সমীরণ পাল ও সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তর ২৪ পরগনা: হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথিতে মতুয়াদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। কিন্তু শুভেচ্ছাবার্তা বড় কথা নয়, মুখ্যমন্ত্রী যদি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনকে (CAA) সমর্থন করেন, তবে তাঁকে কুর্ণিশ জানাবেন বলে এ বার জানিয়ে দিলেন বনগাঁর বিজেপি (BJP) সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুর (Shantanu Thakur)। তার পাল্টা মাঠে নেমে পড়েছে তৃণমূলও। তাদের প্রশ্ন, মতুয়াদের (Matua) ভোটাধিকার রয়েছে। তার পরেও কেন নাগরিকত্ব নিয়ে হইচই?


প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর শুভেচ্ছা


হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথিতে, মতুয়াদের বার্ষিক উৎসব বারুণী মেলা ঘিরে যেমন মানুষের ঢল নেমেছে। তেমনই রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীদের শুভেচ্ছা বার্তার বন্যা বইছে। গত কাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এ দিন টুইট করে শুভেচ্ছাবার্তা দেন মমতা, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মমতা টুইটারে লেখেন, ‘হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথির পুণ্যলগ্নে, আমার অন্তরের শ্রদ্ধা ও শুভেচ্ছা জানাই। এই দিনটি যাতে শ্রদ্ধার সঙ্গে সবাই উদযাপন করতে পারেন, সেজন্য ছুটি ঘোষণা করেছে আমাদের সরকার’।


মমতার শুভেচ্ছাবার্তা পেয়ে প্রাক্তন তৃণমূল (TMC) সাংসদ তথা সর্বভারতীয় মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে, এক বার নয় অনেকবার ধন্যবাদ। হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথিতে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।”


আরও পড়ুন: Asansol By-Election: আদিবাসীদের নাচের তালে বাজালেন মাদল, আসানসোলে কর্মিসভায় অন্য মুডে তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহা। Bangla News


আর তাৎপর্যপূর্ণভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুভেচ্ছাবার্তাকে স্বাগত জানিয়েও, কেন্দ্রের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনকে সমর্থন জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন শান্তনু। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী ট্যুইট করেছেন ভাল কথা, সিএএকে সমর্থন করুন। সিএএকে সমর্থন করলে, আমরা তাঁকে কুর্নিশ জানাব। আগে সিএএ সমর্থন করুন। সবার চাহিদা তো। পশ্চিমবঙ্গে তো চালু করতে পারছে না। উনি সমর্থন করুন। আমরা সিএএ চালু করব।”


গত লোকসভাও বিধানসভা নির্বাচনে মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ভোটের ফসল ঘরে তুলেছিল বিজেপি। কিন্তু, এখনও সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন কার্যকর করেনি কেন্দ্রীয় সরকার। ২০১৯-এ দ্বিতীয় মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পরই লোকসভা ও রাজ্যসভায় পাস হয় নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল। রাষ্ট্রপতির অনুমোদন সাপেক্ষে তা আইনে পরিণত হয়।


প্রধানন্ত্রীর মুখেও শোনা যায়নি সিএএ-র কথা


কিন্তু, এখনও অবধি সেই আইন কার্যকর করেনি কেন্দ্রীয় সরকার।এমনকি মঙ্গলবার মতুয়াদের শুভেচ্ছাবার্তা দিলেও প্রধানমন্ত্রীর মুখে শোনা যায়নি সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের কথা। এই নিয়ে কটাক্ষের সুর শোনা গেছে তৃণমূলের গলায়। বাগদার তৃণমূল বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, “মতুয়ারা ভোট দেন, তাঁদের ভোটাধিকার আছে, তাহলে আবার নাগরিকত্ব কীসের? বারবার আমরা এটাই বলছি।” গতকাল মমতাবালার গলাতেও প্রধানমন্ত্রীর


একদিকে, মতুয়াদের বার্ষিক উৎসব উপলক্ষ্যে ১৫ জোড়া ট্রেন চালাচ্ছে রেল। আন্দামান থেকে মতুয়া ভক্তদের আসার জন্য জাহাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে শুভেচ্ছাবার্তা দিচ্ছেন। অন্য দিকে, মতুয়াদের উৎসব উপলক্ষ্যে বুধবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করে রাজ্য সরকার।


সম্প্রতি বিধানসভায় অশান্তিতে আহত হয়েছিলেন হুগলির চুঁচুড়ার তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদার। তিনি এ দিন যোগ দেন মতুয়াদের অনুষ্ঠানে।৫ এপ্রিল অবধি চলবে মতুয়াদের বার্ষিক বারুণী মেলা।