রাজীব চৌধুরী, সাগরদিঘি : বায়রন বিশ্বাসের পদত্যাগের দাবিতে সাগরদিঘিতে ধিক্কার মিছিল সিপিএমের। সোমবার কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেন সাগরদিঘির বিধায়ক বায়রন। সাগরদিঘি উপনির্বাচনে বামেদের সমর্থনে কংগ্রেসের প্রতীকে জিতেছিলেন বায়রন। বাম নেতা-কর্মীরা বায়রনের হয়ে প্রচারের ময়দানে ঝাঁপিয়ে ছিলেন। তার ফলও মিলেছিল। এহেন বায়রনের দলত্যাগ নিয়ে কংগ্রেসের পাশাপাশি ক্ষোভে ফুঁসছে সাগরদিঘির বাম নেতৃত্বও।


মঙ্গলবার সিপিএম সাগরদিঘি এরিয়া কমিটির পক্ষ থেকে বায়রন বিশ্বাসের পদত্যাগের দাবিতে ধিক্কার মিছিল করা হল। মিছিল সাগরদিঘি বাজার এলাকা পরিক্রমা করে। মিছিল থেকে তাঁর পদত্যাগের দাবি তোলেন সিপিএম নেতৃত্ব। বায়রনের দলবদল নিয়ে আগেই সুর চড়িয়েছেন বিমান বসু। তিনি বলেছেন, "বুঝিনি এরকম হবে। উনি বিধায়ক হওয়ার পর একটা জড়তা ভাব ছিল। দো-মনামনির জন্যই হয়তো তা ছিল। এটা দুর্ভাগ্যজনক। যাইহোক, যা হল তা ভাল হল না। বোঝাপড়ার বিষয়টা , কোনও একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেলে সবকিছু রাজনৈতিক বিশ্লেষণ পরিবর্তন হয়ে গেল, তা তো বোঝায় না। যখন যা প্রয়োজন হবে, আলোচনা নিশ্চয়ই হবে।"


মাত্র তিন মাস আগেই কংগ্রেসের টিকিটে সাগরদিঘির উপনির্বাচনে জিতেছিলেন। সেই বায়রন বিশ্বাস গতকাল অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের হাত ধরে যোগ দেন তৃণমূলে। এনিয়ে অধীর চৌধুরী বলেছেন, 'দিদি যে খেলা আজ খেলছেন, একদিন সেই খেলায় নিজে শেষ হবেন।'


সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় লিখেছিলেন, কেউ কথা রাখেনি, তেত্রিশ বছর কাটলো, কেউ কথা রাখেনি। সাগরদিঘির বাম সমর্থিত কংগ্রেস বিধায়ক বায়রন বিশ্বাসও ৩ মাসের মধ্য়ে কথাখেলাপি করলেন ! সিপিএমের সমর্থনে কংগ্রেসের প্রতীকে জিতে পাল্টি খেলেন তৃণমূলে ! পঞ্চায়েত ভোটের আগে, বাংলায় ফের দলবদলের খেলা ! ভোটে হারের পর, দল ভাঙিয়ে বিধানসভায় কংগ্রেসকে শূন্য় করল ক্ষমতাসীন তৃণমূল। মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘির বিধায়ক বায়রন ৩০০ কিলোমিটার দূরে, পশ্চিম মেদিনীপুরের ঘাটালে এসে যোগ দেন তৃণমূলে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামাতো ভাই দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারিয়ে সাগরদিঘির উপনির্বাচনে জিতেছিলেন বায়রন। এবার, সেই বায়রনের হাতে পতাকা তুলে দিয়ে, দলে টানলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়


এনিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেছেন, "দিদি যে খেলা আজ খেলছে একদিন সেই খেলায় নিজে শেষ হবে। দিদির দল এভাবেই এভাবেই শেষ হবে।"


যদিও বায়রনের বক্তব্য, ‘কংগ্রেসে কাজ করতে পারছিলাম না, আমি বরাবরই তৃণমূলে ছিলাম।’