ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : সুরের মূর্ছনা সঙ্গী করেই সুরলোকে পাড়ি। যাঁর গানের রেশ প্রজন্ম ভেদে বাংলার ঘরে ঘরে, সেই সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন গান শুনতে শুনতে। চোখ বন্ধ করে গান শুনে মাথা নেড়ে সাড়া দেওয়ার মাঝেই হঠাৎই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। তখন বাজছিল 'এই শহর ছেড়ে আরও অনেক দূরে চল কোথাও চলে যাই...'। 
আইসিইউতে (ICU) শুয়ে গান শুনতে চেয়েছিলেন সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় (Sandhya Mukherjee)। তাঁর দেখভালের দায়িত্বে থাকা নার্স তনুশ্রী সামন্ত-র গলায় গান শুনে করেছিলেন প্রশংসা। তারপর মোবাইলে বাজানো হচ্ছিল গান। নিজের নয়, শুনতে চেয়েছিলেন মান্না দের গান। মোবাইলে যখন বাজছে ১৪ নম্বর গান তখনই হঠাৎ গোঙানিতে প্রাণত্যাগ। 
ঠিক কেমন ছিল গীতশ্রীর শেষ সময়টা? শরীর হঠাৎ খারাপ হওয়ার জেরে মঙ্গলবার সকালের দিকে তাঁকে আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয়। তার আগে খাবার খাওয়া থেকে ব্রাশ করা সবই নিজে করতে পছন্দ করতেন বলে জানান আইসিইউ ইনচার্জ ঝুমা বিশ্বাস। শারীরিক সমস্যার জেরে তাঁকে প্রথমে ভর্তি করা হয়েছিল এসএসকেএমে। করোনা ধরা পড়ায় তাঁকে স্থানান্তরিত করা হয় অ্যাপোলো হাসপাতালে। সেখানে করোনা জয়ের পর ক্রমশ সুস্থ হচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎই সব শেষ।
আর হাসপাতালের মাঝের সময়টাও গীতশ্রী ছিলেন সুরের জগতেই। আইসিইউতে দায়িত্বে থাকা নার্সের কাছে জুড়তেন গান শোনানোর আবদার। বাংলা গান শোনাই ছিল তাঁর পছন্দের। ছিলেন সিরিয়ালের ভক্তও। তাঁর দায়িত্বে থাকা নার্স তনুশ্রী সামন্ত বলেছিলেন, 'সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়কে গান শোনাব এটাই ছিল ভাবনার অতীত। উনি গান শুনে জানিয়েছিলেন অভ্যাসটা না ছাড়তে।'
শেষদিনে আইসিইউ দায়িত্বে থাকা নার্সদের বলেছিলেন গান শোনানোর কথা। মান্নার দে-র গান শোনানোর কথা শোনানোয় ঘাড় নেড়ে সায় দিয়েছিলেন। মোবাইলে বাজানো গান শুনে চোখ বুজেই নাড়ছিলেন মাথা। কিন্তু ১৩তম গানের সময়ই হঠাৎ গোঙানি দিয়ে ওঠেন তিনি। চিকিৎসকরা ছুটে এসে সবরকম চেষ্টা করলেও না ফেরার দেশে চলে যান সুরশ্রী।


আরও পড়ুন- সুরের আকাশে সন্ধ্যা ঘনাল