প্রকাশ সিনহা, কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি (Recruitment Scam) কাণ্ডে শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বড়সড় দাবি তদন্তকারী সংস্থার ইডির। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দাবি, নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে আলাদা র‍্যাকেট চালাতেন শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়। কুন্তলকে (Kuntal Ghosh) ছাড়াই নিজে চাকরি বিক্রির নামে টাকা তুলতেন শান্তনু, দাবি ইডি-র। এই নিয়ে মিলেছে তথ্যও, দাবি তদন্তকারী সংস্থার। মোট ৩০০ জন চাকরিপ্রার্থীর নামের তালিকা পাওয়া গেছে শান্তনুর কাছে, খবর ইডি সূত্রে


এদিনই ফের আদালতে তোলা হয় শান্তনুকে। আদালতে খারিজ হয় জামিনের আবেদন। ফের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। ৫ এপ্রিল পর্যন্ত শান্তনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।


পার্থকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য:
পার্থকে নিয়ে আদালতে বিস্ফোরক মন্তব্য করল ইডি। 'পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় হলেন দুর্নীতির মাস্টারমশাই, বাকিরা তাঁর ছাত্র', দাবি ইডি-র আইনজীবীর। 'দুর্নীতি হয়েছে এমন পুরসভার সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। ছোটখাটো সোনার খনি নয়, আমরা ঢুকেছি সীমাহীন এক সোনার খনিতে', দাবি ইডি-র আইনজীবীর।


আর কী কী দাবি:
'চাকরি বিক্রির টাকা ঢুকত ভুয়ো কোম্পানিতে, সেখান থেকে টাকা নিয়ে কেনা হত সম্পত্তি। এখনও পর্যন্ত শান্তনুর ১৩টি নিজস্ব সম্পত্তির হদিশ মিলেছে ইডির। বেনামে ৫টি সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। বছরে শান্তনুর বেতন ছিল ৬ লক্ষ, সম্পত্তি কোটি কোটি টাকার, দাবি ইডি-র।


ইডির দাবি, বিচারকের প্রশ্ন:
'বসন্ত, গ্রীষ্মের পর বৃষ্টি এলে দেখা যায় রামধনু, আমরা সেদিকেই এগোচ্ছি', সূত্রের খবর এদিন এমনই মন্তব্য করেন ইডি-র আইনজীবী। তখন বিচারক প্রশ্ন করেন, তাহলে কি এখন গ্রীষ্মে রয়েছেন। তাতে ইডির আইনজীবী উত্তর দেন এখন বসন্তে রয়েছেন, রামধনুর দিকে এগোন হচ্ছে। 


নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে গ্রেফতার করা হয়েছিল হুগলি তৃণমূল নেতা শান্তনু বন্দ্যোরপাধ্যায়কে। তারপরেই একে একে সামনে আসে নানা তথ্য। খোঁজ মেলে বিপুল সম্পত্তির হদিশ। এলাকার শান্তনু ত্রাস তৈরি করেছিলেন বলেও অভিযোগ ওঠে। ভয় দেখিয়ে জমি দখলের অভিযোগও ওঠে। 

শান্তনুর সম্পত্তির খতিয়ান:
সম্পত্তির খতিয়ান:
হুগলির বলাগড়ে শান্তনু বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের একটি বাড়ি রয়েছে। তিনতলা বিলাসবহুল বাড়ি সেটি। ওই বাড়িটিতে রয়েছে ৭টি সিসিটিভি ক্যামেরা।
ওই বাড়িটির বাইরে গ্যারেজে রয়েছে। সেখানে রয়েছে ২টি গাড়ি।
হুগলির বলাগড়ে আসাম রোডের ধারে শান্তনুর একটি ধাবার খোঁজ মিলেছে। ধাবার ভিতরে রয়েছে অত্যাধুনিক লাউঞ্জ, রয়েছে হুক্কাবারও।
ওই ধাবার উল্টোদিকেই রয়েছে শান্তনু বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের ইচ্ছেডানা গেস্ট হাউস। 
হুগলিতেই রয়েছে শান্তনুর একটি রিসর্ট। বলাগড়ে গঙ্গার ধারে রয়েছে ওই বিলাসবহুল রিসর্ট। সিসিটিভি ঘেরা এই রিসর্টের ভেতরে রয়েছে সুইমিং পুল। রিসর্ট থেকে লাগোয়া গঙ্গায় নামার ব্যক্তিগত সিঁড়িও রয়েছে। 
হুগলির চন্দননগরে শান্তনু বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। ১৮০০ বর্গফুটের ফ্ল্য়াটও রয়েছে।
ইডির দাবি, একাধিক জমি এবং দুটি বাড়ি-সহ প্রায় ২০ কোটি টাকার সম্পত্তির হদিশ মিলেছে শান্তনুর। 
এছাড়াও বেনামে সম্পত্তিও রয়েছে। 


আরও পড়ুন: 'পরীক্ষার ফলাফলও প্রকাশ করুন', স্ত্রীর চাকরি-বিতর্কে পাল্টা দাবি সুজনের