কলকাতা: আর কোনও রাখঢাক নয়। এ বার প্রকাশ্যেই বিজেপি-র রাজ্য নেতৃত্ব এবং নবগঠিত কমিটির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বনগাঁর (Bangaon) বিজেপি (BJP) সাংসদ শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur)। জানিয়ে দিলেন, এই নতুন কমিটি দলের ক্ষতি করছে। রাজ্যে বিজেপি-কে এ ভাবে শেষ হতে দেবেন না তাঁরা।


নতুন রাজ্য (BJP state Committee) কমিটিতে জায়গা না পেয়ে একে একে বিজেপি-র হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ছেড়েছেন শান্তনু-সহ মতুয়া বিধায়করা (Matua MLAs)। কমিটি থেকে বাদ পড়ে সায়ন্তন বসুও (Sayantan Bose) বিক্ষুব্ধদের দলে সামিল হয়েছেন। জয়প্রকাশ মজুমদার, রিতেশ তিওয়ারি, রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ও রাজ্য নেতৃত্বের প্রতি ক্ষুব্ধ। এমন পরিস্থিতিতে শনিবার বিক্ষুব্ধ বিজেপি নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন শান্তনু। আর বৈঠক থেকে বেরিয়েই সংবাদমাধ্যমে ক্ষোভ উগরে দেন।


এ দিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শান্তনু বলেন, ‘‘বঙ্গ বিজেপি-র কমিটিতে দলের ক্ষতি হচ্ছে। এক জন নেতা দলকে কুক্ষিগত করতে চাইছেন। মনে হয়, অন্য দলের সঙ্গে সংযোগ রয়েছে তাঁর। এ ভাবে চোখের সামনে বিজেপি-কে শেষ হতে দেব না আমরা। প্রয়োজনে আন্দোলনে নামব।’’


সরাসরি কারও নাম যদিও মুখে আনেননি শান্তনু। সময় বিশেষে তা প্রকাশ করবেন বলে জানিয়েছেন, রাজ্য বিজেপি-র সাংগঠনিক সম্পাদক অমিতাভ চক্রবর্তীই (Amitabha Chakraborty)  তাঁর নিশানায় বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। অমিতাভ দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই দলের সব কিছু হস্তগত করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠছে বিজেপি-র অন্দর থেকে। এ দিন বনগাঁ গামী একাধিক লোকাল ট্রেনেও অভিতাভের অপসারণের দাবিতে পোস্টার পড়ে। শান্তনুও জানিয়েছেন, বাংলায় বিজেপি-র ক্ষতিসাধনকারী ওই নেতার অপসারণ চান তাঁরা।


শান্তনুর দাবি, নতুন যে কমিটি গড়া হয়েছে, তা আসলে শাসকদলের সঙ্গে মিলে বিজেপি-কে রাজ্য থেকে উৎখাত করার ষড়যন্ত্র। তাঁর মতে, মতুয়ারা বাদ পড়েছেন বলে নয়, দলের ৯০ শতাংশ অভিজ্ঞ নেতাদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি গড়া হয়েছে। তাতে রাখা হয়েছে অনভিজ্ঞ লোকজনকে, যাতে ক্ষমতা হস্তগত করতে সুবিধা হয়।


নিজেদের আপত্তির কথা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন শান্তনু। তবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি তাঁর কোনও ক্ষোভ নেই। বরং তাঁর মতে, তৃণমূল স্তরে এসে দলের কর্মীদের কাছ থেকে খোঁজ নেওয়া সম্ভব নয় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষে। কিন্তু যে ভাবে চলছে, তাতে রাজ্যে সব প্রান্ত থেকে রোষ আছড়ে পড়তে পারে। তাই কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দৃষ্টি আকর্ষণ জরুরি।


তবে রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যকে (Samik Bhattacharya) বিষয়টিকে লঘু করে তুলে ধরতে দেখা যায়। তাঁর মতে, শান্তনু সাংসদ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তাঁকে বিক্ষুব্ধ বলা ঠিক নয়। অভিযোগ জানানোর কিছু পদ্ধতি রয়েছে। সেই মতো সকলেই এগোতে পারেন।