জয়দীপ হালদার, নামখানা : আইপ্যাকে চাকরি করে দেওয়ার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ। প্রশান্ত কিশোরের সংস্থার FIR-এর প্রেক্ষিতে ঝাড়খণ্ডের (Jharkhand) মধুপুরে হানা দিয়ে নামখানার এক বাসিন্দাকে গ্রেফতার (Arrest) করল পুলিশ।


চাকরি পাইয়ে দেওয়ার টোপ দিয়ে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ প্রায়ই সামনে আসে। এবার ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থা ইন্ডিয়ান পলিটিক্যাল অ্যাকশন কমিটি বা I-PAC-এ চাকরি পাইয়ে দেওয়ার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ উঠল।


তদন্ত নেমে ঝাড়খণ্ডের মধুপুরে হানা দিয়ে শুক্রবার সোমনাথ মণ্ডল নামে দক্ষিণ ২৪ পরগনার নামখানার বসিন্দা এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ট্রানজিট রিমান্ডে রাজ্যে আনার পর শনিবার ধৃতকে কাকদ্বীপ মহকুমা আদালতে তোলা হয়। সুন্দরবন পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সন্তোষকুমার মণ্ডল বলেন, ধৃতের একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিশ মিলেছে। সেগুলো চেক করা হচ্ছে।


পুলিশ সূত্রে খবর, গত সোমবার শঙ্খ দাস নামে আইপ্যাক সংস্থার এক কর্মী নামখানা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে বলা হয়, নামখানার বাসিন্দা সোমনাথ মণ্ডল সোশাল মিডিয়ায় I-PAC-এ চাকরি পাইয়ে দেওয়ার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। ভুয়ো ফর্ম ফিলআপ করিয়ে টাকা আদায় করছেন।


আরও পড়ুন ; সিভিক ভলান্টিয়ার পদে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা, গ্রেফতার ১


তার প্রেক্ষিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ধৃত ব্যক্তি চাকরি দেওয়ার নামে কত টাকা আত্মসাৎ করেছেন ? কত জনের থেকে টাকা নিয়েছেন ? কোন কোন এলাকা থেকে টাকা সংগ্রহ করা হয়েছে? পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতকে জেরা করে এই সব প্রশ্নেরই উত্তর খোঁজা হচ্ছে। 


প্রসঙ্গত, চলতি মাসেই সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি (Civic Volunteer Job) দেওয়ার নাম করে প্রতারণার খবরে চাঞ্চল্য ছড়ায় মালদার (Malda) সাহাপুর এলাকায়। এই ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শাসকদলের মদতেই এই ধরনের প্রতারণা চক্রের বাড়বাড়ন্ত হয়েছে বলে অভিযোগে সরব হয় বিজেপি। পাল্টা তৃণমূলের দাবি, শাসকদল এই ধরনের ঘটনাকে প্রশ্রয় দেয় না তাই গ্রেফতার হচ্ছে। 


সিভিক ভলান্টিয়ার পদে চাকরির নামে প্রতারণা


জানা গিয়েছে, সিভিক ভলান্টিয়ার পদে ১০০ শতাংশ সুনিশ্চিত চাকরির বিজ্ঞাপন ও প্রচারপত্র বিলি করে জালিয়াতির কারবার চলছিল পুরাতন মালদার সাহাপুর এলাকায়। গত ৬ বছর ধরে পুলিশ প্রশাসনের দফতরের থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে চলছিল এই কারবার। ১০০ শতাংশ চাকরি পাওয়া যাবে এমন বিজ্ঞাপন দিয়ে বহু মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে এই বেসরকারি সংস্থা। অবশেষে রাজ্য পুলিশ দফতরের সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই তা নজরে আসে জেলার পুলিশ কর্তাদের। শুরু হয় তদন্ত। তদন্ত চলাকালীন যা দেখতে পান পুলিশকর্তারা, তাতে তাঁদের চোখ কপালে ওঠে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে যে, মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে রাজ্য পুলিশের দফতরে সিভিক ভলান্টিয়ার পদে নিয়োগের জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের নাম নথিভুক্ত করার জন্য আবেদন করা হয়। তারইমাঝে প্রকাশ্যে আসে একটি ভয়েস রেকর্ডিং। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া সেই ভয়েস রেকর্ডিংয়ে এমন বিজ্ঞাপন সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসে মালদা জেলার পুলিশ প্রশাসন। দ্রুত অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় এক বেসরকারি সংস্থার মালিককে।