কলকাতা: বিদ্যুৎ সরবরাহ নিয়ে রাজ্য সরকারকে আক্রমণে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। বিদ্যুৎ উৎপাদন থেকে সরবরাহে ঘাটতি নিয়ে এবার বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকদের হুঁশিয়ারি। সমস্যা সমাধানে বেঁধে দিলেন ২ দিনের সময়সীমা। 'পয়সার অভাবে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিতে কয়লা সরবরাহ করতে পারছে না। উৎপাদন কমাতে বাধ্য হয়েছে কেন্দ্রগুলি। যার ফলে ঘাটতির পরিমাণ ১২০০ মেগাওয়াট। রাজ্যের এক বড় অংশে বিদ্যুৎ নেই'। সোমবার থেকে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার দফতরের সামনে ধর্নায় বসার হুঁশিয়ারি শুভেন্দু অধিকারীর। 


এ দিন সভামঞ্চ থেকে আক্রমণ শানিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'মমতার নতুন প্রোজেক্ট লোডশেডিং শ্রী। এর মধ্যে আপনারা এসে সমাবেশস্থল ভরিয়ে দিয়েছেন। মন পশ্চিমবঙ্গে নেই, ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দিবাস্বপ্ন দেখছেন। দু-জনের প্রাইভেট জেট দমদমে দাঁড়িয়েছে। মোদিকে কী করে সরানো যায়,তার প্রয়াস করছে। আমরা জানি গরুর গাড়ির হেডলাইট হবে না, স্যান্ডো গেঞ্জির বুক পকেট হবে না। পিসি প্রধানমন্ত্রী হবে না।'


এর আগে গত ২৫ অগাস্ট বিধানসভায় বাকবিতণ্ডায় জড়ান অরূপ বিশ্বাস ও অগ্নিমিত্রা পাল। আসানসোলে লোডশেডিং নিয়ে বৃহস্পতিবার অভিযোগ তুলেছিলেন বিজেপি বিধায়ক। শুক্রবার পাল্টা জবাব দেন বিদ্যুৎমন্ত্রীও। তিনি কটাক্ষ করে বলেন, 'অগ্নিমিত্রা তো আসানসোলে থাকেনই না। তিনি কীভাবে জানলেন যে সেখানে লোডশেডিং হয় কিনা। কাজের জন্য কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছিল। রাজ্যে কোথাও লোডশেডিং হয় না, দাবি করেন অরূপ বিশ্বাস। অগ্নিমিত্রাও পাল্টা সুর চড়ান। দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে স্পিকারকে এবিষয়ে জানানোর হুঁশিয়ারি দেন। তবে বিধানসভায় বাগবিতন্ডা হলেও পরে অরুপ বিশ্বাসের ঘরে গিয়ে বেশ কিছুক্ষণ তাঁর সঙ্গে কথা বলতে দেখা যায় অগ্নিমিত্রাকে।  


উল্লেখ্য, ইতিমধ্যেই রাজ্য়ের বেশকিছু জায়গায় বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। তা নিয়ে দফায় দফায় উত্তেজনাও ছড়িয়েছে। টানা এক সপ্তাহ ধরে ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটের অভিযোগ ওঠে মালদাতেওয।  প্রতিদিন ৩-৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না এলাকায়। এই অভিযোগে মালদার চাঁচলে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার অফিসে চলে বিক্ষোভ। বিদ্যুৎ অফিসের ভিতরে ও বাইরে একঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ চলে। চাঁচলবাসীর অভিযোগ, সন্ধে হলেই বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ থাকছে না। ভ্যাপসা গরমে বিদ্যুৎ না থাকায়, মানুষ নাজেহাল হলেও বিদ্যুৎ দফতরের হেলদোল নেই বলে অভিযোগ। পরে চাঁচল থানার পুলিশ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের তুলে দেয়। বিদ্যুৎ দফতরের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি। 


অন্যদিকে পরিবারতন্ত্র, দুর্নীতি থেকে তোষণের রাজনীতি নিয়ে বিরোধীদের জোট 'I.N.D.I.A'-কে আক্রমণ করেন শুভেন্দু অধিকারী। ২৩ জুন, পাটনায় প্রথম বৈঠকে বসেছিল বিরোধী দলগুলি! তার কয়েকদিন পরই বিরোধীদের প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন প্রধানমন্ত্রী। বেঙ্গালুরুতে ২৬টি বিরোধী বিরোধী রাজনৈতিক দলের সেকেন্ড রাউন্ডের বৈঠকের ঠিক আগের মুহুর্তেও, দুর্নীতি ইস্যুতে চাঁছাছোলা ভাষায় বিরোধীদের আক্রমণ করেন নরেন্দ্র মোদি। আর, এর পরই মুম্বইয়ে তৃতীয় দফায় বিরোধীদের বৈঠকের পর সেই দুর্নীতি ইস্যুতে পাল্টা মোদি সরকারের উদ্দেশে ধারাল আক্রমণ করে 'I.N.D.I.A'। লোকসভা ভোট এগিয়ে আসতে পারে, এই জল্পনার মধ্যে সব দলই দুর্নীতি ইস্যুকে হাতিয়ার করে পরস্পরের বিরুদ্ধে ঘুঁটি সাজাচ্ছে।