সনৎ ঝা, শিলিগুড়ি:  ৩ দিন পর শিলিগুড়ি রামকৃষ্ণ মিশনে (Siliguri RKM) হামলার ঘটনায় অবশেষে গ্রেফতার। ভক্তিনগর থানার পুলিশ গ্রেফতার করেছে ৫ জনকে। যদিও মূল অভিযুক্ত প্রদীপ রায় এখনও অধরা। হামলার দিন বিকেলেই প্রদীপ রায়ের বিরুদ্ধে এফআইআর করে মিশন কর্তৃপক্ষ। তারই একঘণ্টার মধ্যে সেই প্রদীপ রায় পাল্টা এফআইআর দায়ের করতে থানায় হাজির হন। নাগালে পেয়েও প্রদীপ রায়কে কেন গ্রেফতার করল না পুলিশ, উঠছে প্রশ্ন।


শিলিগুড়ি (Siliguri) শহরের মধ্য়ে শালুগাড়ার সেবক হাউস রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের সম্পত্তি। মূল রাস্তার ওপর প্রায় দুই একর জমির ওপর অবস্থিত এই বাড়িতে থাকেন রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের কর্মী। অভিযোগ, গত রবিবার ভোরে মিশনের এই জমি দখলের উদ্দেশ্য়ে ৩০-৪০ জন সশস্ত্র দুষ্কৃতীকে নিয়ে সেখানে ঢুকে হামলা চালান প্রদীপ রায়। নিরাপত্তারক্ষী এবং সেখানে বসবাসকারী আবাসিকদের খুনের হুমকি দিয়ে বাড়িছাড়া করা হয়। সিসিটিভি ক্য়ামেরা ভেঙে ফেলার পাশাপাশি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। মিশনের এই বাড়িতে বসবাসকারী কর্মীদের শহরের বাইরে ছেড়ে দেয় দুষ্কৃতীরা।


জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) রামকৃষ্ণ মিশনের প্রধান স্বামী শিবপ্রেমানন্দ বলেন, 'ঠিক সাড়ে ৩টের সময় রাত্রে অনেক লোক ঢুকেছে। ওদের হাতে ছিল, কাটারি ছিল, বন্দুক ছিল, রড ছিল। হেলমেট পরেছিল ওরা। হেলমেটের গ্লাসটা সামনের দিকে ইয়ে করা ছিল, মুখটা না দেখার জন্য়। বাংলাতেই ওরা কথা বলছিল। হঠাৎ করে ওরা পাঁচিল টপকে ভিতরে ঢুকেছে।'


রামকৃষ্ণ মিশনের মতো প্রতিষ্ঠানের জমিতে মাফিয়ার হামলার অভিযোগে বিস্মিত স্থানীয়রা। রামকৃষ্ণ মিশন সূত্রে খবর, এই জমিটি দান করেছিলেন এক ভক্ত। এ নিয়ে হাইকোর্টে একাধিক মামলা হলেও, প্রতিবারই রায় যায় মিশনের পক্ষে। অথচ, এই হামলার পর মিশনের জমি সিল করে দিয়েছে পুলিশ।  এই ঘটনা ঘিরে যেমন নিন্দার ঝড় বয়ে যাচ্ছে, তেমনই রাজনৈতিক চাপানউতোরের পারদও চড়ছে।


সম্প্রতি সন্ন্য়াসীদের একাংশকে নিয়ে মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের মন্তব্য় ঘিরে তোলপাড় চলছিলই। তার মধ্য়েই এই বিতর্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে শিলিগুড়িতে রামকৃষ্ণ মিশনের এই আশ্রমে হামলার ঘটনা। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'সাধুদের ধমকি দিচ্ছেন এখানকার মুখ্যমন্ত্রী। তার কথায় সাহস পাচ্ছে দুষকৃতীরা। রামকৃষ্ণ মিশন , ইস্কন, ভারত সেবাশ্রম বাংলার আধ্মাতিক পরিচয়। জলপাইগুড়িতে রামকৃষ্ণমিশনে ভাঙচুর হয়েছে কর্মীদের মারা হয়েছে ধমকানো হয়েছে। দেশের কোনও মানুষ এই সব ভেবেছিলেন। নিজেদের ভোটব্যাঙ্ক খুশি করতে সীমা পার করছে তৃণমূল।' 


এই ঘটনায় মুখ খুলেছেন মুখ্যমন্ত্রীও। তিনি বলেন, 'আমার তো জানা নেই, কোনও জায়গায় গন্ডগোল হয়েছে বা কোনও আশ্রমের উপর কেউ আক্রমণ করেছে। আমি এটাকে সমর্থন করি না এবং আমাদের কেউ নেই। যদি খুঁজে বের করতে পারেন, আমি কথা দিচ্ছি আমাদের যা ব্যবস্থা নেওয়ার আমি নেব।'


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে। 


আরও পড়ুন: বসিরহাটের TMC প্রার্থীর সমর্থনে নেমে তৃণমূলেরই সংঘর্ষ ! উত্তপ্ত হাড়োয়া