প্রকাশ সিংহ, আবির দত্ত, অনির্বাণ বিশ্বাস, কলকাতা: জ্যোতিপ্রিয় তাঁকে কখনও ১০০ টাকাও দেননি। ঘনিষ্ঠতা থাকলে, পুরভোটে আমাকে টিকিট দেওয়া হল না কেন? এভাবেই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কথা অস্বীকার করলেন শঙ্কর আঢ্য (Shankar Adhya Denies Closeness With Jyotipriya Mallick)। ধৃত মন্ত্রীই তো চিঠিতে তাঁর নাম লিখে গেছেন। পাল্টা খোঁচা দিলেন সুকান্ত মজুমদার।


কী জানা গেল?
রেশন বণ্টন দুর্নীতি মামলায় একে একে মিল মালিক বাকিবুর রহমান, প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের পর ED-র হাতে গ্রেফতার হয়েছেন বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান, তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্য। সেই সঙ্গে ধৃত মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা নিয়েও রীতিমতো চর্চা শুরু হয়ে যায়। যদিও এদিন একেবারে উল্টো সুর শোনা গেল শঙ্কর আঢ্যর কথায়। সংবাদমাধ্যমের সামনে, তাঁর সঙ্গে জ্যোতিপ্রিয়র ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা উড়িয়ে দিলেন ধৃত তৃণমূল নেতা। গাড়িতে ওঠার সময় সংবাদমাধ্যমকে বললেন, 'জ্যোতিপ্রিয়বাবু সঙ্গে যদি আমাদের এত সম্পর্ক থাকত... মিউনিসিপ্যালিটিতে টিকিট দিলেন না কেন?' রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের অবশ্য যুক্তি, 'যদি শঙ্করকে জ্যোতিপ্রিয় টাকা না দিয়ে থাকে, তাহলে জ্যোতিপ্রিয়র মেয়েকে টাকা দেবেন, এত বড় সমাজসেবী তো শঙ্কর আঢ্য নন। তাহলে কেন এঁদের নাম লিখলেন? বাকিবুরের কাছে যে জ্যোতিপ্রিয়র টাকা ছিল বা আছে, সেটা তো প্রমাণিত হয়ে গেছে।' শঙ্কর আঢ্যকে গ্রেফতারির পরই আদালতে ED-র দাবি করেছে, রেশন দুর্নীতিতে টাকার অঙ্ক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯ থেকে ১০ হাজার কোটি টাকা। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ও শঙ্কর আঢ্যর যোগসাজশের কথা জানিয়ে এই টাকার অঙ্ক আরও বাড়তে পারে বলে আদালতে দাবি করেছে ED। পাশাপাশি প্রেস রিলিজে ED দাবি করে, রেশন দুর্নীতির তদন্তে জানা গেছে, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তাঁর একাধিক ঘনিষ্ঠ সহযোগীর মাধ্যমে অপরাধ সংগঠিত করেছিলেন, যাঁরা 'ফুল ফ্লেজেড মানি চেঞ্জার' হিসেবে কাজ করেছেন। এমনকী গ্রেফতারির পর তৃণমূল নেতার স্ত্রীও দাবি করেছিলেন যে, ED তাদের জানিয়েছিল জ্যোতিপ্রিয়কে জেরা করেই শঙ্কর আঢ্যর নাম পাওয়া গেছে। 
ধৃত তৃণমূল নেতার স্ত্রী, জ্যোৎস্না আঢ্যর কথায়, 'সারাদিন ধরে ব্যবসা নিয়ে চলল। রাত সাড়ে ১২টার সময় নাটক করল, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের জন্য আপনাকে অ্যারেস্ট করলাম। জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তো জেলা সভাপতি ছিল। সবার কাছেই তো আসত। আমরাও সে জন্যই তো যেতাম। কিন্তু এখন দেখলাম পুরোটাই নাটক। সাড়ে ৭টা থেকে সারাদিন থেকে আমরা সহযোগিতা করলাম। লাস্টে একটা অফিসার ব্যাগের থেকে কাগজ বের করে দেখাল, এই যে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের জন্য অ্যারেস্ট করলাম।' কিন্তু, সোমবার জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কথা কার্যত উড়িয়ে দিলেন ধৃত তৃণমূল নেতা। কিন্তু, মাথায় বড় কারও হাত না থাকলে, কি কেউ রেশন কেলেঙ্কারির মতো বড় দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে? শঙ্কর আঢ্য, মন্ত্রী ঘনিষ্ঠতা অস্বীকার করলেও, এই প্রশ্নটা থেকে যাচ্ছে?


 


আরও পড়ুন:কিউআর কোড স্ক্যান করে সর্বস্ব খোয়ালেন ব্যক্তি, আপনি এই ভুল করেননি তো?