৃতীয় বাইক আরোহীর অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে৷ মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে এলাকায়। ঘটনাচক্রে, কাছাকাছি সময়েই বালিতে জাতীয় সড়কের উপর আর একটি দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনা হাওড়ায়...
প্রশাসন সূত্রে খবর, ১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক বালি নিশ্চিন্দার মাইতি পাড়া ব্রিজের কাছে ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। রবিবার রাত দশটা নাগাদ পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা থেকে একটি প্রাইভেট গাড়িতে করে আট জন ১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে বারাসাতের দিকে যাচ্ছিলেন। গাড়িটি মাইতি পাড়ার ব্রিজের কাছে জিরো পয়েন্টে পৌঁছালে আচমকা পিছন থেকে এক বড় ট্রেলার তাকে সজোরে ধাক্কা মারে। তীব্র অভিঘাতে সেটি চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়। ভিতরেই আটকে পড়েন ৮ যাত্রী। পুলিশ এবং স্থানীয় বাসিন্দারা ছ' জনকে বের করতে পারলেও গভীর রাত পর্যন্ত দুজন গাড়ির ভেতরেই আটকে পড়ে ছিলেন। অবশেষে প্রায় পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টায় রাত তিনটে নাগাদ গ্যাস কাটার দিয়ে গাড়ি কেটে উদ্ধার করা হয় তাঁদের। আশার কথা একটাই। যাত্রীদের কারও আঘাতই তেমন গুরুতর নয়। তবে যে ভাবে দুর্ঘটনা ঘটেছে তাতে উনিশ-বিশ হলে আট জনের কী পরিণতি হতে পারত ভেবেই শিউরে উঠছেন পরিজনেরা। বস্তুত, হাওড়া-সহ রাজ্যের নানা প্রান্তে সড়ক দুর্ঘটনার খবর এখন নিত্য পরিচিত হয়ে উঠেছে। বালির ক্ষেত্রে মর্মান্তিক পরিণতি এড়ানো গেলেও সব সময় বরাত সহায় হয় না। যেমন গত অক্টোবরে এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় মা এবং মেয়ের। উলুবেড়িয়ার জগৎপুর জোড়াকলতলায় ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর ওই মর্মান্তিক ঘটনায় জানা, একটি অ্যাম্বুলেন্স ধাক্কা দিয়েছিল দুজনকে। ঘটনার দিন সকালে মেয়েকে বৃত্তি পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন মা। তখনই ওই দুর্ঘটনা। প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশ জানিয়েছিলেন, দুজনে তখন রাস্তা পার হচ্ছেন। ঠিক তখনই দ্রুত গতিতে আসা একটি ফাঁকা অ্যাম্বুলেন্স তাঁদের ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই মারা যান দুজন। এর পর নভেম্বরের প্রথম দিনেই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটেছিল পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারে। চার চাকার গাড়ির সঙ্গে মোটরবাইকের একেবারে মুখোমুখি সংঘর্ষে জখম হন এক মহিলা। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বস্তুত, এরকম একঝাঁক ঘটনার উদাহরণ রয়েছে রাজ্যজুড়ে। কিন্তু কেন? বার বার এমন দুর্ঘটনা সত্ত্বেও কেন নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না বিষয়টি? গাফিলতি কোথায়? এখনও উত্তর অধরা।
আরও পড়ুন:'পুরো মন্ত্রিসভাকে জেলে পাঠাতে হবে', কেন বললেন শুভেন্দু?