ব্রতদীপ ভট্টাচার্য এবং শিবাশিস মৌলিক, ন্যাজাট, সন্দেশখালি: সন্দেশখালিতে ইডি-র ওপর হামলার পর ৬ দিন পার। কোথায় অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহান? লঘু ধারাতেই বা কেন মামলা রুজু করল পুলিশ? তারই প্রতিবাদে আজ সন্দেশখালির ন্যাজাট থানা ঘেরাওয়ের ডাক বিজেপির। আর সেই কর্মসূচি ঘিরেই তুমুল উত্তেজনা গোটা এলাকায়। 


ন্যাজাট থানার আগে গাড়ি থেকে নেমে পায়ে হেঁটে সদলবলে যান সুকান্ত মজুমদার।'পুলিশ যেখানে আটকাবে, সেখানেই রাস্তায় বসে বিক্ষোভ', এমনই হুঁশিয়ারি আগেই দিয়েছিলেন সুকান্ত মজুমদার।


ন্যাজাট থানার ১ কিলোমিটার আগে থেকেই ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। বিপুল পুলিশকর্মী নিয়ে আসা হয়েছে। মজুত রয়েছেন মহিলাপুলিশও। ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছিল রাস্তায়। এক স্তরের ব্যারিকেড খুলে মিছিল করছে বিজেপি। পুলিশের দেওয়া গার্ডরেল খুলে নর্দমায় ফেলে দিয়েছেন বিজেপি কর্মীরা। পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলতেই বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু হয় বিজেপি কর্মীদের। গত শুক্রবার রেশন দুর্নীতি তদন্তে তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের বাড়িতে তল্লাশিতে গিয়ে আক্রান্ত হন ইডি-র আধিকারিকরা। ঘটনার পর থেকেই খোঁজ মিলছে না শেখ শাহজাহানের।


কেন ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে তা নিয়ে ক্ষোভ জানান বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। শেখ শাহজাহানের গ্রেফতারি এবং আরও একাধিক দাবিতে এদিন ন্যাজাট থানা ঘেরাও এবং থানায় ডেপুটেশন জমা দেওয়ার কর্মসূচি ছিল বিজেপির। প্রথম থেকেই মিছিল আটকানোর জন্য বিপুল বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। মিছিল কিছুদূর এগোতেই ব্যারিকেড পড়ে, সেই ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন বিজেপি কর্মীরা। থানার ১০০ মিটারের কাছাকাছি আসতেই বাধা দেন পুলিশকর্মীরা। রাস্তায় বসে আন্দোলন শুরু হয়। পুলিশের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েন সুকান্ত। পুলিশের তরফে মাইকিং করা হয় যে বিজেপির কর্মীরা যেন বসে যান। আর এগোতে বারণ করা হয় পুলিশের তরফে। সুকান্ত মজুমদারের অভিযোগ, 'মাইকিং হয়নি ১৪৪ নিয়ে। সব খোলা, দোকানপাট খোলা, সবাই রয়েছে। শুধুমাত্র বিজেপির উপর ১৪৪ ধারা নাকি? এমন ১৪৪ ধারা হয় নাকি? এটা গণতান্ত্রিক নয়।'


ডেপুটেশন জমা দেওয়ার জন্য ৫ জনের প্রতিনিধি দল পাঠানোর দাবি করে বিজেপি। কিন্তু তাতে রাজি হয়নি পুলিশ। পুলিশের তরফে জানানো হয় ২ জন গিয়ে ডেপুটেশন জমা দিতে পারবেন। তা না মেনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি কর্মীরা। সুকান্ত মজুমদার হুঁশিয়ারি দেন পাঁচজন কে না যেতে দিলে ওইখানে বসেই অনির্দিষ্টকালের জন্য অবস্থান বিক্ষোভ চলবে। বেশ কিছুক্ষণ এভাবে চলার পরে পুলিশের পক্ষ থেকে ৫ জনের প্রতিনিধি দলের দাবি মেনে নেওয়া হয়। তারপরেই বিজেপির প্রতিনিধি দল থানায় গিয়ে ডেপুটেশন জমা দেন। সুকান্ত মজুমদার বলেন,  'পুলিশ আমাদের দাবির কাছে নতিস্বীকার করে ৫ জনের টিমকে যেতে বলেছে।' এদিন কেন্দ্রীয় বাহিনী নামিয়ে শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতারির দাবি করেছেন সুকান্ত মজুমদার। 


এই মিছিলে পুলিশে বিরুদ্ধে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ করেছেন বিজেপির মহিলা কর্মীরা। পুরুষ পুলিশ কর্মীরা তাঁদের গায়ে হাত দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। বিজেপির জেলা মহিলা সেক্রেটারির অভিযোগ, এক পুরুষ পুলিশকর্মী তাঁকে আঁচড়ে দিয়েছেন, হাতে খিমচে দেওয়া হয়েছে। কেন পুরুষ পুলিশকর্মীদের দিয়ে মহিলা আন্দোলনকারীদের আটকানো হবে সেই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।


আরও পড়ুন: 'শত্রু'র উপর নজর রাখবে ভারতের Drishti! তৈরি করল আদানির সংস্থা